ভার্চুয়াল ও নিয়মিত আদালতের সংখ্যা বৃদ্ধির দাবি

প্রকাশিত: ২৮ নভেম্বর, ২০২০ ১০:৫৭:২৩

ভার্চুয়াল ও নিয়মিত আদালতের সংখ্যা বৃদ্ধির দাবি

ডিসেম্বর পর্যন্ত ভার্চুয়াল কোর্ট চলতে পারে : খন্দকার মাহবুব হোসেন; প্রয়োজনের তুলনায় আদালত স্বল্প : রুহুল কুদ্দুস 

করোনাভাইরাসের কারণে নিয়মিত আদালতের পাশাপাশি প্রায় সাত মাস ধরে ভার্চুয়াল আদালতে বিচারকার্যক্রম চলছে। পাশাপাশি ফিজিক্যাল বা সাধারণ আদালতেও বিচারকার্যক্রম চলছে।সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ এখন পুরোপুরি ভার্চুয়াল। তবে হাইকোর্টে নিয়মিত আদালতের পাশাপাশি ভার্চুয়াল বেঞ্চ রয়েছে।আপিল বিভাগে দু’টি ভার্চুয়াল বেঞ্চ রয়েছে।হাইকোর্টে ৩৫টি ভার্চুয়াল বেঞ্চের পাশাপাশি ১৮টি নিয়মিত বেঞ্চ রয়েছে।আর নিম্ন আদালতেও ভার্চুয়ালের পাশাপাশি নিয়মিত আদালতে বিচারকার্যক্রম চলছে।

বর্তমানে করোনার সেকেন্ড ওয়েভ চলছে।শীত বাড়ার সাথে সাথে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।এই প্রেক্ষাপটে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ভার্চুয়াল আদালতের পাশাপাশি নিয়মিত আদালতের সংখ্যাও বাড়ানো প্রয়োজন বলে আইনজীবীরা মনে করেন।হাইকোর্টের নিয়মিত রিট বেঞ্চ বাড়ানোর পাশাপাশি রিট বেঞ্চ এবং আগাম জামিনের জন্যও ফৌজদারি মোশন বেঞ্চ বাড়ানোর যৌক্তিকতা তুলে ধরেন তারা।

আইনজীবীদের দাবি যথাসময় ন্যায়বিচার প্রাপ্তির ক্ষেত্রে আদালতের বা বেঞ্চের স্বল্পতা রয়েছে, সে ক্ষেত্রে প্রথমত আগাম জামিনের বেঞ্চ এবং দ্বিতীয়ত রিট আবেদনের বেঞ্চ বাড়ানো দরকার।

এ বিষয়ে প্রবীণ আইনজীবী ও সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, ভার্চুয়াল কোর্টের ব্যাপারে আমরা অভ্যস্ত হয়ে গেছি।তবে আমাদের ইন্টারনেট সমস্যা রয়ে গেছে।এই সমস্যাগুলো দূর করে বর্তমান সময়ে ফিজিক্যাল কোর্টের চেয়ে ভার্চুয়াল কোর্ট কিছু দিনের জন্য অন্তত ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। আমাদের আইনজীবী ও বিচারকরা যাতে সতর্ক থাকতে পারেন, সেই ব্যাপারে বর্তমান অবস্থায় ভাচুয়াল কোর্ট ডিসেম্বর পর্যন্ত চলা উচিত বলে আমি মনে করি।

তিনি বলেন, মামলার ফাইলিং সাধারণ নিয়মে হবে।ভার্চুয়ালি হবে শুধু আইনজীবী ও আদালতের বক্তব্য।যেহেতু আমাদের বেশির ভাগ বিচারক অনেক বয়স্ক হয়ে গেছেন।তাই তাদের পক্ষে রিস্ক নেয়া ঠিক হবে না।সেই ক্ষেত্রে যতটা সম্ভব ভার্চুয়াল কোর্ট চলতে পারে।সাথে সাথে স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করে ফিজিক্যাল কোর্টও চালানো উচিত।ভার্চুয়াল ও ফিজিক্যাল উভয় কোর্টই চলা উচিত।

তবে সুপ্রিম কোর্ট বারের সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন,সব কিছু যেখানে স্বাভাবিকভাবে চলছে, সেখানে ফিজিক্যাল কোর্ট চলতে সমস্যা থাকার কথা নয়।তিনি বলেন, সব কিছু চলছে, কোর্ট আর কী দোষ করল? এমন তো নয় যে ঘরে বসে থাকলে আক্রান্ত হচ্ছে না।মানুষ তো ঘরে থেকেও আক্রান্ত হচ্ছেন।তবে আমাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। আমরা সমিতির পক্ষ থেকে যত দূর সম্ভব, স্বাস্থ্যবিধি সংক্রান্ত হ্যান্ড সেনিটাইজার, মাস্ক পরিধান বাধ্যতামূলক আমরা নিশ্চিত করেছি।সমিতিতে আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীরা যাতে সুরক্ষা পায় সে ব্যবস্থা করে দিয়েছি।

ব্যারিস্টার কাজল আরো জানান, গত ডিসেম্বর মাস থেকে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের ১০৪ জন আইনজীবী মারা গেছেন। তবে কারা করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন এবং কতজন আইনজীবী করোনায় আক্রান্ত এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই। কারণ করোনায় আক্রান্ত সবাই তথ্য প্রকাশ করেন না।

আমিনুল ইসলাম বলেন, আমরা যেহেতু করোনার সেকেন্ড ওয়েভের মধ্যে আছি।সে কারণে মামলার ফাইলিং সিস্টেম আগের মতো সিস্টেম ঠিক রেখে সব কোর্ট ভার্চুয়ালি করা উচিত।এতে আদালতে মানুষের ভিড় কমবে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা সম্ভব হবে। তিনি বলেন, হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্ট পুরোপুরি ভার্চুয়াল হওয়া উচিত।তিনি আরো বলেন, নিম্ন আদালতের সব কার্যক্রম অন্ততপক্ষে শীতকালীন সময় বা আগামী ফেব্রুয়ারি বা মার্চ মাস পর্যন্ত ভার্চুয়ালি করা উচিত।কারণ প্রচুর লোক, জামিন, আত্মসমর্পণ ও রিমান্ড শুনানির জন্য হাজির হন। নিম্ন আদালতে ভিড় থাকায় আগের তুলনায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। এ জন্য সুপ্রিম কোর্টের গাইডলাইন অনুযায়ী নিম্ন আদালত ভার্চুয়াল হওয়া উচিত।

এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল অফিসার ও মুখপাত্র ব্যারিস্টার মো: সাইফুর রহমান বলেন, ভার্চুয়াল আদালত নিয়ে এখন নতুন করে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সাধারণ কোর্টে সংখ্যা বাড়ানো বা আদালত পুরোপুরি ভার্চুয়াল করার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

প্রজন্মনিউজ২৪/হারুন

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ