বাংলাদেশ দূতাবাস বেইজিং কর্তৃক ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ উদযাপন

প্রকাশিত: ০৯ মার্চ, ২০২১ ০৪:৫৮:৫৫ || পরিবর্তিত: ০৯ মার্চ, ২০২১ ০৪:৫৮:৫৫

বাংলাদেশ দূতাবাস বেইজিং কর্তৃক ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ উদযাপন

ইফতেখাইরুল হক ইমন (বেইজিং, চীন প্রতিনিধি): বাংলাদেশ দূতাবাস বেইজিং কর্তৃক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণের সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষ্যে "ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণের তাৎপর্য; বঙ্গবন্ধুর কূটনীতি ও বৈদেশিক নীতি" শীর্ষক অনলাইন ভিত্তিক একটি ওয়েবিনারের আয়োজন করা হয়েছে।

গত ৭মার্চ, রোববার বেইজিংএ দুপুর ১টার সময় "বাংলাদেশ দূতাবাস চায়না" কর্তৃক এঅনুষ্ঠান হয়। ওয়েবিনারের শুরুতে উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন চীনে নিযুক্ত বাংলাদেশী রাষ্ট্রদূত মান্যবর মাহবুব উজ জামান।

তিনি তার বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের অবদান এবং প্রধানমন্ত্রীর ভিশন ৪১ এর লক্ষ্যমাত্রার কথা উল্লেখ করেন। এরপরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৭১সালের ৭ই মার্চ ভাষণের সম্পূর্ণ ভিডিও প্রচার করা হয়।

ওয়েবিনারে প্রধান বক্তা হিসাবে বক্তব্য রাখেন ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, উপাচার্য, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনাল, ঢাকা, বাংলাদেশ। তিনি তার বক্তব্যে ৭মার্চের ভাষণের বিভিন্ন দিক তাৎপর্য, বঙ্গবন্ধুর কূটনীতি ও বৈদেশিক নীতি সম্পর্কিত আলোচনা করেন। ওয়েবিনারের সার্বিক পরিচালনায় ছিলেন মন্ত্রী মহোদয় ড. এম নজরুল ইসলাম, বাংলাদেশ দূতাবাস, বেইজিং, চীন।

দূতাবাসের আমন্ত্রনে BCYSA এর সভাপতি এ. এ. এম. মুজাহিদ সহ চীনে বসবাসরত বিশিষ্ট প্রবাসী বাংলাদেশিবৃন্দ এবং বর্তমানে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি নিয়ে কাজ করছে এমন বেশ কয়েক জন চাইনিজ শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও পেশাজীবীসহ মোট ১৭০ জন এতে অংশ নেন।

প্রফেসর জাংচং (বেইজিং ল্যাংগুয়েজ ও কালচার বিশ্ববিদ্যালয়) এবং আভাসু, ইয়াসাংয়াও (হিয়া), দিসা, আনুপমাইয়াং (বেইজিং ল্যাংগুয়েজ ও কালচার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা) বাংলা ভাষায় বক্তৃতা দেন এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, সকল মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদের প্রতি গভীরভাবে শ্রদ্ধা প্রকাশ করেন। চায়না-মিডিয়া গ্রুপ বাংলা বিভাগের পরিচালক মিস আনন্দি বলেন, বঙ্গবন্ধু তাঁর এক বক্তব্যে বলেছিলেন, "সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সাথে শত্রুতা নয়।" যা চীনের পররাষ্ট্রনীতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

এদিকে, ৭ই মার্চ দিনটি এবার প্রথমবারের মতো জাতীয় দিবস হিসেবে বাংলাদেশের জেলা-উপজেলা সকল পর্যায়ে উদযাপন করা হচ্ছে। গত ৬ মার্চ ২০২১, শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রীকে এম খালিদ জানান, “ঐতিহাসিক ৭ই মার্চকে ‘ক’ শ্রেণি ভুক্ত জাতীয় দিবস হিসেবে পরিপত্র জারি করা হয়েছে। এই দিবস উদযাপনে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে সংযুক্ত করা হয়েছে। এই দিন সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর সড়কের বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর প্রাঙ্গণে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হবে।

কেন্দ্রীয় অনুষ্ঠান হবে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আজ বিকেল ৩টায়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।"

উল্লেখ্য, এক ধারাবাহিক রাজনৈতিক আন্দোলনের পটভূমিতে এসেছিল ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই দিনে রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) তার বজ্রকণ্ঠে ১৮মিনিট ৩১ সেকেন্ডের ভাষণে ঘোষণা করে ছিলন, “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম  স্বাধীনতার সংগ্রাম।”

তিনি বলেছিলেন, “রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরও দেবো, এদেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো, ইনশাআলাহ!'' এই ভাষণের  মাধ্যমেই তিনি বাংলার সকল শ্রেণির মানুষের মাঝে স্বাধীনতার বীজ বপন করেছিলেন।এটি একটি অলিখিত বক্তৃতা, যেখানে বঙ্গবন্ধু স্বল্প সময়ে কোনো পুনরুক্তি ছাড়াই একটি জাতির স্বপ্ন, সংগ্রাম আর ভবিষ্যতের দিক নির্দেশনা দিয়ে ছিলেন।

ভাষণটি ১২টি ভাষায় অনুবাদিত হয়েছে যার মাঝে চীনা ভাষা অন্যতম। নিউজ উইক ম্যাগাজিন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাজনীতির কবি হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। লেখক ও ইতিহাস বিদ জ্যাকব এফফিল্ডের বিশ্ব সেরা ভাষণ নিয়ে লেখা “উইশ্যাল ফাইট অনদ্যবিচেস: দ্যস্পিচ দ্যাটইন স্পায়ার্ড হিস্টোরি” গ্রন্থে এই ভাষণ স্থান পেয়েছে। ২০১৭সালের ৩০অক্টোবর বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক এভাষণকে বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয় জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো। 
 

প্রজন্মনিউজ২৪/গাজী আক্তার

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ