দু’দল একই রাজ্যে জিততে পারে

প্রকাশিত: ১৬ অক্টোবর, ২০২০ ০৩:০৭:২৪

দু’দল একই রাজ্যে জিততে পারে

এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অচলাবস্থা তৈরি হতে পারে দোদুল্যমান ইলেক্টোরাল কলেজ ভোটারদের কারণে। দোদুল্যমান ইলেক্টোরাল কলেজ ভোটাররা সবচেয়ে বেশি দ্বিধাবিভক্ত হওয়ায় নির্বাচন নিয়ে অচলাবস্থা তৈরির ঝুঁকি দেখা যাচ্ছে।

একই সঙ্গে বহুল ব্যবহৃত ডাকযোগে দেয়া ভোট নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ করার মধ্য দিয়েও অচলাবস্থার ঝুঁকি তৈরি হবে। রয়টার্স।

নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কিছু বিষয় নিয়ে এবারের নির্বাচনে সংকট দেখা দিতে পারে। সংকটকে কেন্দ্র করে একই রাজ্যে জয়ী হওয়ার দাবি করতে পারে উভয় দল- রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেটিক পার্টি। এ ধরনের পরিস্থিতিকে যুক্তরাষ্ট্রে বলা হয় ‘ডুয়েলিং ইলেক্টরস’।

সুইং স্টেট বা দোদুল্যমান ভোটার অধ্যুষিত রাজ্যগুলোতে দুই মূল প্রার্থী রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেনের মধ্যে একে-অপরের নিঃশ্বাস ফেলার মতো তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার কারণে ডুয়েলিং ইলেক্টরস পরিস্থিতি তৈরি হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের জটিল নির্বাচনী ব্যবস্থায় সাধারণ ভোটারদের ভোটকে বলা হয় পপুলার ভোট। আর পপুলার ভোটের ভিত্তিতে কাকে চূড়ান্তভাবে প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচন করা হবে সেই রায় দেন ইলেক্ট্ররাল কলেজ ভোটাররা।

নিয়ম অনুযায়ী, পপুলার ভোটে জয়ী দলের প্রার্থীকেই রাজ্যের সবগুলো ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট দেয়া হয়। কিন্তু যদি উভয় দলের প্রার্থীই নিজে জয়ী হওয়ার দাবি করেন, সেক্ষেত্রে ইলেক্টোরাল কলেজ ভোটাররাও নিজ দলের পক্ষে অবস্থান নিতে পারেন। এখানেই দেখা দিচ্ছে অচলাবস্থা তৈরির আশঙ্কা।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে হলে মোট ৫৩৮টি ইলেক্টোরাল কলেজ ভোটের মধ্যে ২৭০টি পেতে হয়। ১৪ ডিসেম্বর ইলেক্টোরাল কলেজ ভোটাররা বসবেন তাদের সিদ্ধান্ত দেয়ার জন্য। তারা ভোট দেয়ার পর সেই ভোট কংগ্রেস গণনা করবে ৬ জানুয়ারি।

কংগ্রেসের এই অধিবেশনের সব কর্মকাণ্ড সিনেটের প্রেসিডেন্ট হিসেবে পর্যবেক্ষণ করবেন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স। যেসব রাজ্যে ট্রাম্প ও বাইডেনের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে সেগুলোতে ইলেক্টোরাল ভোটারদের মধ্যে প্রতিযোগিতা তৈরি হবে। এই ক্ষেত্রে ইলেক্টোরাল ভোট কে পাবেন তার সত্যায়ন করবে দুটি পক্ষ।

একটি করবে গভর্নররা। আরেকটি করবে রাজ্যের আইনসভা। এক্ষেত্রে বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিচ্ছে ব্যাটল গ্রাউন্ড রাজ্য মিশিগান, নর্থ ক্যারোলিনা, পেনসিলভানিয়া ও উইসকনসিন অঙ্গরাজ্যে। কারণ এসব রাজ্যের গভর্নররা ডেমোক্রেটিক।

কিন্তু রাজ্য আইনসভাগুলো নিয়ন্ত্রণে রয়েছে রিপাবলিকানদের। এ কারণে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন যে, বিপুল সংখ্যক ডাকযোগে ভোট ও আইনি চ্যালেঞ্জের কারণে গভর্নর ও আইনসভার সত্যায়নে বৈপরীত্য তৈরি হবে এবং নির্বাচনের চূড়ান্ত ফল ঘোষণা করতে লেগে যাবে লম্বা সময়।

ট্রাম্প এরই মধ্যে একাধিকবার বলেছেন নির্বাচনে কারচুপি করা হচ্ছে এবং ডাকযোগে পাওয়া ভোটে নজিরবিহীন অনিয়ম করা হচ্ছে ডেমোক্র্যাটদের পক্ষে।

যদি প্রাথমিক ফলাফলে ট্রাম্প এগিয়ে থাকেন তবে তিনি রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত রাজ্যসভাগুলোকে চাপ দেবেন তার পক্ষে ইলেক্টোরাল কলেজ ভোটারদের রায় দেয়ার জন্য।

তার দাবি হবে প্রাথমিক ফলাফলের ইঙ্গিতই আসল কথা। ডাকযোগে ও দেরিতে আসা ফলাফল ভুয়া। অন্যদিকে ফাইনাল ফলাফলে ডেমোক্র্যাটরা জয়ী হলে ওইসব রাজ্যের গভর্নররা বাইডেনের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ইলেক্টোরাল কলেজ ভোটারদের ভিন্ন রায় দিতে বলতে পারেন।

এক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন ইলেক্টোরাল কলেজ ভোটাররা বসে একটি রায় দিয়ে কংগ্রেসে পাঠাবেন। আবার কংগ্রেসেও মতদ্বৈততা তৈরি হতে পারে। সেখানে আবার রিপাবলিকানদের সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা ও ডেমোক্র্যাটদের প্রতিনিধি পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে।

এ ধরনের অচলাবস্থা তৈরি হলে ইলেক্টোরাল কলেজ ভোটের ব্যাখ্যা চাইতে পারে সুপ্রিমকোর্ট। ২০০০ সালে এ ধরনের অচলাবস্থার ক্ষেত্রে সুপ্রিমকোর্ট জর্জ বুশের পক্ষে রায় দিয়েছিল।

সেটা অবশ্য হয়েছিল ইলেক্টোরাল কলেজ ভোটারদের বৈঠকের আগে ফ্লোরিডার ভোট পুনর্গণনার মাধ্যমে। ১৮৭৬ সালে তিনটি রাজ্যে ইলেক্টোরাল কলেজ ভোটাররা অচলাবস্থা তৈরি করে রেখেছিল।

পরে প্রেসিডেন্টের অভিষেকের মাত্র কয়েকদিন আগে একটি চুক্তির মাধ্যমে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এবার দুই পক্ষের হাড্ডহাড্ডি লড়াই ও মারমুখি অবস্থানের কারণে বড় ধরনের সমস্যা এবং শেষ পর্যন্ত দীর্ঘ মেয়াদের অচলাবস্থা তৈরি হতে পারে।

প্রজন্মনিউজ২৪/সাখাওয়াত
 

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ