প্রকাশিত: ২৯ অক্টোবর, ২০২০ ১১:৫০:১২
গত ২৫ অক্টোবর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা যান ডা. জাহিদুর রশীদ সুমন। ডেঙ্গু হেমারেজিক ফিভারে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি মারা যান। ডা. সুমনের মৃত্যুর পরপরই আবার আলোচনায় ডেঙ্গু।
চিকিৎসকরা বলছেন, ডেঙ্গু ভালোমতোই আছে। কিন্তু করোনা লুকাতে মানুষ জ্বর হলেও বলেনি, হাসপাতালে টেস্ট করাতে যায়নি, যার কারণে ধরা পড়েনি ডেঙ্গু।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের ডেপুটি চিফ (মেডিক্যাল) ডা. এ বি মো. শামছুজ্জামান স্বাক্ষরিত হিসাব অনুযায়ী, ২৪ ঘণ্টায় (২৬ অক্টোবর সকাল আটটা থেকে ২৭ অক্টোবর সকাল আটটা) পর্যন্ত ঢাকায় নতুন করে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন নয়জন।
চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে ৫৮৫ জন। এর মধ্যে হাসপাতাল থেকে ছাড় পেয়েছে ৫৫৬ জন। দেশের সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে রোগী ভর্তি আছে ২৫ জন।
রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটে (আইইডিসিআর) ডেঙ্গু সন্দেহে চারজনের মৃত্যুর তথ্য পাঠানো হয়। আইইডিসিআর দুটি মৃত্যুর তথ্য পর্যালোচনা করে একটি মৃত্যু ডেঙ্গুতে হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে।
নিশ্চিত হওয়া ওই মৃত্যুটিও ছিল একজন চিকিৎসকের। ২৮ আগস্ট রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি মারা যান।
হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের তথ্য থেকে জানা যায় চলতি বছরের জানুয়ারিতে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন ১৯৯ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৪৫ জন, মার্চে ২৭ জন, এপ্রিলে ২৫ জন, মে’তে ১০ জন, জুনে ২০ জন, জুলাইতে ২৩ জন, আগস্টে ৬৮ জন, সেপ্টেম্বরে ৪৭ জন এবং অক্টোবরে এখন পর্যন্ত ১২১ জন।
এদিকে, রাজধানী ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ২৫টি ওয়ার্ড এখনও ডেঙ্গুঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা। এই শাখার এক জরিপে এই তথ্য পাওয়া গেছে। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মোট ১০০টি এলাকায় (ডিএনসিসি ৪১টি এবং ডিএসসিসি ৫৯টি), দুই হাজার ৯৯৯টি বাড়িতে ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া ও জিকা ভাইরাসের ওপর জরিপটি পরিচালিত হয়।
১৯ থেকে ২৮ জুলাই পর্যন্ত দুই সিটি করপোরেশনে রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার জাতীয় ম্যালেরিয়া ও এডিসবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির আওতায় চালানো জরিপে বলা হয়েছে, উত্তর সিটি করপোরেশনের ৯টি এবং দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১৬টি ওয়ার্ড ডেঙ্গুর ঝুঁকিতে রয়েছে।
এসব ওয়ার্ডে এডিস মশার লার্ভার সূচক ব্রুটো ইনডেক্স ২০-এর বেশি। এরমধ্যে উত্তর সিটি করপোরেশনের ভেতরে রয়েছে ১০, ১১, ১৭, ১৯, ২১, ২৩, ২৪, ২৯, ৩২ নম্বর ওয়ার্ড এবং দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ভেতরে রয়েছে ২, ৪, ৮, ৯, ১২, ১৩, ১৪, ১৫, ১৬, ১৮, ২৫, ৩৪, ৪০, ৪১, ৪৫ এবং ৫১ নম্বর ওয়ার্ড। তবে উত্তরে ১৭ নম্বর এবং দক্ষিণে ৫১ নম্বর ওয়ার্ড সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে।
ব্রুটো ইনডেক্স ২০-এর বেশি হলে তাকে ঝুঁকিপূর্ণ বলা হয়। জরিপে দেখা গেছে উত্তর সিটি করপোরেশনে ২৯ এবং দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৩৮টি ওয়ার্ডের ব্রুটো ইনডেক্স ১০-এর বেশি এবং দুই সিটির পাঁচটি ওয়ার্ডে কোনও এডিস মশা পাওয়া যায়নি।
জরিপে জানানো হয়, সর্বোচ্চ বিআই (ব্রুটো ইনটেক্স) ৪৩ দশমিক তিন পাওয়া গেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কল্যাণপুর, পাইকপাড়া ও মধ্য পাইকপাড়া এলাকায় এবং বিআই ৪০ পাওয়া গিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের খিলক্ষেত, কুড়িল ও নিকুঞ্জ এলাকায় এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৫১ নম্বর ওয়ার্ডের মীর হাজারিবাগ, ধোলাইপাড় ও গেন্ডারিয়া এলাকায় সর্বোচ্চ বিআই ৪০ পাওয়া গেছে। এই তিনটি ওয়ার্ড সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে।
মৌসুম জরিপে প্রাপ্ত এডিস মশার পজিটিভ কনটেইনারে (পানির উপস্থিতিপূর্ণ) শতকরা হার বহুতল ভবনে ৫০ দশমিক ৬১ শতাংশ, নির্মাণাধীন ভবনে ২১ দশমিক ১৭ শতাংশ, বস্তি এলাকাতে ১৩ দশমিক ১৪ শতাংশ, একক ভবনে ১২ দশমিক ৪১ শতাংশ এবং খালি জমিতে দুই দশমিক ৬৮ শতাংশ পাওয়া গেছে।
জরিপে এডিস মশার প্রজনন স্থানগুলোর মধ্যে শতকরা হার বহুতল ভবনে ৫১ দশমিক ৩৪ শতাংশ, নির্মাণাধীন ভবনে ২০ দশমিক ৩২ শতাংশ, বস্তি এলাকায় ১২ দশমিক ৮৩ শতাংশ, একক ভবনে ১২ দশমিক ৫৭ শতাংশ এবং পরিত্যক্ত জমিতে দুই দশমিক ৯৪ শতাংশ লার্ভা পাওয়া গেছে।
অক্টোবরে ডেঙ্গু বেশি হচ্ছে মন্তব্য করে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল ও এডিসবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. আফসানা আলমগীর খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, সিটি কর্পোরেশনের চিরুনি অভিযান আপাতত বন্ধ রয়েছে কিছু কারণে।
অক্টোবরে টানা বৃষ্টি হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমরা যে ওষুধও ছিটাবো সে অবস্থাও ছিল না।
তবে আতঙ্কের বিষয় হচ্ছে, মানুষ জ্বর হলেই এখন মনে করছে করোনা। করোনা মনে করে নিজেরাই ঘরে বসে চিকিৎসা নিচ্ছে, ওষুধ খাচ্ছে। জ্বর না কমলে শেষ মুহূর্তে এসে ডেঙ্গু পরীক্ষা করছে। কিন্তু ততক্ষণে অবস্থা আরও খারাপের দিকে চলে যায়।
শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজের ভাইরোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. জাহিদুর রহমান বলেন, ভাইরাস হিসেবে ডেঙ্গুর কিছু ব্যতিক্রমী বৈশিষ্ট্য আছে। অনেক ভাইরাসের ক্ষেত্রে দেখা যায় একবার আক্রান্ত হলে পরে আর আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে না। ডেঙ্গুর ক্ষেত্রে এর উল্টোটা হয়।
তিনি বলেন, করোনার মতো ডেঙ্গুতে আক্রান্ত অনেক রোগীরও লক্ষ্মণ থাকে না। এতে দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হলেও রোগী মনে করে প্রথমবার আক্রান্ত হয়েছে। অথচ দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হলে শারীরিক অবস্থা হুট করে খারাপ হয়ে যেতে পারে। করোনার মতো তাই ডেঙ্গু নিয়েও সতর্ক থাকতে হবে বলে জানালেন ডা. জাহিদুর রহমান।
প্রজন্মনিউজ২৪/সাখাওয়াত
ভোট দিতে গিয়ে শুনলেন তিনি মারা গেছেন, নিরাশ হয়েই ফিরলেন বৃদ্ধা
ঈদের আমেজ কাটেনি বাজারে, ফাঁকা ঢাকাতেও দাপট গরু-খাসির
গাজা: বিমান হামলায় বেঁচে যাওয়া বালকের প্রাণ গেল সাহায্য নিতে গিয়ে
পর্তুগালে বাংলাদেশি স্থপতি মেরিনা তাবাসসুমের স্থাপত্য প্রদর্শনী
মাদক ব্যবসার মূল হোতা সোর্স শহীদ ধরা ছোঁয়ার বাইরে
১২ বছর ধরে ইমামতি করে বেতন দুই হাজার, সেটাও ঠিকমতো পান না
গরমে অতিষ্ঠ খুলনাবাসী; প্রয়োজন ছাড়া বের হন না কেউ
Severity: Notice
Message: Undefined index: category
Filename: blog/details.php
Line Number: 417
Backtrace:
File: /home/projonmonews24/public_html/application/views/blog/details.php
Line: 417
Function: _error_handler
File: /home/projonmonews24/public_html/application/views/template.php
Line: 199
Function: view
File: /home/projonmonews24/public_html/application/controllers/Article.php
Line: 87
Function: view
File: /home/projonmonews24/public_html/index.php
Line: 315
Function: require_once