হবিগঞ্জে হাওরের পানি নিষ্কাশনে সমস্যা, বীজতলা নিয়ে কৃষকরা হতাশ

প্রকাশিত: ৩০ নভেম্বর, ২০২০ ০৫:১৩:১৩

হবিগঞ্জে হাওরের পানি নিষ্কাশনে সমস্যা, বীজতলা নিয়ে কৃষকরা হতাশ

 

ইকবাল আহমদ, হবিগঞ্জ:হবিগঞ্জ জেলার বিভিন্ন হাওরের পানি নিষ্কাশনে সমস্যার কারণে বীজতলা তৈরি নিয়ে হতাশায় রয়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। কারণ বোরো ধান চাষাবাদের জন্য বীজতলা তৈরির মৌসুম নভেম্বর মাস, অথচ এখনো হাওরগুলোতে পানি নামছে না। সাধারণত হাওরগুলোতে প্রতিবছর নভেম্বরে শুরু হয় বোরোর আবাদ। শীত উপেক্ষা করে ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত খেতে কাজ করেন কৃষকরা। কিন্তু এ বছর দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। নভেম্বর শেষ হলেও নামছে না হাওরের পানি। এ কারণে এখনও বীজতলা তৈরি করতে পারছেন না কৃষকরা। কৃষকরা বলছেন, বিভিন্ন নদ-নদী খনন না করা এবং অপরিকল্পিতভাবে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণের কারণে হাওরের পানি নিষ্কাশনে সমস্যা হচ্ছে। তারা বুঝতে পারছেন না এ বছর আদৌ বোরোর আবাদ করতে পারবেন কিনা। দেরিতে আবাদ করতে পারলেও পরে বন্যার কবলে পড়ে ঘরে ফসল তুলতে না পাড়ার আশঙ্কা তাদের।

হবিগঞ্জের বানিয়াচং ও আজমিরীগঞ্জের বড় বড় হাওরের পানি এখনও আটকে আছে। বিশেষ করে কাকাইলছেও হাওর, দিরাই হাওর, সৌলড়ি হাওর, বদলপুর হাওর, শিবপাশা হাওর, বানিয়াচং উপজেলার হারুণী হাওর, মুরাদপুর হাওর, আফরার হাওরসহ বিভিন্ন হাওর পাড়ের কৃষরা সব চেয়ে বেশি বেকায়দায় আছেন। এ সব হাওরের অনেক কৃষক বীজতলা তৈরি করতে পারছেন না। কৃষকদের আশঙ্কা, সঠিক সময় বীজতলা তৈরি করতে না পারায় ফসল কাটার সময় ফিছিয়ে যাবে। এতে আগাম বন্যায় ফসলহানি হতে পারে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানিয়েছে, চলতি বছর জেলায় হাইব্রিড ও স্থানীয় জাতের প্রায় ৯ হাজার হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত বীজতলা তৈরির সঠিক কোনো তথ্য দফতরে নেই।

বানিয়াচং উপজেলার আড়িয়ামুগুড় গ্রামের কৃষক সুবল দাস বলেন, অন্য বছর এমন সময় বীজতলায় বীজ বোনা হতো। কিন্তু এ বছর হাওরে পানি থই থই করছে। বীজতলা পানির নিচে পড়ে আছে। এছাড়া হাওর থেকে পানি নামছে খুব ধীরে।

আজমিরীগঞ্জ উপজেলার বদলপুর হাওরের কৃষক রজব আলী বলেন, বীজতলা কৈরি করতে না পারায় তিনি খুব দুঃশ্চিন্তায় আছেন। এমনিতেই প্রতি বছর আগাম বন্যায় হাওরের ধান তলিয়ে যায়। এ বছর বীজতলা তৈরিতে দেরি হলে সময় লাগছে, যে কারণে ফসল পাকতেও সময় লাগবে। ফসল ফললেও তা হয়তো ঘরে তুলতে পারবেন না।

লাখাই উপজেলার লাখাই গ্রামের কৃষক মঈনুল হাসান বলেন, ‘ঘরে বীজ কিইন্যা আনছি। কিন্তু পানি নামতাছে না। জালাপাট করতে পারতাছি না। বীজ নষ্ট অইয়া যাওয়ার পথে।’

তবে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপতরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. তমিজ উদ্দিন বলেন, ‘এখন প্রায় সব এলাকাতেই বীজতলা করার মতো অবস্থা তৈরি হয়েছে। এ কথা ঠিক, হাওরের ভাটি এলাকাগুলোতে পানি জমে আছে, তাও দ্রুত নিষ্কাশন হয়ে যাবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘হাওরের নদীগুলো ভরাট হয়ে গেছে। এগুলো খনন করা হলে কৃষকদের অনেক উপহার হতো। একদিকে যেমন আগাম বন্যায় ফসলহানি হতো না, অন্যদিকে বোরো মৌসুমে সহজেই হাওরের পানি নামতে পারত।’

প্রজন্মনিউজ২৪/মেহেদী

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ