পানিবন্দী মানুষের মাঝে বাড়ছে পানিবাহিত রোগ, খাদ্যে সংকট

প্রকাশিত: ২৫ জুলাই, ২০২০ ০১:২৭:১৬ || পরিবর্তিত: ২৫ জুলাই, ২০২০ ০১:২৭:১৬

পানিবন্দী মানুষের মাঝে বাড়ছে পানিবাহিত রোগ, খাদ্যে সংকট

নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় দেশের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। এতে করে খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও পয়ঃনিষ্কাশনসহ পানিবন্দী অন্তত ১০ লাখ মানুষ রয়েছেন নানা সংকটে। তীব্র হয়েছে নদী ভাঙন, বাড়ছে পানিবাহিত রোগ-বালাই।

সরেজিমন ঘুরে দেখা যায়, টানা বৃষ্টি আর উজানের ঢলে উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামে আবারও বেড়েছে নদ-নদীর পানি। বন্যায় ৫০ হাজার ঘরবাড়ি ও প্রায় ৪ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। জেলায় ৩৭ কিলোমিটার সড়ক ও সাড়ে ৩১ কিলোমিটার বাধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নদী ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে ৫টি প্রাথমিকসহ ১৩৯টি বিদ্যালয়। দুর্গত এলাকায় বিশুদ্ধ পানি, শুকনা খাবার ও গো-খাদ্যের সংকট এখন চরমে।
জামালপুরে যমুনার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেকে গবাদি পষু রাখার জায়গা পায়নি। সকল উচু জায়গায় পানিতে তলিয়ে গেছ। ঘরের মধ্যে খাট উচু করে অনেকে ছাগল রেখেছে। দেখা দিয়েছে চরম খাদ্য সংকট।বিভিন্ন ত্রান সামগ্রী বিতরণ করলেও জেলার পশ্চিম ইসলামপুরের অনেক পরিবার ত্রাণ পায়নি।

পার্শ্ববর্তী লালমনিরহাটে তিস্তার পানি কিছুটা কমলেও ধরলার পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। প্রাণে বাঁচতে বন্যা দুর্গত অনেকেই বাড়িঘর ছেড়ে রাস্তা ও বাধের উপর আশ্রয় নিয়েছে। খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষের মাঝে চরম হাহাকার দেখা দিয়েছে।

রাজশাহী অঞ্চলের মধ্যে সিরাজগঞ্জে বন্যার সবচেয়ে নাজুক অবস্থা। যমুনার পানি বাড়তে থাকায় জেলায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। জেলা সদর, কাজিপুর, বেলকুচি, চৌহালী, শাহজাদপুর ও উল্লাপাড়ার প্রায় ৩ লাখ ৪০ হাজার মানুষ পানিবন্দী। খাবার, বিশুদ্ধ পানিসহ নানা সংকটে দুর্গতরা।

গাইবান্ধায় তিস্তা, যমুনা, ব্রহ্মপুত্র, ঘাঘট ও কাটাখালী নদীর পানি প্রতিদিনই বাড়ছে। প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। এরই মধ্যে ১৬৩টি আশ্রয় কেন্দ্রের কয়েকটি প্লাবিত হয়েছে। বিপাকে পড়েছে আশ্রিতরা।

নতুন করে কোনো এলাকা প্লাবিত না হলেও ঢাকার ফরিদপুরের সদরপুর, চরভদ্রাসন ও সদর উপজেলার শতাধিক গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী। এসব এলাকায় দেখা দিয়েছে পানিবাহিত রোগ-বালাই।

শরীয়তপুরের বিভিন্ন গ্রাম ছাপিয়ে পদ্মার পানি পৌর এলাকায়ও প্রবেশ করেছে। বাসা-বাড়ি ও রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় বিপাকে ভানবাসিরা।

এদিকে, যমুনার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় টাঙ্গাইলের দশ উপজেলা এখন বন্যা কবলিত। দেলদুয়ার-লাউহাটি ও ঘিওর সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় বন্ধ রয়েছে যান চলাচল।

মানিকগঞ্জে যমুনায় সামান্য কমলেও বেড়েছে কালীগঙ্গা, ধলেশ্বরী ও ইছামতি নদীর পানি। এক সপ্তাহ ধরে পানিবন্দী হরিরামপুর, দৌলতপুর, শিবালয়, ঘিওর ও সদর উপজেলার কয়েক হাজার মানুষ।

পদ্মা-যমুনা ও বড়ালসহ পাবনার বিভিন্ন নদনদীর পানি বেড়েছে। বেড়া, সুজানগর ও ভাঙ্গুড়ার লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী। সুজানগর ও বেড়ায় ভাঙন তীব্র হওয়ায় জিও ব্যাগ ফেলে প্রতিরোধের চেষ্টা চলছে।

এদিকে, মধুমতির ভাঙনে দিশেহারা নড়াইলের লোহাগড়ার চারটি গ্রামের বাসিন্দারা। ভাঙন থেকে চরসুচাইল প্রাথমিক বিদ্যালয়টি রক্ষা করার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

অন্যদিকে, সিলেট ও সুনামগঞ্জে বন্যার পানি কমতে শুরু করলেও কানাইঘাটে সুরমা এবং ফেঞ্চুগঞ্জে কুশিয়ারার পানি এখনও বিপদসীমার উপরে।

তিন সপ্তাহের মধ্যেও বাড়িঘর থেকে পানি সরে না যাওয়ায় দুর্ভোগ বেড়েছে সুনামগঞ্জের দুর্গতদের।
প্রজন্মনিউজ২৪/জহুরুল হক

 

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ