জুলাই মাসে সংক্রমণ কমবে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের অভিমত


দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ চলতি মাসের তৃতীয় বা চতুর্থ সপ্তাহ থেকে  কমতে শুরু করবে। সংক্রমণ কতটা কমবে তা নির্ভর করবে স্বাস্থ্যবিধি মানার ওপর। গত ২৩ জুন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে দেয়া জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের এক প্রক্ষেপণে এসব কথা বলা হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণে জোনিং সিস্টেম বিষয়ক কেন্দ্রীয় কারিগরি গ্রুপের একজন সদস্য বলেন, প্রক্ষেপণে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, দেশে করোনার সংক্রমণ পিকের কাছাকাছি আছে। সামনের দিনগুলোতে সংক্রমণ বাড়লেও তা অল্প পরিমাণে হবে। এরপর করোনা পরিস্থিতি স্থিতিশীল অবস্থায় চলে আসবে।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ কমিটির সিলেট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষজ্ঞ ও পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাবেক সভাপতি ডা. এজেএম ফয়সাল বলেন, করোনা সংক্রমণ এখন পিকে অবস্থান করছে। এই সময়ে স্বাস্থ্যবিধি মানা খুবই জরুরি। এখন স্বাস্থ্যবিধি মানা হলে করোনার সংক্রমণ কমতে শুরু করবে। আর না মানলে সংক্রমণ আরও বাড়বে। সংক্রমণ প্রতিরোধে যেসব জিনিস করার কথা (মাস্ক পরা, হাত ধোয়া, স্যানিটাইজার ব্যবহার ও দূরত্ব বজায় রাখা) এগুলো যদি ঠিকমতো করতে পারি তাহলে এই সমান্তরাল অবস্থায় বজায় রাখতে পারব এবং আস্তে আস্তে কমতির দিকে যেতে পারব। তবে আমরা আরও বলেছি, ঈদের সময় জনসমাগম বেশি হয়। এটি যদি নিয়ন্ত্রণে রাখা না যায় তাহলে সংক্রমণ বাড়তে থাকবে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের যে প্রক্ষেপণ করা হয় সেগুলো সব সময়ই কিছু ধারণা থাকে। তাতে স্বাস্থ্যবিধি মানলে কী হবে আর না মানলে কী হবে তার একটি ধারণা থাকে। ২৩ জুন যে প্রক্ষেপণ দেওয়া হয়েছে তাতেও বেশ কিছু ধারণা দেওয়া হয়েছে।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ কমিটির চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষজ্ঞ ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এমএ ফয়েজ বলেন, করোনা সংক্রমণ কবে কমবে তা বলা খুবই কঠিন। তবে আমাদের একটি গ্রুপ আছে, তারা মডেলিং করে আগামী দিনগুলোতে সংক্রমণ কেমন হবে তার একটি প্রেডিকশন করে রিপোর্ট তৈরি করেছেন। তাতে বলা হয়েছে চলতি মাসের শেষে বা আগামী মাসের প্রথম দিক থেকে সংক্রমণ কমতে পারে। সংক্রমণ প্রতিরোধে যে চারটি চুম্বক জিনিস (সামাজিক দূরত্ব, মাস্ক পরা, হাত ধোয়া ও শনাক্তকরণ পরীক্ষা করে আইসোলেশন-কন্ট্রাক্ট ট্রেসিং নিশ্চিত করা) রয়েছে, এগুলো ঠিকমতো অনুসরণ করা হয় তাহলে প্রেডিকশন অনুযায়ী সংক্রমণ কমতে পারে। তবে এ প্রক্ষেপণই চূড়ান্ত নয়।

করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবিলায় গৃহীত স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম পর্যালোচনা ও সমন্বয়ের লক্ষ্য সরকার ২৮ মার্চ আটজন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের সমন্বয়ে একটি কমিটি করে। কমিটির একেকজন বিশেষজ্ঞকে একেকটি বিভাগের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এ কমিটি এপিডেমিওলজিক্যাল ফর্মুলার ভিত্তিতে ভবিষ্যতে দেশে করোনার সংক্রমণ কী রকম হতে পারে তার প্রক্ষেপণ তৈরি করে ২৩ জুন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জমা দেয়।

প্রজন্মনিউজ২৪/জহুরুল হক