দুই জেলায় বিষাক্ত মদ পানে ২১ জনের মৃত্যু

প্রকাশিত: ২৮ মে, ২০২০ ১০:১৯:৫২

দুই জেলায় বিষাক্ত মদ পানে ২১ জনের মৃত্যু

ঈদের ছুটির মধ্যে বিষাক্ত মদ ‘স্পিরিট’ পান করে রংপুর ও দিনাজপুরে মোট ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে রংপুরে গত তিন দিনে ১০ জনের ও বুধবার (২৭ মে) দিনাজপুরের বিরামপুরে স্বামী-স্ত্রী, দুই ভাইসহ ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে।

রংপুর জেলার পীরগঞ্জে ও বদরগঞ্জে ঈদ উদযাপনে নেশা জাতীয় বিষাক্ত স্পিরিট পানে তিন দিনে ১০ ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। 
এছাড়াও অসুস্থ হয়ে হাসপাতাল ও বাড়িতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন কমপক্ষে ১৫ জন। ঈদ উদযাপন করতে গিয়ে মৃত্যুর এ ঘটনা পীরগঞ্জের শানেরহাট নামক এলাকার ও অপর ঘটনাটি বদরগঞ্জের শ্যামপুরে।

সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত পীরগঞ্জের শানেরহাট ইউনিয়নে বেশ কয়েকজনের মৃত্যুর গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। তবে এ বিষয়ে কেউ মুখ না খুললেও নেশা জাতীয় স্পিরিট পানে এমনটা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক শরিফুল ইসলাম প্রাথমিকভাবে এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

অপর ঘটনায় বদরগঞ্জ উপজেলার শ্যামপুরে বিষাক্ত রেকটিফায়েড স্পিরিট পান করে ঈদ পালন করতে গিয়ে তিনজনের মৃত্যুর হয়েছে। মৃতরা হলো, বদরগঞ্জ উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের নুর ইসলাম (৩০) এবং রংপুর সদর উপজেলার চন্দনপাট ইউনিয়নের সরোয়ার হোসেন (৩১) ও মোস্তফা কামাল (৩০)। এদের মধ্যে মঙ্গলবার সকালে সরোয়ার ও মোস্তফা কামাল এবং বুধবার সকালে নুর ইসলাম মারা যান। তিনজনই রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।

পীরগঞ্জের শানেরহাট ইউপির চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মন্টু জানান, মঙ্গলবার সকালে শানেরহাট খোলাহাটি গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক (৪৫), পাহাড়পুরের জাইদুল হক (৩৫) ও পার্শ্ববর্তী মিঠাপুকুর উপজেলার বাজিতপুর গ্রামের চন্দন কুমারের (৩০) মৃত্যু হয়। এর আগের দিন সোমবার (২৫ মে) রাতে রায়তি সাদুল্ল্যাপুরের দুলা মিয়া (৫২) এবং হরিরাম সাহাপুরের লাল মিয়া (৩০),মাদক ব্যবসায়ী নওশা (৫০) ও শানেরহাট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি সেলিম সরকার মারা গেছেন।
পীরগঞ্জ থানা পুলিশের ওসি সরেস চন্দ্র জানান, মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হয়েছেন। ওই ঘটনার অনুসন্ধান করা হচ্ছে। তদন্ত শেষে মৃত্যুর প্রকৃত ঘটনা উদঘাটিত হবে।

রংপুর সদর কোতয়ালী থানার ওসি সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘নেশাজাতীয় অ্যালকোহল পান করে তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মদের উৎস এবং সরবরাহকারীকে খুঁজে বের করতে পুলিশ অনুসন্ধান শুরু করেছে।’

রংপুরের পুলিশ সুপার  বিপ্লব কুমার সরকা জানান, জেলা পুলিশের কয়েকটি বিশেষ টিম ঘটনাটি নিবিড় তদন্ত করছেন। যেকোন সময় মৃত্যুর আসল রহস্য পুলিশ উদঘাটন করবে। জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।

অন্যদিকে দিনাজপুর জেলার বিরামপুরে বিষাক্ত স্পিরিট পানে স্বামী-স্ত্রী, দুই ভাইসহ ১১ জনের মৃত্যুর ঘটেছে। এ ঘটনায় আরো ৪ জন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

পারিবারিক সূত্রের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, বিরামপুর পৌর এলাকার মাহমুদপুর গ্রামের আনোয়ার হোসেনের পুত্র আ. মতিন (২২), সুলতান আলীর পুত্র মহসীন আলী (২৭) ও তোজাম্মেলের পুত্র আজিজুলসহ (৩০) আরো বেশ কয়েকজন মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নেশা হিসেবে স্পিরিট পান করে। এরপরই তারা অসুস্থ বোধ করলে বুধবার ভোর রাতে একে একে তিন জনের মৃত্যু ঘটে। এরপর দুপুরে স্বামী শফিকুল ইসলাম (৫৫) ও তার স্ত্রী মঞ্জুয়ারা (৩৫) এবং অমিত রায় (৩০) নামে আরো ৩ জন মারা যান।

প্রজন্ম নিউজ/ নুর

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ