প্রার্থীদের কাছ থেকে নেওয়া টাকা কোথায়

প্রকাশিত: ১৯ অক্টোবর, ২০২০ ১২:৫৯:৪৪

প্রার্থীদের কাছ থেকে নেওয়া টাকা কোথায়

প্রজন্মনিউজ ডেস্ক : গত বছর মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত সারা দেশে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট হয়। ওই নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দলীয়ভাবে মনোনয়ন দেওয়া হয়। ভাইস চেয়ারম্যান পদেও দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হবে জানিয়ে আগ্রহীদের কাছে মনোনয়ন ফরম বিক্রি করে আওয়ামী লীগ। ফরমের মূল্য নির্ধারণ করা হয় ৫ হাজার টাকা। সারা দেশে ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপ্রত্যাশী ৩ হাজার ৪৮৫ জন মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন। এ হিসাবে দলীয় তহবিলে জমা পড়ে ১ কোটি ৭৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা। মনোনয়নপ্রত্যাশীদের ছড়াছড়ির কারণে শেষ পর্যন্ত এ পদে দলীয় মনোনয়ন না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী মহল। কিন্তু এরপর দেড় বছর পার হয়ে গেলেও মনোনয়ন ফরম কেনা নেতাদের অর্থ ফেরত দেওয়া হয়নি। ওই টাকা কোথায় জমা আছে, তাও জানেন না তারা। এ বিষয়টি জানেন না ক্ষমতাসীন দলের কেন্দ্রীয় নেতারাও।

এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান গতকাল রবিবার দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘উপজেলা নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে দলীয়ভাবে মনোনয়ন দেওয়া হবে বলে ফরম বিক্রির বিষয়টি আমার জানা নেই। ফরম বিক্রি করা হলেও সেটা ভুল হয়েছে। আমরা সেই ভুল শুধরে নেব।’ ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন ফরম বিক্রির টাকা এখন কোথায় আছে তা-ও জানা নেই বলে জানান তিনি।

আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ এইচএন আশিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন ফরম বিক্রির সুনির্দিষ্ট কোনো হিসাব তার জানা নেই।

ভাইস চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করা অন্তত ৫০ জন নাম প্রকাশ না করার শর্তে দেশ রূপান্তরকে বলেন, মনোনয়ন ফরম বিক্রির টাকা কোথায় আছে তারা তা জানতে চান। বিশাল অঙ্কের এ টাকা কি দলীয় তহবিলে জমা পড়েছে, না কারও পকেটে ঢুকেছে? দলীয় তহবিলে এ টাকা জমা পড়লে কোনো আপত্তি নেই বলেও জানিয়েছেন তারা।

ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন ফরম কেনা আওয়ামী লীগের সিলেট অঞ্চলের এক নেতা বলেন, ‘আমার আগ্রহ হলো টাকাটা কোথায় আছে, সে সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পাওয়া। এর বাইরে এ নিয়ে ভাবছি না। আমার মনে হয়, দলের নীতিনির্ধারণী মহল এ টাকার বিষয়টি ভুলেই গেছেন। সেই সুযোগে কারও পকেটে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তা যেন না হয় সেটাই চাই।’

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, মনোনয়ন ফরম বিক্রির অর্থ নিশ্চয়ই আছে। এ অর্থের ব্যাপারে স্বাভাবিক পরিস্থিতি এলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘দলীয় তহবিলেই এ টাকা জমা হওয়ার নিয়ম। এ টাকার ব্যাপারে স্বচ্ছতা নিশ্চয়ই আছে। যার যার টাকা তাকে ফিরিয়ে দেওয়া হবে এমন একটি আলোচনাও ছিল আগে। বিষয়টি সম্পর্কে আমি আরেকটু ভালো করে জেনে নেব।’ তিনি আরও বলেন, ‘এ তহবিল কোথায় জমা আছে সে সম্পর্কে এই মুহূর্তে পরিষ্কার ধারণা নেই আমার। করোনাকালীন পরিস্থিতিতে হয়তো এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়নি।’

এ অর্থ কোথায় আছে সে ব্যাপারে পরিষ্কার ধারণা নেই বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য কাজী জাফরউল্যাহ। তিনি দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘এ সম্পর্কে আমাদের সবাই মনে হয় ভুলেই গেছে। বিশাল অঙ্কের এ অর্থ কোথায় আছে তা জানার চেষ্টা করব। আমি মনে করি, মনোনয়নপ্রত্যাশী প্রার্থীদের এ টাকা শিগগিরই ফিরিয়ে দেওয়া হবে।’

প্রজন্মনিউজ/শেখ নিপ্পন

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ