প্রকাশিত: ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০২:২৪:৩৬
কোভীট-১৯ করোনাভাইরাস প্রায় নয় মাস ধরে সারা বিশ্বব্যাপী একটি ভয়াবহ রুপ নিয়েছে। চীন থেকে আগত এ
ভাইরাসের প্রভাবে প্রায় সকল দেশেই দিতে হয়েছে লক্ষ প্রান, যা এখনও বিরাজমান। বর্তমান সারাবিশ্বে একটি আতংকের
নাম করোনাভাইরাস। বিশ্বের শীত প্রধান ও উন্নত দেশ গুলোতে এর প্রভাব অনেক বেশিই লক্ষ করা যায়। প্রযুক্তি ও
অর্থনীতিতে স্বয়ংসম্পুন্ন দেশেগুলোও এই মহামারির কবলে আরো বেশি নিঃষ্পেষীত।
বিশেষ করে অ্যামেরিকা, যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়া, ভারত, ব্রাজীল, তুরস্ক সহ প্রায় সকল দেশেই এ ভাইরাসের প্রকপ বিদ্যমান।
তারা এই ভাইরাস নিয়ন্ত্রনের জন্য বিভিন্ন ধরনের ভ্যাকসিন আবিস্কার করে এবং সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করে যাচ্ছে।
করোনাভাইরাস কী?
---------
“করোনাভাইরাস” নামটির উৎপত্তি লাতিন শব্দ করোনা থেকে যার অর্থ “মুকুট” বা “হার”। করোনা শব্দটি নিজে
গ্রিক এসেছে যার অর্থ “মালা” বা “হার”।
পরিভাষায়,
করোনাভাইরাস বলতে, ভাইরাসের একটি শ্রেণিকে বোঝায় যেগুলি স্তন্যপায়ী প্রাণী এবং পাখিদেরকে আক্রান্ত করে। মানুষের
মধ্যে করোনাভাইরাস শ্বাসনালীর সংক্রমণ ঘটায়।
আকৃতি,
----
করোনাভাইরাস বাল্বাস পৃষ্ঠের সাথে প্লিওমরফিক গোলাকার কণাসদৃশ। ভাইরাস কণার ব্যাস প্রায় ১২০
ন্যানোমিটার। ইলেক্ট্রন মাইক্রোগ্রাফগুলিতে ভাইরাসের আচ্ছাদনটি ইলেক্ট্রন গাঢ় শাঁসগুলির একটি পৃথক জোড়া হিসাবে
উপস্থিত হয়।
করোনার ইতিহাস,
--------
করোনাভাইরাস ১৯৩০-এর দশকে প্রথম আবিষ্কৃত হয়। প্রথমদিকে মুরগির মধ্যে সংক্রামক ব্রঙ্কাইটিস ভাইরাস হিসেবে এটি
প্রথম দেখা যায়। পরে সাধারণ সর্দি-হাঁচি-কাশিতে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে এরকম দুই ধরনের ভাইরাস পাওয়া যায়।
মানুষের মধ্যে পাওয়া ভাইরাস দুটি ‘মনুষ্য করোনাভাইরাস ২২৯ই’ এবং ‘মনুষ্য করোনাভাইরাস ওসি৪৩’ নামে
নামকরণ করা হয়। তবে অনেকের সন্দেহ যে এই ভাইরাসটি চীন সরকার তার দেশের গরিব জনগনকে শেষ করে দেওয়ার
জন্য নিজেরাই তৈরি করে নিজেরাই ছড়িয়ে ছিলো। এরপর থেকে বিভিন্ন সময় ভাইরাসটির আরো বেশ কিছু প্রজাতি
পাওয়া যায় যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ২০০৩ সালে ‘এসএআরএস-সিওভি’, ২০০৪ সালে ‘এইচসিওভি এনএল৬৩’,
২০০৫ সালে ‘এইচকেইউ১’, ২০১২ সালে ‘এমইআরএস-সিওভি’ এবং সর্বশেষ ২০১৯ সাল চীনে
এসএআরএস-সিওভি-২’ পাওয়া যায়(যা বর্তমানে সাধারণত নোভেল করোনাভাইরাস নামেই পরিচিত) এগুলোর মধ্যে
অধিকাংশ ভাইরাসের ফলে শ্বাসযন্ত্রের (ফুসফুস) গুরুতর সংক্রমণ দেখা দেয়।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব,
-------------
(২০১৯-২০২০)
মূল নিবন্ধসমূহ: ২০১৯ সালের করোনাভাইরাস ঘটিত ব্যাধির প্রাদুর্ভাব। (২০১৯-২০২০) এবং দেশ অনুযায়ী করোনাভাইরাসের
প্রাদুর্ভাব।
২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে করোনাভাইরাসের একটি প্রজাতির সংক্রামণ দেখা দেয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
ভাইরাসটিকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ‘২০১৯-এনসিওভি’ নামকরণ করে। ২০২০ সালের ১৪ই মে পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী
বিশ্বের ২১৩টিরও বেশি দেশ ও অধীনস্থ অঞ্চলে ৪৪ লাখ ৮০ হাজার-এরও বেশি ব্যক্তি করোনাভাইরাস রোগ ২০১৯-এ
আক্রান্ত হয়েছেন বলে সংবাদ প্রতিবেদনে প্রকাশ পেয়েছে। বর্তমানে ৩ লাখের বেশী ব্যক্তির মৃত্যু ঘটেছে এবং ১৬ লাখ ৮৪
হাজারের বেশি রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছে।
বিশ্বে কয়েকটি দেশে আক্রান্তের হার,(২৪ জানু-২১ সেপ্টেম্বর)
------------------------------
দেশ মৃত্যু গড় সুস্থ
যুক্তরাষ্ট্র 199,221 60.9 6,812,075
ব্রাজিল 137,272 65.5 4,558,040
ভারত 88,935 6.6 5,562,663
মেক্সিকো 73,697 58.4 700,580
যুক্তরাজ্য 41,788 62.2 398,625
ইতালি 35,724 58.9 299,506
পেরু 31,369 98.1 768,895
ফ্রান্স 31,338 48.2 458,061
স্পেন 30,663 65.7 671,468
ইরান 24,478 29.9 425,481
কলম্বিয়া 24,397 49.1 770,435
রাশিয়া 19,575 13.4 1,111,157
দক্ষিণ আফ্রিকা 15,992 27.7 661,936
আর্জেন্টিনা 13,482 30.4 640,147
চিলি 12,298 65.7 447,468
ইকুয়েডর 11,095 64.9 126,711
বেলজিয়াম 9,950 86.7 103,392
ইন্দোনেশিয়া 9,837 3.7 252,923
জার্মানি 9,400 11.3 276,719
কানাডা 9,279 25.0 147,583
ইরাক 8,625 22.4 322,856
বলিভিয়া 7,654 67.4 130,986
তুরস্ক 7,574 9.2 304,610
পাকিস্তান 6,424 3.0 306,886
নেদারল্যান্ড 6,282 36.8 96,031
সুইডেন 5,865 58.8 88,237
মিশর 5,787 5.9 102,141
ফিলিপিন্স 5,049 4.7 291,789
বাংলাদেশ 4,979 3.1 350,621
চীন 4,737 0.3 90,389
সৌদি আরব 4,512 13.4
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির প্রাথমিক লক্ষণ,
-----------------------
জ্বর
অবসাদ
শুষ্ক কাশি
বমি হওয়া
শ্বাসকষ্ট
গলা ব্যাথা
অঙ্গ বিকল হওয়া
মাথা ব্যাথা
পেটের সমস্যা
মুখ ও নাকের স্বাধ হারিয়ে যাওয়া
পায়ের পাতায় র্যাস হওয়া
কিছু রোগীর ক্ষেত্রে উপরোক্ত সকল উপসর্গ দেখা গেলেও জ্বর থাকেনা।
বাংলাদেশে করোনার অবস্থা
--------------
২০০তম দিনে আরো ৩৭ জনের মৃত্যু।
দেশে মরণঘাতী করোনাভাইরাসে গত ২৪ ঘণ্টায় আরো ১ হাজার ৬৬৬ জনকে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। এতে
আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ৩ লাখ ৫৩ হাজার ৮৪৪ জন। এ সময় ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে আরো ৩৭ জনের মৃত্যু
হয়েছে। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত ৫ হাজার ৪৪ জনের মৃত্যু হলো।
বুধবার, ২৩/০৯/২০২০ইং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে মোট ১০২টি ল্যাবে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৩ হাজার ৯৭৭টি। আগের
নমুনাসহ পরীক্ষা করা হয়েছে ১৪ হাজার ১৫০টি। এ নিয়ে ২০০তম দিনে এসে এখন পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৮
লাখ ৬২ হাজার ৬৩৭টি।
উক্ত সময়ের মধ্যে আরো ১ হাজার ৬৬৬ জনকে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। এ নিয়ে দেশে আক্রান্তের সংখ্যা
বেড়ে দাঁড়ালো ৩ লাখ ৫৩ হাজার ৮৪৪ জন। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে আরো ৩৭ জনের
মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দেশে ৫ হাজার ৪৪ জনের মৃত্যু হলো।
একই সময়ে দেশে ২ হাজার ১৬৩ জন সুস্থ (হাসপাতাল ও বাসা মিলে) হয়েছেন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ২ লাখ ৬২
হাজার ৯৫৩ জন।
মহামারীর কারণে সৃষ্ট দারিদ্র্যের ফলে শিশু বিবাহের সংখ্যা বাড়ছে,
--------------------------------
২০২০ সালের ৪ জুন শিশু হেল্পলাইন নম্বর ১০৯৮ বেজে উঠল। ফোনের অপর প্রান্তে কুমিল্লা জেলার বাসিন্দা লাবণ্য (তার
প্রকৃত নাম নয়) নামে ১৬ বছরের এক কিশোরী মরিয়া হয়ে হেল্পলাইন কর্মীদের কাছে আসন্ন শিশু বিবাহ থেকে তাকে
উদ্ধার করার অনুরোধ জানাচ্ছিল।
হেল্পলাইনে লাবণ্য যে তথ্য দিয়েছিল সেটা যাচাই করার পরে ১০৯৮ টিম ঘটনাটি সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে সমাজসেবা
কর্মকর্তাকে অবহিত করেছিল। সমাজসেবা কর্মকর্তা ঘটনাটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করবেন এবং তিনি বিবাহ
বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন বলে তাদেরকে জানিয়েছিলেন।
পরবর্তীতে, নির্বাহী কর্মকর্তা, সমাজসেবা কর্মকর্তা এবং স্থানীয় চেয়ারম্যানের সমন্বিত প্রচেষ্টায় শিশু বিবাহের সকল আয়োজন
বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল এবং শিশু বিবাহের খারাপ দিকগুলো সম্পর্কে তারা লাবণ্যের বাবাকে পরামর্শ দিয়েছিলেন।
রিশেষে. লাবণ্যের বাবা এক চুক্তিতে স্বাক্ষর করার মাধ্যমে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে মেয়ের বয়স ১৮ বছর না হওয়া
পর্যন্ত তিনি তার মেয়েকে বিয়ে দিবেন না। তিনি লাবণ্যের শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখবেন বলেও জানিয়েছিলেন। এছাড়াও,
সমাজসেবা কর্মকর্তা লাবণ্যের শিক্ষা কার্যক্রমে যে কোন ধরনের সহযোগিতার প্রতিশ্রুতিও দেন।
আসন্ন শীতকালে পরিস্থিতি কি হতে পারে?
-------------------
৩০ জুলাই ২০২০
উত্তর গোলার্ধের দেশগুলোতে শীত মওসুম শুরু হলে করোনাভাইরাস আর ফ্লু এই দুই সমস্যার মোকাবিলা করতে হবে
আর মাস তিনেকের মধ্যেই শীত আসছে। পৃথিবীর অধিকাংশ দেশেই এসময়টায় ঠান্ডা লাগা বা ফ্লু-র প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়।
এ কারণে আশংকা দেখা দিয়েছে যে ঋতু পরিবর্তনের সময় করোনাভাইরাস সংক্রমণ বেড়ে যাবে এবং বলা হচ্ছে, প্রথম
দফায় সংক্রমণ যত ব্যাপক ছিল - দ্বিতীয় দফায় তা আরো মারাত্মক হবে।
কিন্তু করোনাভাইরাস সংক্রমণ কেমন চেহারা নেবে -তার পূর্বাভাস দেয়া কি এত সহজ-সরল?
মোটেও তা নয়। বরং ব্যাপারটা বেশ জটিল।
শুধু করোনাভাইরাসের প্রকৃতি নয়, অন্য নানা রকম শীতকালীন রোগজীবাণু, মানুষের আচরণ, সরকারী নীতির
সাফল্য-ব্যর্থতা – এরকম অনেক কিছুর ওপর নির্ভর করছে, করোনাভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ আসলেই আসবে
কিনা।
তা ছাড়া বিজ্ঞানে এখন নতুন কিছু গবেষণা চলছে যাতে দেখা যায় যে একটি ভাইরাল সংক্রমণ হয়তো অন্য কোন
ভাইরাসের সংক্রমণকে আটকে দিতে পারে।
তবে করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রে এর কোন প্রভাব পড়বে কিনা তা এখনো অজানা।
করোনাভাইরাস কি শীতের সময় বেশি ছড়াবে?
এর উত্তর এখনও পাওয়া যায় নি। তবে বিজ্ঞানীরা বলেন, এমন হবার সম্ভাবনা আছে।
তবে এটা বলা হচ্ছে অন্য ভাইরাস সম্পর্কে আমরা যা জানি তার ওপর ভিত্তি করে।
করোনাভাইরাস আছে মোট চার রকমের -যা সাধারণ সর্দিজ্বরের লক্ষণ সৃষ্টি করে। প্রতিটিই সহজে ছড়ায় শীতের সময় ।
ইনফ্লুয়েঞ্জা, রাইনোভাইরাস, এবং আরএসভি নামে আরেকটি ভাইরাস – এর সবগুলোরই আচরণ মোটামুটি একই রকম।
শীতের সময় একই সাথে শীতকালীন ইনফ্লুয়েঞ্জা আর করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের আশংকা করছেন অনেকে।
তবে লন্ডন স্কুল অব হাইজিন এ্যান্ড ট্রপিক্যার মেডিসিনের ড. রেচেল লো বলছেন, “এগুলো হয়তো মৌসুমি হতে পারে,
কারণ অন্য কিছু ভাইরাস আছে যেগুলো শীতকালে সংক্রমণ বাড়তে দেখা যায় – কিন্তু আবহাওয়া নাকি মানুষের আচরণ,
কোনটার প্রভাব এখানে বেশি এখনো তা বোঝার ক্ষমতা খুব সীমিত।"
তবে দেখা গেছে, মানবদেহের বাইরের পরিবেশ যখন ঠান্ডা - তখন সব ভাইরাসই অপেক্ষাকৃত ভালোভাবে বেঁচে থাকতে
পারে।
যুক্তরাজ্যের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনাভাইরাসের জন্য বিশেষ করে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বিশেষ অনুকুল বলে দেখা
গেছে।
সূর্যের আলোয় যে অতিবেগুনি রশ্মি থাকে তা ভাইরাসকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে। কিন্তু শীতের সময় অতিবেগুনি রশ্মির
পরিমাণও কম থাকে।
শীতপ্রধান দেশগুলোতে ঠান্ডার সময় লোকে ঘরের ভেতরেই বেশি থাকে। দরজা জানালা থাকে বন্ধ থাকে। বাতাস চলাচল
করে কম। এবং এই পরিবেশই করোনাভাইরাস ছড়ানোর জন্য সহায়ক।
ব্রিটেনের একাডেমি অব মেডিকাল সায়েন্সেস-এর এক পূর্বাভাসমূলক রিপোর্ট বলছে, শীতের সময় ব্রিটেনের পরিস্থিতি সবচেয়ে
বেশি খারাপ হলে তাতে আড়াই লাখেরও বেশি লোক মারা যাবে।
কিছু বিশেষজ্ঞ আশংকা করছেন শীতের সময় ব্রিটেনে আড়াই লাখ পর্যন্ত মানুষ মারা যেতে পারে।
এই রিপোর্টে ধরে নেয়া হয়েছে যে, সে পরিস্থিতিতে ‘আর’ নম্বর হবে ১ দশমিক ৭ অর্থাৎ একজন সংক্রমিত ব্যক্তি আরো
১.৭ জনকে সংক্রমিত করবে। বর্তমানে ব্রিটেনে এই ’আর’ নম্বর ১ এর নিচে। লকডাউনের আগে তা ছিল প্রায় ৩।
ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের অধ্যাপক ওয়েন্ডি বার্কলি বলছেন, এখনো অনেক কিছুই অজানা, তবে লোকে যে
করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ে উদ্বিগ্ন তার সঙ্গত কারণ আছে, এবং ব্রিটেনে একটা দ্বিতীয় ঢেউ আসা খুবই সম্ভব।
এর কারণ হিসেবে তিনি বলছেন, ব্রিটেনে জনসংখ্যা মাত্র ৫ শতাংশ এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছে, ৯৫
শতাংশের ভাইরাস প্রতিরোধের কোন ক্ষমতাই নেই। এখানে জনগোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপক প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্থাৎ হার্ড ইমিউনিটি
অর্জিত হয় নি।
অন্য ভাইরাসগুলো কি সমস্যার কারণ হতে পারে?
------------------------
যেটা বিজ্ঞানীরা আশংকা করছেন তা হলো - করেনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ এবং নিয়মিত শীতকালীন ফ্লু – দুটো যদি
একসঙ্গে হয় তাহলে কি হবে?
এটা ঠিক যে করোনাভাইরাসের কারণে মানুষের আচরণে অনেক পরিবর্তন এসেছে। মানুষ ঘন ঘন হাত ধুচ্ছে, মুখে মাস্ক
পরছে, সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করছে, বাড়িতে বসে কাজ করছে।
তাই এমন হতে পারে যে আসন্ন শীতে নিয়মিত ফ্লু ভাইরাসও হয়তো বেশি ছড়াতে পারবে না।
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এখন গবেষণা চলছে, দ্রুত করোনাভাইরাসের একটি টিকা তৈরির জন্য।
তার পরেও ড. লো বলছেন, আসন্ন শীতকালে করোনাভাইরাসের একটা দ্বিতীয় ঢেউএর জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে,
আত্মসন্তুষ্টিতে ভুগলে চলবে না।
একটি ভাইরাস কি আরেকটিকে ঠেকিয়ে দিতে পারে?
-------------------------
এটা হচ্ছে বৈজ্ঞানিকদের জন্য সবচেয়ে বড় কৌতুহলের ব্যাপার যে সার্স-কোভ-টু (করোনাভাইরাসের পোশাকি নাম)
ভাইরাসটি অন্য ভাইরাসের সাথে কি আচরণ করে।
শ্বাসতন্ত্রের রোগ সৃষ্টিকারী সব ভাইরাসই মানবদেহের একটি জায়গাতেই সংক্রমণ ঘটায়, আর তা হলো, মানুষের নাক, গলা
ও ফুসফুসের ভেতরের কোষগুলো।
একারণেই ভাইরাসগুলোর মধ্যে জায়গা দখলের লড়াই শুরু হতে পারে।
বেশ কিছু জরিপে দেখা গেছে যে এক ধরণের ভাইরাস সংক্রমণ অন্য আরেকটি ভাইরাসকে ঠেলে সরিয়ে দিতে পারে।
বিজ্ঞানীরা ধারণা করেন, ইউরোপে রাইনোভাইরাস সংক্রমণের কারণেই ২০০৯ সালে সোয়াইন ফ্লু ভাইরাসের সংক্রমণ
বিলম্বিত হয়েছিল।
শীতের সময় মানুষে দরজা জানারা বন্ধ করে ঘরে থাকে, আর এ পরিবেশেই করোনাভাইরাস সংক্রমণ ত্বরান্বিত হতে পারে
শীতের সময় মানুষে দরজা জানারা বন্ধ করে ঘরে থাকে, আর এ পরিবেশেই করোনাভাইরাস সংক্রমণ ত্বরান্বিত হতে পারে
গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরাস গবেষণা কেন্দ্রের ড. পাবলো মারসিয়া বলছেন, একটি ভাইরাসের আক্রমণের ফলে মানবদেহে
যে রোগ-প্রতিরোধী প্রতিক্রিয়া হয় – তা অন্য কিছু ভাইরাসকে অন্তত খানিকটা সময়ের জন্য ঠেকিয়ে রাখতে পারে।
তবে অন্য কয়েকটি জরিপে আবার দেখা গেছে যে কিছু কিছু ভাইরাস বেশ ‘মিলেমিশে’ থাকতে পারে এবং পাশাপাশি
বিস্তার ঘটাতে পারে।
প্রশ্ন হলো: করোনাভাইরাস বা সার্স-কোভ-টুর বেলায় কী ঘটবে?
ড. মারসিয়া বলছেন, আমাদের উপাত্তে দেখা যায় যে মিশ্র সংক্রমণের ক্ষেত্রে ইনফ্লুয়েঞ্জা ছড়ানোর দৃষ্টান্ত খুবই বিরল।
“কাজেই আমার মনে হয় – একই সাথে সার্স-কোভ-টু এবং ইনফ্লুয়েঞ্জা ছড়াচ্ছে এমনটা হয়তো আমরা খুব বেশি দেখতে
পাবো না।“
একসঙ্গে দুটি ভাইরাসেই সংক্রমিত হয়েছেন এমন লোক পাওয়া গেছে খুবই কম। তবে যখন এটা ঘটেছে – তখন দেখা
গেছে উপসর্গ ছিল অনেক বেশি গুরুতর।
তবে ড. মারসিয়া বলছেন, অন্য কিছু করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রে অবশ্য দেখা গেছে যে তারা আরএসভি, এডেনোভাইরাস
এবং কিছু প্যারা-ইনফ্লুয়েঞ্জার সাথে একই সময়ে সংক্রমণ ঘটাচ্ছে।
তিনি বলছেন, ”আমি বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগে আছি।“
বিকল্প কী?
-----
অধ্যাপক উলহাউজ বলেন, তৃতীয় বিষয়টি হচ্ছে আমাদের আচার-আচরণে স্থায়ী পরিবর্তন নিয়ে আসা যার ফলে সংক্রমণের
মাত্রা বেশি না হয়।
বর্তমানে যেসব পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তার মধ্যে কিছু বিষয় রয়েছে। যেমন: কেউ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে তাকে
বিচ্ছিন্ন করে রাখা কিংবা পরীক্ষা-নিরীক্ষার বিষয়টি জোরদার করা।
তিনি বলেন, কোভিড-১৯ এর ঔষধ আবিষ্কার করা সম্ভব হলে সেটি অন্য কৌশলগুলো বাস্তবায়নের জন্যও সাহায্য করবে।
মানুষের মধ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের লক্ষণ দেখা দেয়ার সময় ঔষধ প্রয়োগ করলে তাহলে সেটি অন্যদের মাঝে ছড়িয়ে
যাবার বিষয়টি বন্ধ করতে পারে।
অথবা হাসপাতালে চিকিৎসা দেবার মাধ্যমে এই রোগের মাত্রা কমিয়ে আনা যাতে আইসিইউ বা নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের
উপর চাপ কমে। এটি করা সম্ভব হলে সবকিছু বন্ধ করে দেয়া বা লকডাউনের আগে দেশগুলো বেশি রোগী সামাল দিতে
পারবে।
ব্রিটেনের চিকিৎসা বিষয়ক প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ক্রিস হুইটির কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল যে বর্তমান পরিস্থিতি তেকে
বের হয়ে আসার উপায় কী?
তিনি বলেন, " টিকা দেয়াটাই হচ্ছে দীর্ঘ মেয়াদে সমাধান। আমরা আশা করছি এটা যত দ্রুত সম্ভব হবে।"
এছাড়া বিজ্ঞান এর একটা সমাধান খুঁজে বের করবে বলে তিনি আশা করেন।
প্রজন্মনিউজ২৪/হাবিব
অনুমতি ব্যতীত টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের অভিযোগে বশেমুরবিপ্রবি প্রকল্প পরিচালক সাময়িক বরখাস্ত
গুচ্ছ গ্রামের এক পুকুরে ধরা পড়ল ১০০ ইলিশ
সিলেটে পুলিশের অভিযানে ৫ হাজার পিস ইয়াবাসহ আটক ২
ঢাবির ২৩-২৪ সেশনে ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ
গার্ডিয়ান পাবলিকেশন্সের কর্ণধার নূর মোহাম্মদ আবু তাহের গ্রেপ্তার
পেট থেকে জীবন্ত মাছ বের করার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করলেন সেই ডাক্তার