প্রকাশিত: ১২ নভেম্বর, ২০২০ ০৫:০৭:১৪
লালমনিরহাট প্রতিনিধি লালমনিরহাটের বুড়িমারীতে আবু ইউনুস মো. শহিদুন্নবী জুয়েলকে পিটিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় জেলা প্রশাসকের গঠিত কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন জেলা প্রশাসক আবু জাফরের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১২ নভেম্বর) সকালে এই প্রতিবেদন জমা দেয় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি। ওই প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘তদন্ত কমিটি কোরআন অবমাননার কোনও প্রমাণ পায়নি। জুয়েলকে নিছক গুজব ছড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে।’
এ তদন্ত কমিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন লালমনিরহাটের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) টিএমএ মোমিন। কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম ও জেলা ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপপরিচালক সহিদুল ইসলাম।
জেলা প্রশাসক মো. আবু জাফর বলেন, ‘তদন্ত কমিটি দুই দফা সময় নিয়ে মোট ৯ কর্মদিবস তদন্ত করে ৬ পৃষ্ঠার একটি তদন্ত প্রতিবেদন বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় আমার কাছে হস্তান্তর করেছে। এ প্রতিবেদনে পুরো ঘটনাটি তুলে আনা হয়েছে। কিন্তু এই মুহূর্তে প্রতিবেদন সম্পর্কে বিস্তারিত বলা যাচ্ছে না। তবে প্রতিবেদনে পবিত্র কোরআন অবমাননার বিষয়ে কোনও তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। নিছক কোরআন অবমাননার গুজব ছড়িয়ে একজন নিরপরাধ ব্যক্তিকে পিটিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। অপরাধীরা ইউনিয়ন পরিষদ ভাঙচুর এবং সরকারি কাজে দিয়েছে। এসব ফৌজদারি অপরাধের কারণে তিনটি মামলা করা হয়েছে। এসব মামলায় ৩২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’
অপর একাধিক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তদন্ত প্রতিবেদনটি মন্ত্রীপরিষদ সচিবালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হবে। পরে তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় যদি প্রতিবেদন প্রকাশ করতে চাই করবে। আমরা যে ৫টি সুপারিশ করেছি, সেটিও এই মুহূর্তে প্রকাশ করতে পারছি না।’
লালমনিরহাট ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপপরিচালক সহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা প্রকৃত ঘটনাটি তুলে আনার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। তদন্তে আমরা অনেক কিছুই পেয়েছি। যেহেতু এ বিষয়ে ফৌজদারি অপরাধ সংঘটনের দায়ে তিনটি মামলা হয়েছে। মামলার তদন্তের স্বার্থে আমাদের পক্ষে কোনও মন্তব্য করা যাবে না। তবে মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা চাইলে এ প্রতিবেদনের সহযোগিতা নিতে পারেন।’
তিনি এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘আমরা শুধু নয়, বুড়িমারী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে সেদিনের ঘটনায় কেউ কোরআন অবমাননার তথ্য-প্রমাণ পাননি। সুতরাং এটি ছিল নিছক একটি গুজব। এ গুজবকে পুঁজি করে কেউ কেউ সেদিন ভয়ানক অপরাধ করেছে বলে আমরা মনে করি।’
জানতে চাইলে লালমনিরহাট অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) ও তদন্ত কমিটির সভাপতি টিএমএ মোমিন বলেন, ‘তদন্তের প্রয়োজনে আমরা ১৭-২০টি ভিডিও সংগ্রহ করেছি। প্রকাশ্যে ও গোপনে ৫০ জনের বক্তব্য নিয়েছি। এছাড়াও বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়েছে। তদন্তের প্রয়োজনে আমরা ৭টি সভা করে সংগৃহীত তথ্য-উপাত্ত বিন্যাস করে ৬ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদনে ৭৩ পাতা সংযুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৪২টি অনুচ্ছেদ রয়েছে। এতে ঘটনার প্রারম্ভিকা, ঘটনার বিবরণ, অধিকতর তথ্যানুসন্ধ্যান, গভীর পর্যবেক্ষণ, সুপারিশ ও মন্তব্য রয়েছে।’
তদন্ত কমিটির এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘১৭-২০টি ভিডিওর মধ্যে ৫৬ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ক্লিপ্স আমাদের হাতে এসেছে। ওই ভিডিওতে দেখা যায়, পাটগ্রাম উপজেলা চেয়ারম্যান রুহুল আমিন বাবুল বক্তব্য রাখছেন। তার সঙ্গে এবং পেছনে বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবু সাঈদ নেওয়াজ নিশাত ও পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুন নাহারকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। তখন দিনের আলোতে শত শত মানুষের সামনে কথা বলছিলেন তিনি। এ সময় ইউনিয়ন পরিষদের ভেতরে একটি কক্ষে আবু ইউনুস মো. শহিদুন্নবী জুয়েল (৫০) ও সুলতান রুবাইয়াত আব্বাস সুমন (৫০) অবস্থান করছিল। ইউনিয়ন পরিষদের সামনে বক্তব্য চলাকালীন জুয়েলের মোটরসাইকেলটি পোড়ানোর ধোঁয়া উড়ছিল। ওই ভিডিও’তে পাওয়া তার বক্তব্যের বিষয়েও প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে।’
উল্লেখ্য, গত ২৯ অক্টোবর লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে কোরআন শরিফ অবমাননার গুজব ছড়িয়ে আবু ইউনুস মো. শহিদুন্নবীকে পিটিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় পৃথক তিনটি মামলা রুজু করা হয়। এতে ১১৪ জন এজাহার নামীয়সহ শত শত ব্যক্তিকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়। এখন পর্যন্ত সর্বোমোট ৩২ জন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
প্রজন্মনিউজ২৪/মেহেদী
ফরিদপুরে মন্দিরে আগুন, এলাকাবাসীর পিটুনিতে নিহত ২
ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এক ব্যক্তিকে গলা কেটে হত্যা
ধুনটে বাড়ী থেকে উচ্ছেদ করে জমি দখলের চেষ্টা
সেভ দ্য রোডের ১৫ দিনব্যাপী সচেতনতা ক্যাম্পেইন সমাপ্ত
আইপিএল জুয়াড়ি সন্দেহে চারজন গ্রেফতার
চোরের হামলায় স্বামী- স্ত্রী আহত, মামলা হলেও গ্রেফতার হয়নি আসামী!
রাজধানীর বনশ্রীতে আবাসিক ভবনে আগুন
গাজা: বিমান হামলায় বেঁচে যাওয়া বালকের প্রাণ গেল সাহায্য নিতে গিয়ে
Severity: Notice
Message: Undefined index: category
Filename: blog/details.php
Line Number: 417
Backtrace:
File: /home/projonmonews24/public_html/application/views/blog/details.php
Line: 417
Function: _error_handler
File: /home/projonmonews24/public_html/application/views/template.php
Line: 199
Function: view
File: /home/projonmonews24/public_html/application/controllers/Article.php
Line: 87
Function: view
File: /home/projonmonews24/public_html/index.php
Line: 315
Function: require_once