২০১৯ সালে চীনের উহানে প্রথম শনাক্ত হওয়া করোনাভাইরাস সময়ে ব্যবধানে ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বের বেশিরভাগ দেশে। এতে প্রতিনিয়ত আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে, বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। দেশে ২০২০ সালের ৮ মার্চ প্রথমবারের মতো করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। শনাক্তের ১০ দিন পর করোনায় প্রথম কারও মৃত্যু হয়। নতুন করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণের মধ্যে বাড়ির বাইরে চলাচলরত অবস্থায় ব্যক্তিকে অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি মনে চলতে হবে। কোনো ব্যক্তি এই আইন অমান্য করলে তার বিরুদ্ধে সংক্রমণ আইন-২০১৮ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গেল বছরের ১৮ মার্চ থেকে সোমবার (৫ এপ্রিল) পর্যন্ত মোট ৯ হাজার ৩১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। দেশে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ছয় লাখ ৪৪ হাজার ৪৩৯ জন।

করোনাভাইরাস সৃষ্ট মহামারি কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ উদ্বেগজনক হারে বাড়তে থাকায় চলতি বছরের ৫ থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে লকডাউনের বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এই প্রজ্ঞাপনের আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছে সরকার।

জনস্বাস্থ্য-সংক্রান্ত জরুরি অবস্থা মোকাবিলা এবং স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি কমাতে সচেতনতা বৃদ্ধি, সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূলের উদ্দেশ্যে ২০১৮ সালে সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন প্রণয়ন করা হয়। এ আইন লঙ্ঘন করলে ছয় মাসের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে। এই আইনের আওতায় ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজনকে জরিমানাও করা হয়েছে।

সোমবার রাজধানীর শ্যামপুরে স্বাস্থ্যবিধি না মানায় পাঁচজনকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। বিনা কারণে রাস্তায় চলাফেরা করায় ২৫ জনকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। হেলমেট না থাকায় দুই মোটরসাইকেল চালককে ২০০ টাকা জরিমানা করেছেন র‍্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত।

জনস্বাস্থ্য-সংক্রান্ত জরুরি অবস্থা মোকাবিলা এবং স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি কমাতে সচেতনতা বৃদ্ধি, সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূলের উদ্দেশ্যে ২০১৮ সালে সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইনের ২৪ ধারায় বলা হয়েছে-

ক. যদি কোনো ব্যক্তি সংক্রামক জীবাণুর বিস্তার ঘটান বা বিস্তার ঘটাতে সহায়তা করেন বা জ্ঞাত থাকা সত্ত্বেও অপর কোনো ব্যক্তি সংক্রমিত ব্যক্তি বা স্থাপনার সংস্পর্শে আসিবার সময় সংক্রমণের ঝুঁকির বিষয়টি তাহার নিকট গোপন করেন তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির অনুরূপ কার্য হইবে একটি অপরাধ।

খ. যদি কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এর অধীন কোনো অপরাধ সংঘটন করেন, তাহা হইলে তিনি অনূর্ধ্ব ৬ (ছয়) মাস কারাদণ্ডে বা অনূর্ধ্ব ১ (এক) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

এই আইনের কোনো বিধানের অস্পষ্টতার কারণে উহা কার্যকর করিবার ক্ষেত্রে কোনো অসুবিধা দেখা দিলে, সরকার, এই আইনের অন্যান্য বিধানের সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে, সরকারি গেজেটে প্রকাশিত আদেশ দ্বারা, উক্ত বিধানের স্পষ্টীকরণ বা ব্যাখ্যা প্রদানপূর্বক উক্ত বিষয়ে করণীয় সম্পর্কে নির্দেশনা প্রদান করিতে পারিবে।#

প্রজন্মনিউজ২৪/ফাহাদ