ক্রেস্টের এমডি রিমান্ডে, স্ত্রী কারাগারে


 

গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণা করে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ক্রেস্ট সিকিউরিটিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. শহিদুল্লাহর একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। অন্যদিকে তার স্ত্রী (পরিচালক) নিপা সুলতানাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার (৭ জুলাই) তাদের ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে পুলিশ। এ সময় পল্টন থানার প্রতারণার অভিযোগে করা মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য শহিদুল্লাহর ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম ধীমান চন্দ্র মন্ডল একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। অন্যদিকে শহিদুল্লাহর স্ত্রী নিপাকে মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। আবেদনের প্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর হাকিম ধীমান চন্দ্র মন্ডল তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এর আগে সোমবার (৬ জুলাই) দুপুরে লক্ষ্মীপুর-নোয়াখালী সীমান্ত এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে ডিবির রমনা বিভাগ। এরপর পল্টন থানায় তাদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করা হয়।

ডিবির রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) এইচ এম আজিমুল হক বলেন, শত শত গ্রাহকের টাকা আত্মসাৎ করে ক্রেস্ট সিকিউরিটিজ লিমিটেডের মালিক মো. শহিদুউল্লাহ সস্ত্রীক আত্মগোপনে যান। প্রতারণার শিকার ব্যক্তিদের অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।

এর আগে গত ২৩ জুন বিনিয়োগকারীদের টাকা আত্মসাৎ করে গাঢাকা দেয় শেয়ার ও ইউনিট বেচাকেনার মধ্যস্থতাকারী ক্রেস্ট সিকিউরিটিজের মালিকরা। ওইদিন থেকে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ রয়েছে। শহিদুল্লাহকে খুঁজে না পেয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন ওই হাউজের মাধ্যমে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করা বিনিয়োগকারীরা।

এ ঘটনার পরপরই বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) দ্রুত পদক্ষেপ নেয়। তারা ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) দুই প্রতিনিধিসহ তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে। এই কমিটি বিনিয়োগকারীদের অর্থ লোপাটের পরিমাণসহ বিস্তারিত তুলে ধরবে। একই সঙ্গে বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বিক্রি করলেও তারা কেনো মুঠোফোনে মেসেজ পায়নি, এজন্য সিডিবিএলের কোনো ঘাটতি আছে কিনা, তা অনুসন্ধান করবে।

এছাড়া হাউজটির মালিকরা যেন বিদেশে যেতে না পারেন, সে লক্ষ্যে ডিএসই থেকে পল্টন থানায় অভিযোগ করা হয়। একই সঙ্গে মালিকদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করার পদক্ষেপ নিতে বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুরোধ করে। এখন তাদের ১০টির বেশি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে।

শহিদুল্লাহ আত্মগোপনে চলে গেলে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে ডিএসইর এমডি বলেন, ব্রোকারেজ হাউজটিতে ২১ হাজার বিনিয়োগকারীর ৮২ কোটি টাকার শেয়ার ও ইউনিট ফ্রিজ করা হয়েছে। তবে হাউজটির দেনা-পাওনার বিষয়টি এখনও পরিষ্কার নয়।

তিনি বিনিয়োগকারীদের আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেন, বিনিয়োগকারীদের পাওনা দ্রুত পরিশোধের পদক্ষেপ নেয়া হবে। প্রয়োজনে সিডিএলের কাছে থাকা ক্রেস্ট সিকিউরিটিজের শেয়ার বিক্রি করে গ্রাহকদের অর্থ পরিশোধ করা হবে।

এরপর বিনিয়োগকারীদের টাকা ও শেয়ার ফিরিয়ে দেয়ার অংশ হিসেবেই বিনিয়োগকারীদের তথ্য চায় ডিএসই। এ জন্য একটি হটলাইনও চালু করা হয়েছে। ব্রোকারেজ হাউজটির বৈধ গ্রাহকরা তাদের শেয়ার ও অর্থ ফেরত পেতে ডিএসইর প্রধান নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তার (সিআরও) কাছে নির্ধারিত ফরমে আবেদন করতে বলা হয়েছে।