বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিক শক্তিতে পরিণত হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৬ মার্চ, ২০২১ ০৬:৪১:৩৪

বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিক শক্তিতে পরিণত হচ্ছে

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন দক্ষিণ কোরিয়া, ভিয়েতনাম, চীনের উন্নায়নের বিভিন্ন পর্যায়ের সাথে রয়েছে মিল।এমনটা বলা হয় মার্কিন পত্রিকা ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদনে। গত সপ্তাহে জাতিসংঘের কমিটি ফর  ডেভেলপমেন্ট পলিসি সুপারিশ করেছে বাংলাদেশের এলডিসি উত্তরণের। 

 

বাংলাদেশ ইজ বিকামিং সাউথ এশিয়াস ইকোনমিক বুল কেস’ শীর্ষক প্রকাশিত এক নিবন্ধে বলা হয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়া, চীন ও ভিয়েতনামে সফল যেসব উন্নয়ন মডেলের মাধ্যমে বড় ধরনের অর্থনৈতিক অগ্রগতি হয়েছে, সেদিক থেকে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের নাম উল্লেখযোগ্য। স্বল্প আয়ের দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার ক্ষেত্রে রফতানিমুখী উন্নয়ন বর্তমানে সবচেয়ে কার্যকর। আর বাংলাদেশে এই কাজটি হয়েছে খুব ভালোভাবে।

 

গত এক দশকে ডলারের হিসেবে বাংলাদেশের রফতানি বেড়েছে প্রায় ৮০ শতাংশ। মূলত তৈরি পোশাক খাতের মাধ্যমে এই অগ্রগতি। বর্তমানে এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রফতানিমুখী শিল্পখাত। অন্যদিকে, বাংলাদেশের প্রতিবেশী দুই দেশ ভারত ও পাকিস্তান রফতানিতে তুলনামূলক অনেকটা পিছিয়ে পড়েছে।

 

২০১১ সালের হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশের মাথাপিছু জিডিপি ছিল ভারতের চেয়ে ৪০ শতাংশ কম। কিন্তু গত বছর বাংলাদেশ ভারতকে ছাড়িয়ে যায়। করোনা মহামারির কারণে ভারতের অর্থনীতিতে মন্দা দেখা দেওয়ায় এমনটা ঘটেছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) অবশ্য পূর্বাভাস দিয়েছে, এই ব্যবধান কম-বেশি এমনই থাকবে।

 

গত এক দশকে বাংলাদেশের রফতানি আয় মার্কিন ডলারের নিরিখে ৮০ শতাংশ বেড়েছে। বলা বাহুল্য, তৈরি পোশাক খাতের হাত ধরেই এটা ঘটেছে। অথচ এই সময়ে ভারত ও পাকিস্তানের রপ্তানি কিছুটা কমেছে।

 

বাংলাদেশের উন্নয়নের পেছনে আরও কিছু কারণ আছে বলে মনে করছে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল। সেগুলো হলো- সংখ্যাগরিষ্ঠ তরুণ জনগোষ্ঠী, প্রতিযোগিতামূলক মজুরি, শক্তিশালী ও ক্রমবর্ধমান নারী শ্রমশক্তি- দক্ষিণ এশিয়ায় এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশে অন্যদের তুলনায় এগিয়ে। তবে উন্নয়নের এই পথ বন্ধুর বলে মনে করে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল। বলা হয়েছে, ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়ার তুলনায় বাংলাদেশের রফতানি প্রবৃদ্ধি কম। এই দুটি দেশের রফতানি গত ১০ বছরে যথাক্রমে তিন গুণ ও দ্বিগুণ হয়েছে। এ ছাড়া ভারতের উদাহরণ দিয়ে বলা হয়েছে, ২০০০-এর দশকের প্রথমভাগে ভারতের রফতানি অনেক বাড়লেও একপর্যায়ে স্থবির হয়ে যায়।

 

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশে এশিয়া অঞ্চলের প্রধান বাণিজ্য গোষ্ঠীগুলোর অন্তর্ভুক্ত নয়। আসিয়ান, আরসিইপি বা পিটিপিপিতে বাংলাদেশে নেই। রফতানিপণ্যের বহুমুখীকরণে বাংলাদেশকে আন্তঃএশীয় বাণিজ্য অংশীদারিতে যেতে হবে। পূর্বাঞ্চলের প্রতিবেশীদের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক সম্পর্ক তৈরি করতে হবে। প্রতিবন্ধকতা আছে, তবে এলডিসি থেকে বাংলাদেশের এই উত্তরণ উজ্জ্বলতর ভবিষ্যতের লক্ষণ বলেই ধরে নেওয়া যায়। দক্ষিণ এশিয়ায় যারা ভিন্ন পথ অবলম্বন করছে, তাদের জন্য এটা সতর্কবার্তা।

 

প্রজন্মনিউজ২৪/এসএ

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন