বাবরি মসজিদ ধ্বংসের রায়ে ৩২ জনই খালাস

প্রকাশিত: ০১ অক্টোবর, ২০২০ ১০:৩৭:১২

বাবরি মসজিদ ধ্বংসের রায়ে ৩২ জনই খালাস

প্রায় তিন দশক আগে ভারতের বাবরি মসজিদ ধ্বংসের মামলায় বিজেপির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য লালকৃষ্ণ আদভানীসহ ৩২ আসামির সবাইকে বেকসুর খালাস দিয়েছে উত্তরপ্রদেশের একটি আদালত। বুধবার লখনৌয়ের বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ওই ঘটনা 'পরিকল্পিত ছিল না'। অভিযুক্তরা মসজিদ ভাঙায় বাধা দিয়েছিলেন বলেও মন্তব্য করেন বিচারক সুরেন্দ্রকুমার যাদব। সংবাদসূত্র : এনডিটিভি, এবিপি নিউজ, বিবিসি

১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর হিন্দু 'করসেবকরা' অযোধ্যার ৫০০ বছরের পুরনো মসজিদটি ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছিলেন। স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় রায় ঘোষণার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা কিছুটা দেরিতে শুরু হয়। সোয়া ১১টা পর্যন্ত ২৬ জন অভিযুক্ত আদালতে হাজির হন।

করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে বয়স ও স্বাস্থ্যগত কারণে আদালতে সশরীরে হাজিরা দেওয়া থেকে নিষ্কৃতি পান বিজেপির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য লালকৃষ্ণ আদভানী, মুরালি মনোহর যোশী, সাবেক মন্ত্রী উমা ভারতী, কল্যাণ সিং, সতীশ প্রধান এবং রামমন্দির ট্রাস্টের প্রধান নৃত্যগোপাল দাস। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তারা আদালতে হাজিরা দিলেও যোশী যোগ দেননি।

বাবরি মসজিদ ধ্বংসের সময় উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন বিজেপির কল্যাণ সিং। অভিযুক্তরা মন্দির ভাঙার ষড়যন্ত্র, পরিকল্পনা ও উসকানিতে যুক্ত ছিল, এ বিষয়ে যথাযথ প্রমাণ না থাকায় বিচারক সবাইকে খালাস দিতে বাধ্য হন।

বিচারক জানান, মসজিদ ভাঙায় অভিযুক্তদের কোনো ভূমিকা ছিল না। উন্মত্ত লোকজন মসজিদ ভেঙেছে আর অভিযুক্তরা তাদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। অভিযুক্তদের ফাঁসানোর জন্য প্রমাণ বিকৃত করা হয়েছিল, বিচারক এমন মন্তব্যও করেছেন বলেও জানায় দেশটির গণমাধ্যম।

২৩০০ পাতার রায় পড়ে শোনানোর সময় বিচারক বলেন, 'প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মসজিদ ভাঙার ঘটনায় রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আএএসএস) এবং বিশ্ব হিন্দু পরিষদের (ভিএইচপি) কোনো ভূমিকা ছিল না।'

১৯৯০-এর দশকের শুরুর দিকে বিজেপি নেতা আদভানীর ধারাবাহিক রথযাত্রা আয়োজনের এক পর্যায়ে ধর্মীয় উগ্রপন্থিদের হাতে মসজিদ ধ্বংসের এই ঘটনা ঘটেছিল। এই ঘটনার জেরে সংঘটিত সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় ওই সময় ভারতে প্রায় তিন হাজার মানুষ নিহত হয় আর দেশটির রাজনৈতিক ভারসাম্য ওলটপালট হয়ে যায়।

মসজিদ ধ্বংসের সময় আদবানী, যোশী ও ভারতী নিকটবর্তী একটি মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। তদন্তকারী সংস্থাগুলো বলেছে, তারা তাদের বক্তব্যের মাধ্যমে উপস্থিত লোকজনকে প্ররোচিত করেছিলেন।

এ মামলার মোট ৪৯ জন অভিযুক্তের মধ্যে এরই মধ্যে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের অশোক সিংঘল, শিবসেনার বাল ঠাকরে, অযোধ্যার পরমহংস রামচন্দ্র দাসসহ ১৭ জনের মৃতু্য হয়েছে। জীবিত ছিলেন ৩২ জন, তারা সবাই বেকসুর খালাস পেলেন।

মুঘল সম্রাট বাবরের নামে প্রতিষ্ঠিত ১৫ শতকের ওই মসজিদটি সম্রাটের সেনাপতি মীর বাকি নির্মাণ করেছিলেন বলে জনশ্রম্নতি আছে। মসজিদ নির্মাণের স্থানটিকে রামের জন্মভূমি বলে দাবি করে আসছেন অনেকে। একটি পুরানো মন্দির ভেঙে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছিল বলে তাদের অভিযোগ।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারতের ২০ কোটি প্রান্তিক মুসলিম জনগোষ্ঠী এই মামলার রায়ে সন্তুষ্ট নন। উসকানিদাতারাসহ অভিযুক্ত অন্যরা বাবরি মসজিদ ধ্বংস মামলা থেকে খালাস পাওয়ায় মুসলমানদের মাঝে অসন্তোষ তৈরি হতে পারে।

উলেস্নখ্য, গত নভেম্বরে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট এক আদেশে মসজিদের ওই জায়গায় একটি মন্দির নির্মাণ করার অনুমতি দিয়েছে। এছাড়া মসজিদ নির্মাণ করার জন্য শহরের অন্য একটি এলাকায় মুসলিমদের ভূমি দেওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত।

প্রজন্মনিউজ২৪/হাবিব

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



A PHP Error was encountered

Severity: Notice

Message: Undefined index: category

Filename: blog/details.php

Line Number: 417

Backtrace:

File: /home/projonmonews24/public_html/application/views/blog/details.php
Line: 417
Function: _error_handler

File: /home/projonmonews24/public_html/application/views/template.php
Line: 199
Function: view

File: /home/projonmonews24/public_html/application/controllers/Article.php
Line: 87
Function: view

File: /home/projonmonews24/public_html/index.php
Line: 315
Function: require_once

বিভাগের সর্বাধিক পঠিত



ব্রেকিং নিউজ