ইলিশে লোকসান গুনছেন জেলেরা

প্রকাশিত: ২৩ জুন, ২০২০ ০১:৩৬:১০

ইলিশে লোকসান গুনছেন জেলেরা

ইলিশ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পরও হতাশ মৎস্যজীবীরা। বিরূপ আবহাওয়ার কারণে প্রতিদিনই লোকসান গুনছেন তারা।

দেশে ইলিশ মাছ উৎপাদন বৃদ্ধিকল্পে ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দুই মাস ইলিশের ৫টি অভয়াশ্রমে সব ধরনের মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা জারি করে মৎস্য অধিদপ্তর। এর মেয়াদ ৩০ এপ্রিল শেষ হয়েছে। এরপর ইলিশ ধরার ওপর নতুন করে কোনও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেনি মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়। তবে জাটকা ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা আগামী জুন পর্যন্ত থাকবে (গত বছর নভেম্বর থেকে শুরু হয়)।

মৎস্য অধিদপ্তরের সিনিয়র সহকারী পরিচালক মাসুদ আরা মিমি বলেন, গত অক্টোবরে ২২ দিন বঙ্গোপসাগরে ইলিশ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা ছিল। এরপর ১ নভেম্বর থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত জাটকা ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকে। সুনির্দিষ্ট ৬টি অভয়াশ্রমে ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ২ মাস সব ধরনের মাছ ধরা বন্ধ রাখা হয়। তবে বড় নদী এবং সমুদ্রে বড় ইলিশ ধরছেন মৎস্যজীবীরা।

বরিশাল জেলা মৎস্য অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আজিজুল হক বলেন, বরিশাল এলাকার জেলেরা বড় নদী কিংবা সমুদ্রের দিকে যাচ্ছেন না। ইলিশ তেমন ধরা পড়ছে না। এ অবস্থা কাটতে আরো কিছু দিন লেগে যাবে। কারণ আবহাওয়া বিরূপ আচরণ করছে। হঠাৎ হঠাৎ নিম্নচাপ, সমুদ্র উত্তাল হয়ে উঠছে। এ সময় তাদের সমুদ্রে যেতে নিরুৎসাহিত করা হয়।

ভোলার চরভদ্রাসনের ট্রলার মালিক নুরুদ্দিন মাঝি বলেন, আমরা বছরের মাত্র চার মাস ইলিশ ধরতে সমুদ্রে যেতে পারি। এর মধ্যে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে অনেক দিন মাছ ধরা থেকে বিরত থাকতে হয়। কিন্তু এ সময় যেসব শ্রমিকদের মাছ ধরার জন্য বাইরে থেকে আনা হয়, তাদের বেতন ঠিকই পরিশোধ করতে হয়।

নুরুদ্দিন মাঝি বলেন, গত ৮দিন ধরে ইলিশ ধরার জন্য সমুদ্রে যাচ্ছি। আবহাওয়ার কারণে বেশি ভেতরে যাওয়া সম্ভব হয় না। কর্মচারীদের বেতন যোগানোর তাগিদেই ঝুঁকি নিতে হচ্ছে। গত চার দিনে মাত্র দুই হালি ইলিশ পেয়েছি। তিন হাজার টাকা বিক্রি করতে পেরেছি। চারদিনই আমাকে লস দিতে হয়েছে।

বাগেরহাটের উপকূলীয় মৎস্যজীবী কল্যাণ সমিতির সভাপতি শেখ ইদ্রিস আলী বলেন, এখন আবহাওয়া খারাপ যাচ্ছে। সাগর উত্তাল থাকে। ফলে জেলেরা এমনিতেই গভীর সমুদ্রে ইলিশ ধরার জন্য কম যাচ্ছে। এছাড়া করোনা আতঙ্ক রয়েছে।

ভোলার মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি আরশাদ আলী রাইজিংবিডিকে বলেন, অনেকেই সমুদ্রে ইলিশ ধরার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল। কিন্তু সমুদ্রের অবস্থা মাঝে মধ্যেই খারাপ হয়ে পড়ে। পরিস্থিতি ভালো হলে ইলিশ ধরা শুরু হবে।

ভোলার আড়ত মালিক মাসুদ রানা বলেন, আবহাওয়া খারাপ থাকায় ইলিশ খুব একটা ধরা পড়ছে না।

ইলিশের সরবরাহ ও দাম সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইলিশের দাম নির্ভর করে সরবরাহের ওপর। যখন মাছ ধরা পড়ে তখন দাম একটু কম হয়। এখন মাছ কম ধরা পড়ছে। এছাড়া বেশির ভাগ ট্রলারই বসে আছে। এখন এক কেজি ওজনের একটি ইলিশ আমাদের আড়তে ১১০০-১২০০ টাকা এবং ৫০০ গ্রামের একটি ইলিশ ৪৫০ টাকা থেকে ৫৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে এ সাইজের ইলিশ কম পাওয়া যাচ্ছে।

চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমবায় সমিতির মো. সফিক বলেন, বিরূপ আবহওয়ার কারণে জেলেরা মাছ ধরতে যাচ্ছেন না। ভালো ইলিশ পেতে হলে আরো কিছু দিন অপেক্ষা করতে হবে।

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ