কালোটাকা সাদা করার আরও সুযোগ দরকার

প্রকাশিত: ০৬ মার্চ, ২০২১ ১১:২০:৩৬ || পরিবর্তিত: ০৬ মার্চ, ২০২১ ১১:২০:৩৬

কালোটাকা সাদা করার আরও সুযোগ দরকার

আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট সামনে রেখে কর-সুবিধা, নীতিসহায়তা ও দ্বৈত কর পরিহারের দাবি জানিয়েছে আর্থিক খাতের তিনটি সমিতি। এর মধ্যে কালোটাকা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ১০ শতাংশের বদলে ৫ শতাংশ করারোপের দাবি জানিয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও শেয়ারবাজার–সংশ্লিষ্ট একটি সমিতি।

সমিতিগুলো হচ্ছে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি), বাংলাদেশ ইনস্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশন (বিআইএ) এবং বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ)। এ ছাড়া ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জও (ডিএসই) গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে বাজেট আলোচনায় অংশ নেয়। তবে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সমিতি আলোচনায় আসেনি।

কালোটাকায় আরও সুবিধা দাবি

রাজধানীর সেগুনবাগিচায় এনবিআর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত প্রাক্‌–বাজেট আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সংস্থাটির সদস্য মো. আলমগীর হোসেন, মো. সাইফুল ইসলাম ও মো. মাসুদ সাদিক। তবে এনবিআরের পক্ষ থেকে কথা বলেন শুধু চেয়ারম্যান।

এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম সবার কথা শোনার পর বলেন, অনেক পরামর্শ এসেছে। আগামী বাজেটে প্রস্তাবগুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হবে। রাজস্ব আদায়ে স্বচ্ছতা আনার চেষ্টা করছেন বলেও জানান তিনি।

ব্যাংক চায় কম করপোরেট কর

পূর্বনির্ধারিত বৈঠক থাকলেও বিএবির চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার বা ভাইস চেয়ারম্যান আবদুস সামাদ আলোচনায় যোগ দেননি। সমিতির নেতৃত্বস্থানীয় অন্য কেউও ছিলেন না। অংশ নিয়েছেন একমাত্র এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের চেয়ারম্যান এস এম তমাল পারভেজ। শুরুতেই তিনি জানান, লিখিত কোনো প্রস্তাব নিয়ে আসতে পারেননি, তবে দু–এক দিনের মধ্যেই তা পাঠাবেন।

তমাল পারভেজ বলেন, দেশের যে উন্নয়ন আজ দেখা যাচ্ছে, তার সঙ্গে ব্যাংক খাতের সরাসরি সম্পৃক্ততা আছে। স্বল্পমেয়াদি ঋণ দেওয়া ব্যাংকের কাজ হলেও শক্তিশালী শেয়ারবাজার না থাকায় দীর্ঘমেয়াদি ঋণ দেওয়ার কাজও ব্যাংক খাতকেই করতে হচ্ছে। কর্মসংস্থান সৃষ্টিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে ব্যাংক খাত। অথচ ব্যাংকগুলোকে ৪০ শতাংশ করপোরেট কর দিতে হচ্ছে, যা অত্যন্ত বেশি।

মন্দ ঋণের বিপরীতে ব্যাংকগুলোকে প্রভিশন রাখতে হয়। এমনিতেই ঋণ আদায় হয় না, তার ওপর প্রভিশনের টাকাকে আয় দেখিয়ে কর কেটে নেওয়া হচ্ছে। বিষয়টিকে পুনর্বিবেচনার দাবি জানান তিনি।

তালিকাভুক্ত, অতালিকাভুক্ত সমান ভ্যাট

তালিকাভুক্ত কোম্পানির আয়কর ২০ শতাংশ এবং ভ্যাট ১০ শতাংশ করার দাবি জানিয়েছে বিএমবিএ। সংগঠনটির পক্ষে বক্তব্য উপস্থাপন করেন সভাপতি মো. ছায়েদুর রহমান। তিনি বলেন, শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ও তালিকাভুক্ত নয়—এই দুই ধরনের কোম্পানিকে আলাদা হারে আয়কর দিতে হয়। তালিকাভুক্ত কোম্পানিকে দিতে হয় ২৫ শতাংশ আর অতালিকাভুক্ত কোম্পানিকে দিতে হয় ৩২ দশমিক ৫ শতাংশ আয়কর। তা–ও আবার ব্যাংক, বিমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, টেলিযোগাযোগ ও টোব্যাকো কোম্পানির ক্ষেত্রে এই পার্থক্য প্রযোজ্য নয়।

বিএমবিএ বলেছে, তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত উভয়ের ক্ষেত্রেই মূল্য সংযোজন করের (ভ্যাট) হার একই অর্থাৎ ১৫ শতাংশ। তালিকাভুক্ত কোম্পানির ভ্যাট হওয়া উচিত ১০ শতাংশ। কর-ভ্যাটে আরও উৎসাহব্যঞ্জক পার্থক্য না থাকার কারণেই দেড় লাখ নিবন্ধিত কোম্পানির মধ্যে তালিকাভুক্ত মাত্র ৩২৫টি।

এ ছাড়া মার্চেন্ট ব্যাংকের ওপর করহার ৩৭ দশমিক ৫ থেকে ২৫ শতাংশে নামানো, লেনদেনের ওপর কর দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ থেকে দশমিক শূন্য ১৫ শতাংশ করা, শেয়ারবাজারে অপ্রদর্শিত আয় বিনিয়োগের কর ১০ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশে নামিয়ে আনা এবং আগামী অর্থবছরেও শেয়ারবাজারে কালোটাকা বিনিয়োগের সুযোগ চায় বিএমবিএ।

বিমা খাতে দ্বৈত কর

বিমা খাতের দুটি সমিতি, একটি চেয়ারম্যানদের বিআইএ, আরেকটি প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের বাংলাদেশ ইনস্যুরেন্স ফোরাম (বিআইএফ)। বিআইএর সভাপতি শেখ কবির হোসেন বা তাদের কোনো প্রতিনিধি ছিলেন না আলোচনায়। বিআইএফের সদস্য সোনার বাংলা ইনস্যুরেন্স কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল খালেক মিয়া আলোচনায় অংশ নেন। তিনিই বিআইএর পক্ষে বক্তব্য রাখেন।

বিআইএর বক্তব্য হচ্ছে, এ খাতের এজেন্টদের কমিশনের ওপর ৫ শতাংশ কর ধরা আছে। দ্বৈত করও রয়েছে। তারা এই দ্বৈত কর বাতিলের দাবি করেছে।

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন





ব্রেকিং নিউজ