অস্থির করার ষড়যন্ত্র ঢাবি ক্যাম্পাস

প্রকাশিত: ২৯ অক্টোবর, ২০২০ ১০:০২:২৮

অস্থির করার ষড়যন্ত্র ঢাবি ক্যাম্পাস

 প্রজন্মনিউজ ডেস্ক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে বিভিন্ন ইস্যুতে উত্তপ্ত ও অস্থির করে তোলার চেষ্টা চলছে। সম্প্রতি একাধিক সংগঠন বিভিন্ন ইস্যুতে আন্দোলন, প্রতিবাদ সমাবেশ ও মিছিল অব্যাহত রেখেছে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সরকারকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলারও অপচেষ্টা চলছে। হত্যাকাণ্ড কিংবা রক্তপাতের মতো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটিয়ে হলেও সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে মরিয়া একটি মহল।
সম্প্রতি একটি বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে এমন আশঙ্কা করা হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গোয়েন্দা প্রতিবেদন পেয়ে যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে তারা এরই মধ্যে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছেন। ঢাবি ক্যাম্পাস ও আশপাশের এলাকায় যে কোনো বিষয়ে ছায়াতদন্তের সক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। অনেকের ওপরই তীক্ষষ্ট নজর রাখা হচ্ছে। যারা অর্থ সহায়তা দিয়ে পরিস্থিতি ঘোলাটে করতে পারে, তাদের ওপরও নজরদারি করা হচ্ছে।
গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়, সারাদেশে নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে প্রায় প্রতিদিনই সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দল ও তাদের ছাত্র সংগঠনগুলো বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে। শাহবাগ এলাকাকে তারা আন্দোলনের মুখ্য এলাকা হিসেবে বেছে নিয়েছে এবং নারী নির্যাতনবিরোধী আন্দোলনকে সরকারবিরোধী আন্দোলনে পরিণত করার চেষ্টা চালাচ্ছে।
প্রতিবেদনে আশঙ্কা করা হয়েছে, সাধারণ মানুষকে আন্দোলনে সম্পৃক্ত করার ব্যর্থতার বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষক, কর্মকর্তা, শিক্ষার্থীসহ সমাজে প্রতিষ্ঠিত কোনো ব্যক্তি বা বিদেশি নাগরিকের ওপর হামলা চালিয়ে স্বার্থ হাসিলের অপচেষ্টা হতে পারে। এ ক্ষেত্রে সংগঠনেরই কোনো গুরুত্বপূর্ণ নেতানেত্রীর ওপর হামলা চালিয়ে বা প্রাণনাশ করে সরকারবিরোধী আন্দোলনকে গতিশীল করে তোলার এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটানোর ষড়যন্ত্রও হতে পারে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা যে কোনো আন্দোলনের মুক্ত অবারিত এলাকা হিসেবে পরিচিত। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, আইয়ুববিরোধী আন্দোলন, ছয় দফার সংগ্রাম, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, একাত্তরের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ, বিভিন্ন স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনসহ বিভিন্ন সংগ্রামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা সক্রিয় ছিলেন। নব্বইয়ের আন্দোলনে এখানে ডা. মিলন হত্যাকাণ্ডের পর আন্দোলন বিশেষ গতি পায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে উত্তপ্ত করতে পারলে বা এখানে কোনো প্রাণনাশের ঘটনা ঘটলে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আন্দোলনের ঢেউ ছড়িয়ে পড়ে।
গোয়েন্দা প্রতিবেদনমতে, ২০১৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে হত্যাকাণ্ড ঘটানোর বিষয়ে দুই নেতার ফোনালাপ ভাইরাল হয়। সেই কথোপকথনের সূত্র ধরে প্রতিবেদনে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে, মেজর (অব.) সিনহা রাশেদ হত্যা, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ ও সিলেট এমসি কলেজে নারী নির্যাতন, সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে রায়হান হত্যার মতো সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোকে ইস্যু করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আন্দোলনে গতি আনতে হত্যাকাণ্ড ঘটানোর অপচেষ্টা হতে পারে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আন্দোলনকে চাঙ্গা করতে দেশি-বিদেশি গোষ্ঠী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরকারবিরোধী প্রচার চালাচ্ছে। তারা বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে বিকৃত তথ্য উপস্থাপন করছে। এমন প্রেক্ষাপটে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত সহিংস ঘটনার মধ্য দিয়ে ক্যাম্পাসে প্রাণনাশ করে দেশজুড়ে সরকারবিরোধী আন্দোলন গড়ে তোলার চেষ্টা করা হতে পারে।

প্রজন্মনিউজ/শেখ নিপ্পন

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ