নাট্যকার সেলিম আল দীনের জন্মদিন আজ

প্রকাশিত: ১৮ অগাস্ট, ২০২০ ১০:১৮:০৩

নাট্যকার সেলিম আল দীনের জন্মদিন আজ

 

প্রখ্যাত নাট্যব্যক্তিত্ব ড.সেলিম আল দীনের জন্মদিন আজ। ফেনী জেলার সোনাগাজীর সেনেরখিল গ্রামে ১৯৪৯ সালের ১৮ আগস্ট তিনি জন্মগ্রহণ করেন। জনপ্রিয় এই নাট্যব্যক্তিত্ব বেঁচে থাকলে আজ ৭২ বছরে পা রাখতেন।

ঔপনিবেশিক সাহিত্য ধারার বিপরীতে দাঁড়িয়ে বাংলা নাটককে আবহমান বাংলার গতিধারায় ফিরিয়ে এনেছিলেন নাট্যাচার্য সেলিম আল দীন। বাংলা নাটকে বিষয়, আঙ্গিক আর ভাষা নিয়ে গবেষণা ও নাটকে তার প্রতিফলন তুলে ধরেন তিনি। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বাংলা নাটকের যে আন্দোলন, তার পেছনেও রয়েছে সেলিম আল দীনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। তিনি প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যের শেকড়ের সন্ধানে মগ্ন ছিলেন।

ফিরোজা খাতুন ও মফিজউদ্দিন আহমেদ দম্পতির তৃতীয় সন্তান তিনি। ফেনীতে জন্ম হলেও বাবার চাকরির সূত্রে ফেনী, চট্টগ্রাম, সিলেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও রংপুরের বিভিন্ন স্থানে তার শৈশব ও কৈশোর কেটেছে। ১৯৯৫ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যে নাটক নিয়ে তিনি পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন তিনি।

পরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন সেলিম আল দীন। ওই বিভাগ থেকেই তার সম্পাদনায় প্রকাশিত হতো নাটক বিষয়ক পত্রিকা ‘থিয়েটার স্টাডিজ’। নাট্য চর্চার জন্য ঢাকা থিয়েটার প্রতিষ্ঠাতেও ভূমিকা ছিল তার। পরে সারাদেশে নাট্য আন্দোলনকে ছড়িয়ে দিতে ১৯৮১-৮২ সালে আরেক নাট্যযোদ্ধা নাসিরউদ্দীন ইউসুফের সঙ্গে গড়ে তোলেন বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটার।

নাটক রচনার পাশাপাশি নাটক নিয়ে তিনি গবেষণা চালিয়ে গেছেন আজীবন। বাংলা ভাষার একমাত্র নাট্যবিষয়ক কোষগ্রন্থ ‘বাংলা নাট্যকোষ’ সংগ্রহ, সংকলন, প্রণয়ন ও সম্পাদনা করেছেন তিনি নিজেই। তার রচিত ‘হরগজ’ নাটকটি সুয়েডীয় ভাষায় অনূদিত হয় এবং এ নাটকটি ভারতের রঙ্গকর্মী নাট্যদল হিন্দি ভাষায় মঞ্চায়ন করেছে। আদিবাসী জনগোষ্ঠীর জীবনাচরণ কেন্দ্রিক এথনিক থিয়েটারেরও উদ্ভাবনকারী তিনিই।

সেলিম আল দীনের লেখা নাটকের মধ্যে ‘জন্ডিস ও বিবিধ বেলুন’, ‘মুনতাসির ফ্যান্টাসি’, ‘শকুন্তলা’, ‘কীত্তনখোলা’, ‘কেরামতমঙ্গল’, ‘যৈবতী কন্যার মন’, ‘চাকা’, ‘হরগজ’, ‘প্রাচ্য’, ‘হাতহদাই’, ‘নিমজ্জন’, ‘ধাবমান’, ‘পুত্র’, ‘বনপাংশুল’ উল্লেখযোগ্য। ময়মনসিংহ গীতিকা অবলম্বনে তার গবেষণাধর্মী নির্দেশনা ‘মহুয়া’ ও ‘দেওয়ানা মদিনা’। তার রচিত ‘চাকা’ ও ‘কীত্তনখোলা’ অবলম্বনে চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে।

একুশে পদক, বাংলা একাডেমি ও জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কার প্রাপ্ত ড. সেলিম আল দীন রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ২০০৮ সালের ১৪ জানুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন । জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কেন্দ্রীয় মসজিদের কাছে তাকে সমাহিত করা হয়।

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন