'এক মুহুর্তের জন্যও মনোবল হারাইনি'


`এক মুহুর্তের জন্যও মনোবল হারাইনি`করোনাভাইরাস পরিস্থিতির শুরু থেকেই অসহায় মানুষের পাশে ছিলেন সিলেট সিটি করপোরেশনের ২০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আজাদুর রহমান। কখনো খাদ্যসহায়তা, আবার কখনো চিকিৎসা সহায়তা নিয়ে মানুষের পাশে ছিলেন। প্রায় মাসখানেক এমন কর্মতৎপরতার পর একদিন অসুস্থ বোধ করেন। হালকা জ্বর, সর্দি ও কাশি হয়। গত ২৪ মে নমুনা পরীক্ষায় তাঁর করোনা পজেটিভ আসে। এর চারদিন পর হাসপাতালে ভর্তি হন। গতকাল বুধবার সুস্থ হয়ে শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরেছেন তিনি।


হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) সুশান্ত কুমার মাহাপাত্র বলেন, ওয়ার্ড কাউন্সিলর আজাদই প্রথম রোগী যিনি আক্রান্ত হওয়ার ১০ দিন আর হাসপাতালে ভর্তি পাঁচ দিনের মাথায় করোনামুক্ত হয়ে বাড়ি ফিরলেন। গতকাল সন্ধ্যায় এই চিকিৎসক বলেন, কাউন্সিলর আজাদ ২৮ মে শ্বাসকষ্ট নিয়ে এই হাসপাতালে ভর্তি হন। হাসপাতালে চার দিন থাকার পর দ্বিতীয় দফা পরীক্ষায় করোনা নেগেটিভ আসে। গতকাল তৃতীয় দফার পরীক্ষায়ও করোনা নেগেটিভ আসে। এরপর তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়।


হাসপাতাল থেকে বিদায় নেওয়ার সময় আজাদুর চিকিৎসক, নার্সসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। পরে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, 'আমি চারবারের জনপ্রতিনিধি। ২০ বছর ধরে এলাকাবাসীর সুখ-দুঃখে একসঙ্গে আছি। দুর্যোগে, দুঃসময়ে কখনো এলাকার মানুষজনের সঙ্গ ছাড়িনি। এই অবস্থায় যদিও মানুষের সঙ্গ এড়িয়ে চলার কথা, আমি চেষ্টা করেছি সতর্ক থেকে সহায়তা করার। কিন্তু কোনো অসতর্ক মুহূর্তে হয়তো সংক্রমিত হয়েছি। তবে সংক্রমণ ধরা পড়ার পর একবারের জন্যও মনোবল হারাইনি। মনে হয়, মনে বল রাখার যথাসাধ্য চেষ্টায় আমি দ্রুত করোনামুক্ত হয়েছি।'

 

সিলেট সিটি করপোরেশনের ২০ নম্বর ওয়ার্ডের একটানা চারবারের নির্বাচিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর আজাদুর রহমান। তিনি সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক। তাঁর স্ত্রী নাজমা রহমান যুক্তরাজ্যের ওয়েস্টহ্যাম্পস্টেডের কেমডেন কাউন্সিলর।


ওয়ার্ডের বাসিন্দারা বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ সতর্কতা জারির পর গত ২৫ মার্চ থেকে আজাদ ২০ নম্বর ওয়ার্ড ছাড়াও নগরের বিভিন্ন এলাকায় খাদ্যসহায়তা দিয়েেছেন। এই কাজে তাঁর স্ত্রীও তাঁর সঙ্গে ছিলেন।

কাউন্সিলর আজাদ বলেন, হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়ার পর চিকিৎসকেরা তাঁকে একটানা কয়েকদিন বাসায় বিশ্রাম নিতে বলেছেন। এখন দুর্বল ও ক্লান্ত অনুভব করছেন তিনি। কিছুদিন বিশ্রাম নিয়ে আবার মানুষের সেবায় নিজেকে আগের মতো নিয়োজিত করবেন। দৃঢ়তার সঙ্গে তিনি বলেন, 'করোনায় ভয় পেয়ে নিজেকে গুটিয়ে নিলে চলবে না। মানুষের পাশে আগে যেমন ছিলাম, এখনো থাকব।'

projonmonews24/maruf