ঢাবি শিক্ষার্থী হাফিজুরের মৃত্যু : অনেক প্রশ্নেরই উত্তর মিলছে না

প্রকাশিত: ২৭ মে, ২০২১ ০৩:৫৪:৩৭

ঢাবি শিক্ষার্থী হাফিজুরের মৃত্যু : অনেক প্রশ্নেরই উত্তর মিলছে না

ঈদের পরের দিন বাড়ি থেকে ঢাকায় পৌঁছে বড় ভাই হাবিবুর রহমানকে ফোন করেন হাফিজুর রহমান। ফোনে হাফিজুর তার ভাইকে বলেন, জরুরি কাজের জন্য বন্ধুরা ঢাকায় ডেকেছে। কিন্তু কোন কাজের জন্য ডাকা হয়েছে তা তিনি জানাননি ভাইকে। সেদিন রাতেই তার মৃত্যু হয়।

ঢাকায় আসার পর তিনি তার এক বন্ধুর বাসায় ওঠেন। হাফিজুরের মৃত্যুর ঘটনায় তিন বন্ধুর প্ররোচনা থাকতে পারে বলে দাবি করেছে তার পরিবার।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রে জানা গেছে, নিহত হাফিজুর রহমানের রক্তে নেশা দ্রব্য লাইসারজিক অ্যাসিড ডাইইথাইলামাইড বা এলএসডির উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, হাফিজুর তার এক বন্ধুর কাছ থেকে একাধিকবার এ নেশা সংগ্রহ করে গ্রহণ করেছে।

গত ১৫ মে এই মাদক সেবনের পরই সে আত্মহত্যা করে বলে ওই সূত্রের ধারণা।

ডিবি সূত্র বলছে, ঢাবি শিক্ষার্থী হাফিজুরের মামলা তদন্ত করতে গিয়েই পুলিশ এলএসডির তথ্য পায়। এলএসডি ব্যবসা সংশ্লিষ্টতায় তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

তবে হাফিজুর মাদক সেবন করত কি-না তা জানে না তার পরিবার।

পুলিশ বলছে, ঢাবির প্রয়াত শিক্ষার্থী হাফিজুর রহমানের দুই বন্ধুকে জিজ্ঞাসাবাদে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। সেগুলো যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালও ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করেছে। পুলিশের তদন্তও শেষ পর্যায়ে। তদন্তের সঙ্গে নিহতের দুই বন্ধুর সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে ওই দুজনকে গ্রেফতার করবে পুলিশ।

৯ দিন নিখোঁজ থাকার পর গত রোববার সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাওয়া যায় হাফিজুরের মরদেহ। তার বড় ভাই হাবিবুর রহমান মর্গে গিয়ে মরদেহ শনাক্ত করেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ছেলে হাফিজুর রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য বিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগের ১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থী ছিলেন। একই সঙ্গে তিনি মুকাভিনয় শিল্পী হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মাইম অ্যাকশনের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন।

শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন-অর-রশীদ জানিয়েছেন, হাফিজুর রাস্তার পাশে ডাব বিক্রেতার কাছ থেকে দা নিয়ে নিজেই নিজের গলায় আঘাত করে রক্তাক্ত অবস্থায় শহীদ মিনার এলাকায় ঘুরছিল। এরপর ওই এলাকায় টহলরত পুলিশ তাকে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে যায়। তখন পুলিশ হাফিজুরের পরিচয় জানতে পারেনি।

ঢামেকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। পরে মরদেহটি অজ্ঞাত হিসেবে মর্গে রাখা হয়। এ ঘটনায় শাহবাগ থানা পুলিশ অপমৃত্যুর একটি মামলা করে।

ভালো ছেলে ছিল : হাফিজুরের বড় ভাই

নিহত হাফিজুরের বড় ভাই হাবিবুর রহমান দেশের একটি শীর্ষস্থানীয় অনলাইনকে বলেন, হাফিজুর খুব ভালো ছেলে ছিল। আগে থেকে তার কোনো মানসিক রোগ কিংবা কোনো জটিল রোগ ছিল না। কিন্তু হঠাৎ কেন ও মারা গেল? কীভাবে মারা গেল? তা এখনও জানতে পারিনি। মৃত্যুর ঘটনায় তিন বন্ধুর প্ররোচনা থাকতে পারে।

হাফিজুরের মাদক সেবনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বিষয়টা আমরা কখনও শুনিনি। আগে থেকে মাদক সেবন করত কি-না অথবা নিয়মিত মাদক সেবন করত কি-না তাও জানি না।’

দা দিয়ে নিজের গলা কাটা প্রসঙ্গে বড় ভাই বলেন, ‘কেউ যদি হাফিজুরকে প্ররোচনা করে তাকে প্রভাবিত করে অথবা তাকে বাধ্য করে কোনো কিছু পুশ করে তখন সে আসলে যেমন, তেমন থাকবে না। সে যে সত্যিকার অর্থেই নিজের গলা নিজে কেটেছে তারই বা প্রমাণ কী?’

রক্তাক্ত ভিডিও ভাইরালের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘২১ তারিখের পর থেকে যে ভিডিওগুলো ভাইরাল হচ্ছে তা কি ১৫ তারিখের পর থেকে হওয়া উচিত ছিল না? চিহ্নিত হওয়ার আগে দরকার ছিল ভিডিও ভাইরাল। যখন আমার ভাইকে চিহ্নিত করেই ফেলেছি, তখন আর ভিডিও ভাইরাল করার দরকার কি?’

২১ তারিখ কসবা থানায় জিডি করার পর ওই জিডির কপিটি শাহবাগ থানায় পাঠানো হয়। কিন্তু নিখোঁজের পর দুই থানা থেকে তাদের তেমন সহযোগিতা করা হয়নি বলেও উল্লেখ করেন নিহতের ভাই।

ভেবেছিলাম ফ্রিতে ডাব খেতে চায় : ডাব বিক্রেতা

পুলিশ জানায়, হাফিজুর ১৫ মে সন্ধ্যায় ঢামেকের বহির্বিভাগের পাশে একজন ভ্রাম্যমাণ ডাব বিক্রেতার কাছ থেকে দা নিয়ে নিজেই নিজের গলা কাটে।

ওই ভ্রাম্যমাণ ডাব বিক্রেতা সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে দেশের একটি শীর্ষস্থানীয় অনলাইনকে বলেন, ‘রাত ৮টার দিকে এক লম্বা সুদর্শন যুবক হঠাৎ ভ্যানের ওপর থেকে ডাব কাটা দা নিয়ে নিজের গলায় ধরে। তার পরনে ছিল শুধু হাফ প্যান্ট। গলায় ধরায় ভেবেছি আমার কাছ থেকে ফ্রিতে ডাব খেতে চায়। এমন অনেক ছেলে আছে যারা ফ্রিতে আমার কাছ থেকে ডাব খেয়ে যায়। ডাব খাওয়ার কথা বলতে বলতেই ওই ছেলের গলা দিয়ে দেখি রক্ত ঝরছে। এ সময় আমি দ্রুত তার হাত থেকে জোর করে টান দিয়ে দা কেড়ে নিই।’

তিনি বলেন, ‘গলায় কোপানোর সময় তিনি বারবার বলছিলেন, আমাকে মাফ করে দাও, আমাকে মাফ করে দাও। এই বলে দৌড় দিয়ে শহীদ মিনারের দিকে যেতে থাকে। এ সময় তিনজন পুলিশ তাকে রিকশায় নিয়ে যেতে চাইলে সে রিকশা থেকে লাফ দেয়ার চেষ্টা করে।’

এ ঘটনার পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।

এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সিসিটিভি ফুটেজ না দেখা গেলে মুক্তি পেতাম না। পুলিশ এসে আমার কাছে জিজ্ঞাসা করেছে। আমি সবকিছু বলেছি এবং ঘটনার সময়ের সিসিটিভি ফুটেজ পুলিশ দেখেছে।’

হাফিজুরের সুরতহাল রিপোর্টে যা আছে

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হাফিজুরের সুরতহাল সম্পন্ন হয়। রিপোর্টে উল্লেখ আছে, হাফিজুরের মৃত্যু ধারালো অস্ত্র দ্বারা কাটা জখমের কারণে হয়েছে। এছাড়া ডান হাতের বাহুর নিচে পাশাপাশি দুটি জখম এবং পেটের নিচে একটি জখম রয়েছে। ডান হাতের কনুইতে এবং বাম পায়ের হাঁটুতে ও হাঁটুর নিচে জখম আছে। হাফিজুরের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করেছেন শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্বাস আলী।

ডাব বিক্রেতার বক্তব্য অনুযায়ী, হাফিজুরের গলার কোপ তার নিজের হাতের। তবে তার শরীরের অন্যান্য কোপগুলো কীভাবে এলো, সে প্রশ্নের জবাবে এসআই আব্বাস আলী বলেন, ‘রক্তাক্ত অবস্থায় হাফিজুরকে উদ্ধার করে ঢামেকের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়। তাকে হাসপাতালে নেয়ার সময় সে জোরাজুরি করছিল। হাসপাতালের ট্রলি থেকে লাফ দিয়ে পড়েও যায়। এ সময় হয়তো তার হাতে বা পায়ে আঘাত লাগতে পারে। এছাড়া তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন থাকার কথা নয়।’

আত্মহত্যা মানতে নারাজ সহপাঠীরা, প্রশাসনের প্রতি ক্ষোভ

হাফিজুরের বিশ্ববিদ্যালয়ের সহপাঠী ও শিক্ষার্থীরা তার আত্মহত্যার ঘটনা মেনে নিতে রাজি নন। পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে তাদের। এ ঘটনায় হাফিজুরের সঙ্গে যে তিনজন বন্ধু কার্জন হলের আড্ডায় ছিল তাদের জিজ্ঞাসাবাদের দাবি জানিয়েছে তারা।

গত সোমবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রাজু ভাস্কর্যের সামনে ‘হাফিজ হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিচার চাই’ ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধনে এ দাবি জানানো হয়। কর্মসূচির আয়োজন করে হাফিজুরের সহপাঠীসহ ঢাবি শিক্ষার্থীরা।

এছাড়া আরও তিনটি দাবি জানান তারা। এগুলো হলো- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা, হাফিজুরের লাশ নিয়ে পুলিশ সদস্য ও ঢাকা মেডিকেল কলেজের দায়িত্বে অবহেলার জবাব দিতে হবে এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ক্যাম্পাসের আশেপাশের এলাকায় নিরাপত্তার জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘৬-৭ দিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হাফিজুরের সহপাঠী, বন্ধুরা বারবার জিডি করতে গেলে শাহবাগ থানা জিডি নেয়নি। কেন হাফিজুরের মৃত্যুর খবরটি জিডি করতে যাওয়াদের জানানো হয়নি? বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় এত বড় ঘটনা ঘটল, ঘটনার বর্ণনা পাওয়ার পরও কেন শাহবাগ থানা জানায়নি যে, একই বর্ণনার একটি ছেলেকে তারা একই তারিখে ডিএমসির মর্গে রেখে এসেছে?’

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি ক্ষোভ জানিয়ে ছাত্র অধিকার পরিষদের বিবৃতিতে বলা হয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে ঢাবি শিক্ষার্থীর লাশ পড়ে থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কোনো ভ্রূক্ষেপ ছিল না। তাই এই মৃত্যুতে প্রশাসনের দায়ও কম নয়। হাফিজুরের এমন অস্বাভাবিক ও নির্মম মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।

মানববন্ধন ও সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘হাফিজুর রহমানের প্রতি যেন ন্যয়বিচার করা হয়, তার মৃত্যুর যেন সুষ্ঠু তদন্ত করা হয় এবং এই ঘটনার পূর্বাপর কী ঘটেছে তা যেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সামনে উন্মোচন করা হয়। হাফিজুর নিখোঁজ হওয়ার পর শাহবাগ থানায় অবহিত করা হয়। কিন্তু তারা ঢাকা মেডিকেল কলেজ এলাকায় যে লাশ পাওয়া গেছে, তা যে হাফিজুরের হতে পারে তা মিলিয়ে দেখার প্রয়োজন মনে করেনি। দুঃখের সাথে বলতে চাই, যে ঘটনাটি ঘটেছে তাতে দায়িত্বশীল বাহিনী পেশাদারিত্বের পরিচয় দিতে ব্যর্থ হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘কী ঘটেছিল এবং কোন ঘটনার প্রেক্ষিতে আত্মহত্যা বা হত্যার ঘটনা ঘটেছিল তা তদন্তের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সামনে পরিষ্কার করতে হবে। কেউ যদি পেশাদার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয় তাদের বিরুদ্ধে যেন বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিভিত্তিক সংগঠন মাইম অ্যাকশনের সাবেক সভাপতি মীর লোকমানদেশের একটি শীর্ষস্থানীয় অনলাইনকে বলেন, ‘হাফিজ আত্মহত্যা করার মতো ছেলে না। কয়েক দিন ধরে শুনছি সে নাকি নেশা করে। আবার ঈদের পরদিন ঢাকা কেউ নাই সে কেন আসছে? ঈদের দিনও সে ভালো ছিল। আমার সঙ্গে হাসিখুশি কথা বলেছিল। সালামি নিয়েছিল। ঈদের পরদিন তার হঠাৎ কি হয়ে গেল যে সে আত্মহত্যা করেছে? মনে হচ্ছে তাকে কেউ আত্মহত্যায় মোটিভেট করেছে। নেশাজাতীয় জিনিস খাইয়ে তাকে আত্মহত্যা করাতে পারে বলে আমার ধারণা। তবে সুষ্ঠু তদন্ত হলে মূল বিষয়টা জানা যাবে।’

এ নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

তদন্ত কমিটির প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর লিটন কুমার সাহা দেশের একটি শীর্ষস্থানীয় অনলাইনকে বলেন, ‘আমরা তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছি। তদন্ত চলমান রয়েছে। তদন্তের জন্য যা যা করা দরকার, সব করছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের দিকের সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো সচল না থাকায় এদিকের ফুটেজগুলো নিতে পারিনি। অন্যান্য এলাকার ক্যামেরাগুলোর ফুটেজ নেয়ার চেষ্টা করছি।’

এ বিষয়ে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মামুন-অর-রশীদ দেশের একটি শীর্ষস্থানীয় অনলাইনকে বলেন, ‘ঢাবির প্রয়াত শিক্ষার্থী হাফিজুর রহমানের দুই বন্ধুকে জিজ্ঞাসাবাদে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। সেগুলো যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালও ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করেছে। পুলিশের তদন্তও শেষ পর্যায়ে। তদন্তের সঙ্গে নিহতের দুই বন্ধুর সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে ওই দুজনকে গ্রেফতার করবে পুলিশ।’

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) সাজ্জাদুর রহমান দেশের একটি শীর্ষস্থানীয় অনলাইনকে বলেন, ‘নিহত শিক্ষার্থীর শরীরে তরল অথবা অন্য কোনো মাদকের উপস্থিতি ছিল কি না সেজন্য ময়নাতদন্তে আমরা জানতে চেয়েছি। ময়নাতদন্তের রিপোর্টের জন্য আমরা অপেক্ষা করছি। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলে কনফার্ম হওয়া যাবে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী দেশের একটি শীর্ষস্থানীয় অনলাইনকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পৃথকভাবে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। আমরা আমাদের জায়গা থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করছি। আশা করি, ইতিবাচক কোনো কিছু আমরা বের করতে পারবো যা দিয়ে ভবিষ্যতে এসব দুর্ঘটনা এড়ানো যাবে।’

মরদেহ নয় দিন মর্গে

নিখোঁজ হওয়ার ৯ দিন পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হাফিজুর রহমানের গলাকাটা লাশ শনাক্ত হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে। রোববার (২৩ মে) সন্ধ্যায় হাফিজের বড় ভাই হাবিবুর রহমান মর্গে গিয়ে লাশ শনাক্ত করেন।

নিখোঁজের পর শুক্রবার কসবা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে নিহতের পরিবার। আট দিন ধরে তার পরিবার, বন্ধু-বান্ধব খোঁজাখুঁজি করছিল। পরিচয় শনাক্ত না হওয়ায় তাকে ৯ দিন ধরে হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছিল। পরিবারের সদস্যরা শাহবাগ থানায় গেলে ওসির মোবাইলে সংরক্ষিত ছবি দেখে হাফিজুরের সঙ্গে সাদৃশ্য পাওয়া যায়। পরে মর্গে গিয়ে তার লাশ শনাক্ত করেন তার ভাই।

হাফিজুর কসবা উপজেলার খাড়েরা ইউনিয়নের খাড়েরা গ্রামের হাফেজ মজিবুর রহমানের ছেলে। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে হাফিজুর রহমান দ্বিতীয়। বড় ভাই হাবিবুর রহমান স্নাতক পাস করে একটি ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি করেন। একমাত্র ছোট বোন মন্নি আক্তার স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।

এএআই

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ