এখনও বেতন হয়নি ৭১ কারখানার পোশাক শ্রমিকদের


 

সারাদেশে মহামারি করোনা ভাইরাসের সংকটকালীন সময়েও বিজিএমইএ-এর সদস্যভুক্ত ৭১টি তৈরি পোশাক কারখানায় এখন শ্রমিকদের মে মাসের বেতন হয়নি। বেতনের দাবিতে প্রায় প্রতিদিনই করোনা পরিস্থিতিতেও শিল্প এলাকাগুলোতে শ্রমিক বিক্ষোভ চলছে। এরইমধ্যে করোনা সংকট শুরুর পর বন্ধ হয়ে গেছে প্রায় ৩৪৮টি কারখানা।

গতকাল শুক্রবার তৈরি পোশাক কারখানা মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র দেয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এরইমধ্যে ১ হাজার ৮৫৫টি পোশাক কারখানা তাদের শ্রমিকদের মে মাসের বেতন দিয়ে দিয়েছে। তবে ৭১টি কারখানা এখনও তাদের শ্রমিকদের মে মাসের বেতন পরিশোধ করেনি।

বিজিএমইএ’র পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, যে ৭১টি পোশাক কারখানা এখনও শ্রমিকদের বেতন দেয়নি সেই কারখানাগুলোর অধিকাংশই আকারে ছোট। সেইসব কারখানায় গত এপ্রিল মাসেও শ্রমিকদের শতভাগ বেতন দেয়া হয়নি।

গেল মার্চ মাসে দেশে নভেল করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হওয়ার সময় বিজিএমইএ’র সদস্যভুক্ত পোশাক কারখানা ছিল ২ হাজার ২৭৪টি। এর মধ্যে কারখানার সংখ্যা কমে ১ হাজার ৯২৬টিতে নেমে এসেছে। বাকি কারখানাগুলো ইতোমধ্যে বন্ধ করে দিয়েছে মালিকপক্ষ।

সরেজমিনে বিজিএমইএ’র তালিকায় দেখা যায়, ঢাকায় ৩৩৩টি পোশাক কারখানার মধ্যে ৩১৪টি মে মাসের বেতন শতভাগ পরিশোধ করেছে। বাকি রয়েছে ১৯টি। গাজীপুর অঞ্চলে ৭১৩টি পোশাক কারখানার মধ্যে বেতন পরিশোধ করেছে ৬৯৩টি, বাকি আছে ২০টি। সাভার-আশুলিয়া এলাকায় ৪১২টি পোশাক কারখানার মধ্যে মে মাসের বেতন পরিশোধ করেছে ৩৯৭টি কারখানা, বাকি আছে ১৫টি। নারায়ণগঞ্জে ১৯৮টি পোশাক কারখানার মধ্যে বেতন পরিশোধ হয়েছে ১৯৬টিতে, দুটি কারখানা এখনও শ্রমিকদের বেতন দেয়নি।

এছাড়া চট্টগ্রাম অঞ্চলে ২৫২টি পোশাক কারখানার মধ্যে ২৪০টি কারখানা শ্রমিকদের মে মাসের বেতন পরিশোধ করেছে। বাকি আছে ১২টি। এছাড়া দেশের অন্যান্য অঞ্চলে ১৮টি কারখানার মধ্যে ১৫টিতে পোশাক শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করা হয়েছে। ৩টি কারখানা এখনও শ্রমিকদের বেতন দেয়নি।

সেই হিসেবে দেখা যাচ্ছে, মে মাসে দেশের ৯৬ শতাংশ পোশাক কারখানা তাদের শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করেছে। গত এপ্রিল মাসে ৯৮ শতাংশ পোশাক কারখানা শ্রমিকদের বেতন দিয়েছিল।

বিজিএমইএ’র হিসাবে চলতি জুন মাসের ১৭ তারিখের মধ্যে ১ হাজার ৭৩১টি পোশাক কারখানা বেতন পরিশোধ করেছে। সবশেষ ৭ দিনে আরও ১২৪টি কারখানা শ্রমিকদের বেতন দিয়ে দিয়েছে।

বিজিএমইএ’র জনসংযোগ সংক্রান্ত স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান খান মনিরুল আলম শুভ জানিয়েছেন, জুন মাসের বাকি দিনগুলোর মধ্যে আরও কিছু সংখ্যক কারখানা তাদের শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘২ হাজার ২৭৪টি কারখানার মধ্যে এই মাসে ১ হাজার ৯২৬টি কারখানা সচল আছে। কিন্তু ঋণের জন্য আবেদন করতে পেরেছিল ১ হাজার ৩৭০টি কারখানা। এরমধ্যে অনেকেই ঋণ পাওয়ার জন্য বিবেচিত হয়নি। বর্তমানে প্রায় সাড়ে পাঁচশো কারখানা নিজেদের প্রচেষ্টায় শ্রমিকদের বেতন দিয়ে যাচ্ছে।’

সূত্র: ব্রেকিংনিউজ