বনমালি, তুমি পরজনমে হইও রাধা….

প্রকাশিত: ০৫ ডিসেম্বর, ২০২০ ১১:০৩:৪২ || পরিবর্তিত: ০৫ ডিসেম্বর, ২০২০ ১১:০৩:৪২

বনমালি, তুমি পরজনমে হইও রাধা….

শ্রীজাত লিখেছিলেন মধ্যমেধায় বেমানান ছিলে বড়। দামি কেয়ারিতে যেমন জংলা ফুল – শেষবার এসে নিয়ে চলে গেল ঝড়ও, অভিযানে আর লাগবে না মাস্তুল। তবু থেকে যাবে কথাদের ফাঁকে ফাঁকে কী অতর্কিতে জ্বলে ওঠা দুই চোখ, সাড়া দিতে হয়, পর্দা যখন ডাকে। তারিফে দাঁড়ায় মহাকাল। দর্শক। প্রখ্যাত অভিনেতার প্রয়াণের এই এপিটাফ কি স্বচ্ছন্দে বসে যায় তোমার চলে যাওয়ার পথেও।

এই শহর বুঝতে পারেনি তোমায়। তবু ফাঁকা লাগে। ঋতুপর্ণ ঘোষ, তোমার চলে যাওয়ার সাত বছর পরেও ফাঁকা লাগে ওই পর্দাটা, যেখানে ম্যাজিক হত। ঝরে পড়া চিনার পাতা পেরিয়ে বহমান ভাঙাচোরা জীবনটা নিয়েই ম্যাজিক করতে তুমি। বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির স্বামী কেন আসামী আর বেদের মেয়ে জোছনার কমার্শিয়াল পথকে কীভাবে দৃশ্যশৌখিনতায় মুড়ে ফেলতে হয়, চিনিয়ে ছিলে তুমি। তীব্র দহনের পর তাই উৎসবে মেতেছিলাম আমরা।

আমরা, যারা ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের ভালো ছবি শুষে নিই চাতক পাখির মত। তাদের কাছে তুমি ছিলে সেই অলকনন্দা। আজও বারবার দেখতে বসি উনিশে এপ্রিল, রেনকোট মত মাইলস্টোনগুলো, যা পিছনে ফেলে রেখে গেছ আমাদের জন্য। সাত বছর ধরে ভাল জাতের বাংলা সিনেমার সংজ্ঞা শিখছি আমরা তোমারই ফেলে যাওয়া পথের বাঁক ধরে। তবু তোমাকে বুঝিনি আমরা। তোমার সেই বেশ, তোমার কথা বলার ভঙ্গী বারে বারে বেমানান ঠেকেছে আমাদের কাছে। রূপান্তরকামী তুমি আগলে রেখেছ নিজেই নিজেকে।

একরাশ অভিমান বারবার পর্দায় ফুটে উঠেছে। তবু এই শহর বোঝেনি তোমায়। সত্যজিত, মৃণাল, ঋত্তিক ঘটকের পর জাত চিনিয়েছো তুমি, তবু আমরা বুঝিনি তোমায়। ভাল থেকো ঋতুপর্ণ। তোমার চরিত্ররা আগলে রাখুক তোমায়। স্মৃতিরা সতত সুখের হয় না। তোমার স্মৃতি কাঁদায়, বেদনা দেয়, কখনও জড়িয়ে ধরে বড় আপনের মতো।

প্রজন্মনিউজ২৪/সিয়াম

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন





ব্রেকিং নিউজ