মিনিটেই শেষ ট্রেনের টিকিট

প্রকাশিত: ২৫ জুলাই, ২০২০ ০৬:২২:৫৩

মিনিটেই শেষ ট্রেনের টিকিট

সকাল ৬টায় অ্যাপে মিলবে টিকিট। টিকিটযুদ্ধে নিজের টিকিট বাগিয়ে নিতে ভোরে উঠেই মোবাইলের রেলসেবা অ্যাপ ও ল্যাপটপে ওয়েবপেজ খুলে প্রস্তুত মাসুদ রানা। কিন্তু ৬টা বাজতেই অ্যাপ আর কাজ করছিল না। ল্যাপটপেও শুধু লোডিং দেখায়। এভাবেই মিনিটের কাঁটা না শেষ হতেই স্ক্রিনে ভেসে ওঠে ‘আপনার কাঙ্ক্ষিত আসন নেই’ (রিকোয়েস্টেড সিট নট অ্যাভেইলেবল)। অর্থাৎ টিকিট শেষ।

লালমনি এক্সপ্রেসের টিকিটপ্রত্যাশী মাসুদ রানা বলেন, রেলের কাউন্টারে অপেক্ষা করলেও বোঝা যেত কাঙ্ক্ষিত দিনের টিকিট পাওয়া সম্ভব কিনা। কিন্তু এখন সব টিকিট অনলাইনে দিলেও টিকিট প্রত্যাশা করাটা ভাগ্যের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ সমস্যা আরও বেড়েছে ঈদে ট্রেনের সংখ্যা না বাড়ানোয়।

রেলওয়ে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত কোরবানির ঈদেও টিকিট কাটার চিত্র ছিল ভিন্ন। কমলাপুর রেলস্টেশনে ছিল উপচেপড়া ভিড়। টিকিটপ্রত্যাশীদের অনেকে রাতেই রেলস্টেশনে লাইন ধরে দাঁড়াতেন। কিন্তু করোনায় বদলে গেছে অনেক কিছুই। করোনাকালে এবারের ঈদে অনেক রুটের ট্রেন বন্ধ। ঢাকা থেকে মাত্র ১৭টি রুটে চলছে ট্রেন। বাকি সবগুলোই বন্ধ। যে কারণে রেলের টিকিটপ্রত্যাশীদের বাড়তি চাপ।

রেল মন্ত্রণালয়ে অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবির মিলন বলেন, ট্রেনে এক ডেস্টিনেশনে, একটি ক্লাসের সব টিকিট বিক্রি হতে এক থেকে দুই সেকেন্ড লাগে। মনে করুন, ২৭ তারিখ ঢাকা-চট্টগ্রামে সুবর্ণের এসি স্নিগ্ধা সিট আছে ৫০০। এই ৫০০ টিকিট শেষ হতে মাত্র এক সেকেন্ড সময় লাগবে। ২য় সেকেন্ডে আর টিকিট পাবেন না। এবার বুঝুন, সিট কম, চাপ বেশি। কয় সেকেন্ড লাগবে সব টিকিট শেষ হতে। সো, কাল সকাল ৬টা থেকে আসল যুদ্ধ শুরু। নিশ্চিত থাকুন, রেল বা সিএনএসবিডি থেকে কোনো সমস্যা বা ম্যানুপুলেশনের সুযোগ নেই। যদি কোনো গেটওয়ের সমস্যা না হয়। ঈদে একটি ট্রেনের টিকিট শেষ হতে পাঁচ সেকেন্ড লাগার কথা নয়।’

ঢাকায় রেলসেবা অ্যাপের জরুরি নম্বরে যোগাযোগ করা হলে টেকনিক্যাল সাপোর্ট শাখার বরাতে জানানো হয়, টিকিট যতক্ষণ অ্যাভেইলেবল ততক্ষণ মিলছে। তবে সমস্যা হচ্ছে ট্রেনের সংখ্যা কম। যে রুটে ট্রেনের সংখ্যা ছিল ৫টা সেখানে ট্রেন এখন একটা। করোনার সুরক্ষানীতির কারণে সিটও হয়ে গেছে অর্ধেক। একটা ট্রেনে সিট সে হিসেবে মাত্র ৩০০।

টেকনিক্যাল সাপোর্ট শাখা আরও জানায়, একটি টিকিটের বিপরীতে ৩৮০ জন একসঙ্গে হিট করেছে সাইটে। অ্যাপে এ সংখ্যা আরও বেশি। যে কারণে অনেক ক্ষেত্রেই বিকল হয়ে পড়ছে রেলসেবার অ্যাপ। এ সমস্যা ঈদে বাড়টি টিকিটের চাপের কারণে হচ্ছে। বাড়তি টিকিটের চাপ থাকলেও ট্রেনের শিডিউল কম।

উল্লেখ্য, করোনাভাইরাস সংক্রমণরোধে ঘোষিত সাধারণ ছুটি শেষে সরকারি নির্দেশে গত ৩১ মে থেকে সীমিত আকারে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল শুরু হয়। বর্তমানে বিভিন্ন রুটে ১৭টি যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করছে। সাধারণ ছুটি থাকাকালীন মালবাহী ট্রেন চলাচল অব্যাহত ছিল।

বাংলাদেশ রেলওয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আগামী ১ আগস্ট ঈদুল আজহা উপলক্ষে বর্তমানে চলাচলকারী আন্তঃনগর ট্রেনসমূহ পরিচালনা অব্যাহত থাকবে। ঈদের দিন এবং ঈদের পরদিন সব আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকবে। ঈদুল আজহা উপলক্ষে আগামী ৩১ জুলাই থেকে ২ আগস্ট পর্যন্ত সব ধরনের মালবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকবে।

প্রজন্মনিউজ২৪/ফরিদ

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ