বিপন্ন বুনো রঙ্গন

প্রকাশিত: ২২ অগাস্ট, ২০২০ ০২:৪৬:২৮

বিপন্ন বুনো রঙ্গন

চিরসবুজ গুল্মশ্রেণির বুনো রঙ্গন জন্মায় প্রাকৃতিকভাবেই । গাজীপুরের হাতিয়াবো এলাকায় অবস্থিত আরণ্যকে বেড়াতে গিয়েছি অসংখ্যবার। এই বাড়ি আমার দেখা বাগানবাড়িগুলোর মধ্যে অন্যতম। বাড়িটি আসলে এমনভাবে তৈরি যে, সেটি বাড়ি নয়, বাগানও নয়, নিরেট বন বলাই উত্তম। কারণ, আরণ্যক নামক এই বাড়ির স্বত্বাধিকারী প্রকৃতিপ্রেমী সোহেল আহমেদ বাড়িটির চারপাশে কোনো সীমানাপ্রাচীর তৈরি করেননি।

কেন এই ব্যবস্থা? তিনি আসলে শালবনের সবটুকু স্বাদই পেতে চান। ভালোলাগার আরেকটি কারণ নির্জনতা। আরণ্যকের আশপাশে কোনো লোকালয় নেই। তাই আমরা যখন-তখন আরণ্যকে গিয়ে শালবনে ঢুকে পড়ি। অবাক বিস্ময়ে প্রত্যক্ষ করি বনের বহুবিধ পরিবর্তন। প্রায় ৫০০ প্রজাতির গাছপালা লতাগুল্মে সমৃদ্ধ শালবন আমাদের গুরুত্বপূর্ণ একটি ইকোসিস্টেমও বটে।

এখানে প্রায় সপ্তাহান্তেই আমাদের জন্য অপেক্ষা করে নতুন কোনো ফুল, ফল বা পাতার পরিবর্তন। বসন্তের প্রথমভাগে বনের ভেতর পায়ে হাঁটা পথের ধারে বেশ কয়েকটি ছোট গুল্ম দেখেছিলাম। নিতান্তই অবহেলা অনাদরে বেঁচে আছে। কোনো কোনোটি পায়ের নিচে পড়ে মৃতপ্রায়। ডালপালায় ফুলের রেশমাত্র নেই। কিন্তু বসন্তের শেষ দিকে বনে ঢুকেই থমকে দাঁড়াতে হলো!

ছোট ছোট গাছগুলো পুষ্প-প্লাবনে ভাসছে। আমাদের দলে ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী শিক্ষার্থী শাহ্‌ খান। প্রকৃতি-ভ্রমণে ক্লান্তিহীন তিনি। তার আরণ্যকের মুগ্ধতার সঙ্গে যুক্ত হলো এই বুনোফুলের প্রাচুর্য ও সুবাস। ফুল ও পাতার গড়ন অনেকটা রঙ্গনের মতোই। কয়েকদিন পর মিরপুর জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানেও ফুলভর্তি কয়েকটি গাছ দেখি। প্রথমে মনে হয়েছিল আবাদিত রঙ্গন।

এটি আসলে আমাদের প্রকৃতিতে প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো বুনো রঙ্গন (Ixora cuneifolia)। শনাক্ত করতে গিয়ে প্রথমে যা ভেবেছিলাম তার সঙ্গে মিলে গেল। আমার বিস্ময়ের ঘোর আর কাটে না! এতদিন দেখেছি আমাদের চারপাশের সব রঙ্গনই আবাদিত। দেশে বুনো রঙ্গন থাকতে পারে, কখনও ভাবিনি। আশার কথা হলো, শুধু এটিই নয়, দেশে আরও পাঁচ-ছয় প্রজাতির বুনো রঙ্গন দেখা যায়। আলোচ্য রঙ্গন কোথাও কোথাও বেত্তফুল বা কেসুয়াগাছ
নামেও পরিচিত। চিরসবুজ গুল্মশ্রেণির ছোট গাছ। পত্র উপপত্রযুক্ত, উপপত্র সূত্রাকার, পত্রবৃন্ত ১০ মিমি পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। পত্রফলক আয়তাকার। পাতা ১৫ থেকে ২২ সেমি লম্বা, ডিম্বাকৃতির। মঞ্জরিদণ্ড খাটো, মঞ্জরিপত্র বল্লমাকার। ফুলের রঙ সাদা, ৩ সেমি লম্বা। বৃতি ও পাপড়ি মসৃণ, নল সরু, খণ্ডক, আয়তাকার। পরাগধানী বহির্মুখী। ফল মটর আকৃতির ও লাল।

ফুল ও ফলের মৌসুম মার্চ থেকে জুন। এরা সিলেট, চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলায় প্রাকৃতিকভাবেই জন্মে। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের তথ্যমতে, বর্তমানে গাছটি বিপন্ন।

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



A PHP Error was encountered

Severity: Notice

Message: Undefined index: category

Filename: blog/details.php

Line Number: 417

Backtrace:

File: /home/projonmonews24/public_html/application/views/blog/details.php
Line: 417
Function: _error_handler

File: /home/projonmonews24/public_html/application/views/template.php
Line: 199
Function: view

File: /home/projonmonews24/public_html/application/controllers/Article.php
Line: 87
Function: view

File: /home/projonmonews24/public_html/index.php
Line: 315
Function: require_once

বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ