সুন্দরগঞ্জে বাল্য বিয়ের দেয়ার অভিযোগ

প্রকাশিত: ২৫ জুলাই, ২০২০ ১১:৪৭:২৩

সুন্দরগঞ্জে বাল্য বিয়ের দেয়ার অভিযোগ

মোঃ সাগর : গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে  এক কিশোরের সঙ্গে  এক কিশোরীর জোরপূর্বক বিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য সামছুল হকের বিরুদ্ধে। বাল্যবিয়ের শিকার ওই দুই কিশোর-কিশোরী সম্পর্কে মামা-ভাগ্নি হয়।

জানা যায়,  গত কয়েক দিন আগে কিশোর শামীম (১২)`র সঙ্গে একই গ্রামের কিশোরী হাসিনা আক্তারের(১৪) অবৈধ সম্পর্কের অভিযোগ তোলে হাসিনার পরিবার। আর সেই অভিযোগে সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য সামছুল হকের নির্দেশে দেশীয় অস্ত্র হাতে কিশোর শামীমকে তুলে আনেন কিশোরীর পরিবারের লোকজন। এসময় কিশোরের বাবা বাধা দিলে তাকে মারধর করে এবং ছেলে বিয়েতে রাজি না হওয়ায় তাকেও মারধর করে মেয়ের পরিবার।

পরবর্তীতে ওই রাতেই ইউপি সদস্যের উপস্থিতিতে এ বাল্যবিয়ে পড়ান সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের কাজী আব্দুল হাই এবং বিয়ে শেষে মেয়েকে ছেলের বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়ে এ ব্যাপারে বেশি বাড়াবাড়ি না করতে শাসানো হয় ছেলের পরিবারকে।


ভুক্তভোগী পরিবার জানায়, সপ্তাহখানেক  আগে কোনো ধরনের ঘটনা ছাড়াই হঠাৎ করে কিশোর-কিশোরীর অবৈধ সম্পর্কের কুৎসা রটানো হয়।  এমনকি গত রবিবার রাতে মেয়ের ভাই সালাম ও তার এক মামাসহ কয়েকজন লোক বাড়িতে এসে আমার ছেলেকে তুলে নিয়ে যায় এবং সম্পর্কে মামা-ভাগ্নি হলেও তাদের জোর করে বিয়ে দেন মেম্বার ও মেয়ের পরিবার।

এ বিষয়ে ছেলের বাবা আব্দুল কাদের বলেন, মেয়েটির মা আমার ভাগ্নি হয়, সেই সম্পর্কে সে আমার নাতনি। আমার ছেলের ও মেয়ের মামা-ভাগ্নির সম্পর্ক ছাড়া আর কিছুই ছিল না। কিন্তু মিথ্যা অপবাদ দিয়ে মেম্বারের হুকুমে আমার ছেলেকে তুলে নিয়ে গিয়ে জোর করে বিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর কাজী আমাকে বলেন যে, উনি নাকি সাত-আট বছরের ছেলে-মেয়েদের বিয়ে দিতে পারেন।

কিশোর শামীম জানান, আমি কিছুই জানি না। হঠাৎ করে তারা এসে আমার গলায় বঁটি ধরে তুলে নিয়ে যায়। আর মারপিট করে বিয়েতে রাজি করায়।

এ ব্যাপারে তারাপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য সামছুল হক সব অভিযোগ অস্বীকার করে জানান,তিনি কাউকে তুলে আনতে বলেননি এবং ছেলে ও মেয়ের পরিবারের সঙ্গে সমঝোতা করেই এ বিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাল্যবিয়ে কেন দিলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি তো আর কাগজ দেখিনি তাদের বয়স হয়েছে কী না।

তারাপুর ইউনিয়নের কাজী আব্দুল হাই জানান, তার  কাছে কাগজ আছে, তারা প্রাপ্তবয়স্ক। তবে  কাগজ দেখতে চাইলে তিনি তা দেখাতে রাজি হননি।

কিশোর শামীম(১২) তারাপুর ইউনিয়নের লাটশালা গ্রামের আব্দুল কাদেরের ছেলে এবং কিশোরী হাসিনা(১৪) একই গ্রামের কালু মণ্ডলের মেয়ে

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী লুতফুল হাসান বলেন, বাল্যবিয়ে দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এ বিষয়ে আমি শুনেছি। বিষয়টি তদন্ত করে কাজীসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রজন্মনিউজ২৪/জহুরুল হক

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ