প্রবীণদের করোনা–সচেতনতা

প্রকাশিত: ০৬ জুন, ২০২০ ০৯:৩৮:০১

প্রবীণদের করোনা–সচেতনতা

করোনাভাইরাসের সংক্রমণের সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছেন পরিবারের প্রবীণ সদস্য। বয়স্কদের মধ্যে অনেকেরই ভুলে যাওয়ার প্রবণতা আছে। এ ধরনের রোগীদের ক্ষেত্রে পরিবারের সবাইকে একটু বেশিই সতর্ক থাকতে হয়। সব সময় খেয়াল রাখতে হয়, তিনি মাস্ক পরছেন কি না, সামাজিক দূরত্ব মেনে চলছেন কি না ইত্যাদি।

প্রবীণদের দেখাশোনার ক্ষেত্রে প্রথম কথা হলো, আপনাকে হয়ে উঠতে হবে তাঁদের ভরসাস্থল। তারপর করোনাসম্পর্কিত আলোচনা করতে হবে তাঁদের সঙ্গে। করোনা মহামারিকে পরিবারের প্রবীণ সদস্যের সামনে ভয়াবহরূপে তুলে না ধরে সাধারণভাবে উপস্থাপন করুন এবং করণীয়-বর্জনীয় সম্পর্কে জানান।

বয়স্কদের করোনা সংক্রমণের ক্ষেত্রে সাধারণ উপসর্গগুলো দেখা না–ও যেতে পারে; বরং আকস্মিক আচরণগত পরিবর্তন, ভুলে যাওয়ার সমস্যা বেড়ে যাওয়া, অস্থিরতা, হঠাৎ ঘ্রাণ বা স্বাদ না পাওয়া, খাওয়া বন্ধ করে দেওয়া, শীত শীত ভাব বা কাঁপুনি, পেশিব্যথা বা মাথাব্যথার উপসর্গ দেখা দিতে পারে। এ রকম কোনো উপসর্গ দেখা দিলেই প্রবীণ সদস্যের করোনা পরীক্ষা করানো উচিত।

বয়স্কদের করোনা হোক বা না হোক, এ সময় তাঁদের আলাদা রেখেই যত্ন নেওয়া উচিত। পরিবারে যাঁরা ঝুঁকিপূর্ণ বা বাইরে যান, তাঁরা বয়স্কদের কাছে না যাওয়াই ভালো। সেবাদানকারী ব্যক্তি পরিবারের প্রবীণ সদস্যটিকে হাত ধোয়া, হাঁচি-কাশির আদবকেতা এবং করোনা সংক্রমণ ঠেকানোর অন্য উপায়গুলো সম্পর্কে বারবার মনে করিয়ে দেবেন, দেখিয়ে দেবেন। প্রয়োজনে কাজগুলো করতে সহযোগিতাও করবেন। সেবাদানকারী নিজেও সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবেন। আর পরিবারের সবচেয়ে সুস্থ ও তরুণ বয়সী ব্যক্তিটিই প্রবীণ সদস্যকে সেবা দিলে ভালো হয়।

প্রবীণ ব্যক্তির দৈনন্দিন রুটিনের যেন খুব একটা এদিক-ওদিক না হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখুন। নতুন কোনো নিয়ম গ্রহণে তিনি রেগে গেলে বিরক্ত হবেন না। কোনো কিছু করতে জোর করাও যাবে না। নিজেরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন, তাঁকেও উৎসাহিত করুন। তবে শ্বাসকষ্ট অনুভব করলে, চলাফেরায় অক্ষম হলে কিংবা নিজে নিজে মাস্ক খুলতে না পারলে তাঁকে মাস্ক না পরানোই ভালো। তাঁকে হাসপাতালে নিতে হলে সেখানকার চিকিৎসক ও কর্মীদের তাঁর যাবতীয় ইতিহাস, দৈনন্দিন রুটিন সম্পর্কে জানিয়ে রাখুন।

এ সময় প্রিয় মানুষদের দেখা না পেয়ে পরিবারের প্রবীণ সদস্য ভেঙে পড়তে পারেন। কাজেই তাঁকে সময় দিন। সঙ্গে নিয়ে ঘরে বা বারান্দায় হাঁটতে পারেন, কাছের মানুষদের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলিয়ে দিতে পারেন। আদরের নাতি-নাতনিকে কেন কাছে টানতে পারছেন না, কিংবা আত্মীয়স্বজন কেন এ সময় দেখতে আসছেন না—এসব বিষয় মোলায়েম ভাষায় বুঝিয়ে বলুন।

লেখক: স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেড, ঢাকা

projonmonews24/maruf

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ