প্রকাশিত: ০১ নভেম্বর, ২০২০ ১১:২৫:১৯ || পরিবর্তিত: ০১ নভেম্বর, ২০২০ ১১:২৫:১৯
সারা দেশের বেশীরভাগ সড়ক-মহাসড়কের বেহাল অবস্থা। জেলা পর্যায়ের সড়কগুলোর অবস্থা আরও করুণ। বন্যা ও পরবর্তী পরিস্থিতিতে সড়কগুলোর অবস্থা খুবই নাজুক। স্বাভাবিকভাবে চলতে পারছে না যানবাহন। খানাখন্দে ভরা সড়ক-মহাসড়কগুলো সংস্কারের উদ্যোগ নেই। ঝুঁকি নিয়েই চলছে যানবাহন। বাড়ছে দুর্ঘটনা। কোথাও কোথাও চলতে গিয়ে সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজট। ৪ ঘণ্টার পথ পাড়ি দিতে সময় লাগছে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা। ভাঙাচোরা সড়কের কারণে ভাড়াও বাড়ছে। বর্ধিত ভাড়ার কারণে প্রভাব পড়ছে নিত্যপণ্যের বাজারে। সড়কের এ বেহাল দশার কারণে একদিকে যেমন দুর্ভোগ বাড়ছে, অন্যদিকে নিত্যপণ্যের চড়া দামে খেসারত দিচ্ছে সাধারণ মানুষ।
ঢাকার পাশে^র নারায়ণগঞ্জ পঞ্চবটিতে অবস্থিত বিসিক হোসিয়ারি শিল্প নগরীতে রয়েছে ৬৫০টি গার্মেন্ট কারখানা। বিসিক শিল্পনগরীর সেই লাখ লাখ শ্রমিককে গার্মেন্টে আসতে হয় পানির নিচে ডুবে থাকা রাস্তা দিয়ে। বর্ষায় এ রাস্তার ওপর থাকে হাঁটুপানি। আর যখন বৃষ্টি থাকে না তখনো এ রাস্তার ওপর পানি জমে থাকে। রয়েছে ড্রেনের গর্ত। ফলে প্রতিনিয়ত এখানে ঘটছে দুর্ঘটনা। বিসিক শিল্পনগরী-সংলগ্ন খালটি দখল হয়ে যাওয়ায় তৈরি হয়েছে এ পরিস্থিতি। বিসিক হোসিয়ারি শিল্পনগরীর বিভিন্ন গার্মেন্টের শ্রমিক পপি, বুবলি বেগম, নিয়াজ, রোকসানা জানান, জলাবদ্ধ এ রাস্তা দিয়ে যাওয়া-আসা করায় তারা চর্মরোগে আক্রান্ত হয়েছেন। রাস্তার ওপরে মানুষের মলও থাকে। বাধ্য হয়ে এ পানি মাড়িয়ে যাওয়া-আসা করতে হয়।
জানা গেছে, টাঙ্গাইল জেলার ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তার কারণে এক উপজেলা থেকে অন্য উপজেলার যোগাযোগ কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। এতে করে মানুষ নির্ধারিত সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছেন না। তাই দ্রুততম সময়ের মধ্যে রাস্তা ও কালভার্টগুলো পুনর্র্নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। গাজীপুরের টঙ্গীর বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতার কারণে খানাখন্দ সৃষ্টি হওয়ায় সড়ক মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। এ ছাড়া কালিগঞ্জ সড়ক ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে খানাখন্দের কারণে তীব্র যানজট লেগে থাকে। এসব কারণে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। এর মধ্যে শিলমুন, মরকুন, মধুমিতা, আরিচপুর, পাগাড়, আউচপাড়া, বনমালা, দত্তাপাড়া, সাতাইশ, মুদাফা, গাজীপুরাসহ বিভিন্ন এলাকায় রাস্তার অবস্থা করুণ। টঙ্গী-বনমালা সড়কটির অবস্থা সবচেয়ে বেশি খারাপ। এই রাস্তাটি সংস্কার না হওয়ার বনমালা হয়ে গাজীপুরগামী বাইপাস সড়কটির সুফল পাচ্ছেন না পথচারীরা। বনমালা রেললাইন পার হওয়ার পর হায়দরাবাদ ব্রিজ পর্যন্ত রাস্তাটি চলাচলের একেবারেই অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
জানা গেছে, দেশের দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সমুদ্রবন্দর মোংলায় সড়কপথে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম খুলনা-মোংলা জাতীয় মহাসড়কটির (এন-৭) দীর্ঘদিন ধরে বেহাল দশা। বাগেরহাট সড়ক বিভাগ বলছে, তাদের অংশে ৫ কিলোমিটার যানবাহন চলার সম্পূর্ণ অনুপযোগী। ১৯৮৪ সালে দুই লেনের এ মহাসড়কটি নির্মিত হওয়ার পর এখনো প্রশস্ত করা হয়নি। এ কারণে মোংলা বন্দরের আমদানি-রপ্তানি পণ্য আনা-নেওয়ায় তীব্র সমস্যা হচ্ছে। জাতীয় মহাসড়কটি ভেঙে ১০ কিলোমিটার অংশ মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। দ্রুততম সময়ে কাঁচামাল আনতে না পারায় ব্যাহত হচ্ছে শিল্পকারখানার উৎপাদন। বাড়ছে পণ্য পরিবহন খরচ। অন্যদিকে বাগেরহাট সড়ক বিভাগের দশানী-রামপাল-মোংলা ৩৩ দশমিক ৮৭ কিলোমিটার গুরুত্বপূর্ণ জেলা মহাসড়কটিরও বেহাল অবস্থা। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় পিচঢালা সড়ক যেন গ্রামের মেঠোপথে পরিণত হয়েছে।
জানা গেছে, বগুড়া পৌরসভায় ৪৫০ কিলোমিটার পাকা সড়কের অধিকাংশই এখন ক্ষতবিক্ষত, খানাখন্দে ভরা। ফলে চরম দুর্ভোগ-ভোগান্তিতে ভুগছেন সেখানকার মানুষ। আবার সড়কের ওপর যত্রতত্র ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকে ময়লা-আবর্জনা। করা হয় ইচ্ছেমতো পার্কিং। পৌরসভাসূত্রে জানা যায়, পৌর এলাকার ২৬৬ কিলোমিটার সড়কের বড় অংশ এখন ভাঙাচোরা। পৌর এলাকার হাকির মোড়, মালতিনগর নামাপাড়া, ভাটকান্দি ব্রিজ রোড, উত্তর ভাটকান্দি, চেলোপাড়া টু চন্দনবাইশা সড়ক, কালীতলা, করোনেশন স্কুল সড়ক, উপশহর, ধরমপুর সড়ক, জাহেদ মেটাল মোড়, জহরুল নগর, নুরানী মোড়, বাদুড়তলা, পিটিআই মোড়-বকশীবাজার, নিশিন্দারা সড়ক, কামারগাড়ী-হাড্ডিপট্টি, চামড়াগুদাম লেন সড়ক, কারমাইকেল সড়ক খানাখন্দে ভরা। সড়কের পাশের ড্রেনও নষ্ট হয়ে পড়েছে। এ পথ দিয়ে যানবাহন চলতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। পথচারীরা যানবাহনে চলতে গিয়ে দুর্ভোগের শিকার হন। পৌর শহরের থানা মোড় থেকে কাঁঠালতলা হয়ে ফতেহ আলী ব্রিজ পর্যন্ত সড়েকের অবস্থা শোচনীয়। কাঁঠালতলা থেকে বড়গোলা পর্যন্ত ৩ নম্বর রেলগেট পার হয়ে সড়কটি ভাঙাচোরা ও খানাখন্দে ভরা। কাঁঠালতলায় সড়কের ওপর বাজার বসায় এবং ময়লা-আবর্জনার স্তূপ করে রাখায় পথচারীদের বছরজুড়েই যাতায়াতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
জানা গেছে, দীর্ঘদিনেও সংস্কার হয়নি কুমিল্লার দেবিদ্বার-ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার সংযোগ সড়কগুলো। এর মধ্যে ফতেহাবাদ-দুলালপুর, এগারগ্রাম-বালিনা, মুগসাইর-বেড়াখলা সড়ক এখনো পাকা হয়নি। বাকিগুলো পাকা হলেও অবস্থা নাজুক। বেড়াখলা-দুলালপুর সড়ক যেন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। সেখানে ইট ফেলে রাস্তা মেরামত করা হলেও অধিকাংশ ইট উঠে গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফতেহাবাদ-দুলালপুর সড়কটিতে একটি ইটের কণাও পড়েনি। একই অবস্থা এগারগ্রাম-বালিনা ও মুগসাইর-বেড়াখলা সড়কের। রাস্তাগুলোয় কাদা থাকে বছরজুড়ে। বেহাল সড়কগুলো নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন যাত্রী ও চালকরা। তারা বলছেন, মনে হচ্ছে এ সড়কগুলোর মা-বাপ নেই। এদিকে কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের বেহাল দশায় যাত্রীদুর্ভোগ চরমে উঠেছে। সড়কের গর্তগুলো দিন দিন বড় হচ্ছে। একটু বৃষ্টিতে গর্তে পানি জমে পরিণত হচ্ছে পুকুরে। গর্তে গাড়ি আটকে প্রায় সময় সড়ক অচল হয়ে যাচ্ছে। এতে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন কুমিল্লা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুরসহ অন্য জেলার যাত্রীরা। দ্রুত সংস্কার করা না হলে আবার সড়কটি যে কোনো সময় অচল হয়ে পড়তে পারে। বেশি খারাপ অবস্থা বাগমারা বাজার, লাকসাম মিশ্রি ও বাইপাসের দক্ষিণাংশে। এ ছাড়া লালমাই, হরিশ্চর, লাকসাম উত্তর বাইপাস, খিলা, নাথেরপেটুয়া, বিপুলাসার, সোনাইমুড়ী, বেগমগঞ্জ থানা এলাকাসহ মাইজদীর বিভিন্ন অংশে ভাঙা রয়েছে। কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের চার লেন প্রকল্পের গুরুত্বপূর্ণ অংশ লাকসামের দৌলতগঞ্জ বাজার বাইপাস ও লালমাই উপজেলার বাগমারা বাজার। এখানেই সড়কে খানাখন্দের জন্য বেশি যানজটের সৃষ্টি হয়।
জানা গেছে, ফেনী-সোনাইমুড়ি আঞ্চলিক সড়কের ফেনী অংশের তেমুহনী থেকে গনিপুর পর্যন্ত ৬ কিলোমিটারের বেহাল দশা। প্রায় ৪ লাখ মানুষের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম এই অনুপযোগী সড়কটি বন্ধ হয়ে যেতে পারে যে কোনো সময়।
সড়কের অনেক জায়গায় সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্তের। পুরো সড়কের বেশির ভাগ অংশে পিচ পাথর উঠে গিয়ে সুরকি-বালু বেরিয়ে এসেছে। সড়কটির তেমুহনী থেকে বোর্ড অফিস পর্যন্ত বড় বড় গর্ত হয়ে ডোবায় পরিণত হয়েছে। সড়কের এই বেহাল দশার কারণে প্রায় সময় কোনো না কোনো যানবাহন সড়কেই বিকল হয়ে পড়ছে। নষ্ট হচ্ছে বিভিন্ন পরিবহনের যন্ত্রাংশ। এতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে এ সড়ক দিয়ে চলাচলকারী লাখ লাখ যাত্রী ও চালকদের। টানা বৃষ্টি, উজানের অব্যাহত পানির প্রবাহ ও নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে সড়কটি নির্মাণ করায় এই হাল। সড়কে খানাখন্দের কারণে দুর্ঘটনা ঘটছে অহরহ। ফেনীর পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ ঝুঁকি নিয়েই বাধ্য হয়ে এ সড়কটি ব্যবহার করছেন। তেমুহনী থেকে বিরলী, রাজাপুর, সিন্দুরপুর, অলাতলী, দরবেশের হাট, গাজীরহাট, কানকির হাট হয়ে সোনাইমুড়ি পর্যন্ত জনসাধারণের চলাচলের একমাত্র সড়ক এটি।
প্র্রজন্মনিউজ ২৪/শেখ নিপ্পন
পর্যটকশূন্য হয়ে পড়েছে কুয়াকাটা
বিশ্ব বই দিবসে নিজের কক্ষেই লাইব্রেরি গড়ে তুললেন রাবি শিক্ষার্থী আকরাম
পটুয়াখালীর বাউফলে হিটস্ট্রোকে পুলিশ সদস্যের মৃত্যু
বোরহানউদ্দিন উপজেলায় ভোটার স্মার্ট কার্ড বিতরণ
ক্রিকেটার আরিফা জাহান বিথীর ব্যতিক্রমী এক উদ্যোগ
পদ্মায় গোসলে নেমে একসঙ্গে নিখোঁজ ৩ কিশোরের মরদেহ উদ্ধার
আধুনিক ওয়ার্ড গঠনে কাউন্সিলর প্রার্থী হতে চান সোহেল
বান্দরবানের তিন উপজেলায় নির্বাচন স্থগিত করেছে ইসি
Severity: Notice
Message: Undefined index: category
Filename: blog/details.php
Line Number: 417
Backtrace:
File: /home/projonmonews24/public_html/application/views/blog/details.php
Line: 417
Function: _error_handler
File: /home/projonmonews24/public_html/application/views/template.php
Line: 199
Function: view
File: /home/projonmonews24/public_html/application/controllers/Article.php
Line: 87
Function: view
File: /home/projonmonews24/public_html/index.php
Line: 315
Function: require_once