প্রকাশিত: ২৬ মে, ২০২০ ০৬:১০:৫৬
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার বাসিন্দা নাসরিন আবু কামাল (৪৬) ২০১৫ সালের অক্টোবর থেকে বন্দী দখলদার ইসরাইলের কারাগারে। গত ৬ বছরে একবারও আত্মীয়-স্বজনদের সাক্ষাৎ করতে দেয়া হয়নি এই নারীকে। এমনকি ঈদের দিনগুলোতেও নয়। নির্জন কারা প্রকোষ্ঠে কিভাবে তার ঈদগুলোও তাই কাটে, সেটি যে অবর্ণনীয়, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে একটি উপায়ে তিনি অবশ্য পরিবারের সাথে, সন্তানদের সাথে ‘সংযোগ’ স্থাপন করতে পারেন। সেটি ফিলিস্তিনের একটি রেডিও স্টেশনের মাধ্যমে।
রেডিও স্টেশনটি থেকে প্রতি বছর ঈদের দিনে একটি বিশেষ অনুষ্ঠানে নারী বন্দীদের, বিশেষ করে যেসব মায়েরা বন্দী আছেন ইসরাইলি কারাগারে তাদের পরিবারের সদস্যদের শুভেচ্ছা বার্তা (ভয়েস মেসেজ) প্রচার করা হয়। ইসরাইলি কারা কর্তৃপক্ষ অবশ্য সেই অনুষ্ঠানটি শোনার সুযোগ করে দেয় বন্দীদের।
পরিবার, সন্তানদের সাথে দেখা করতে না পারা একজন মা যখন তার আপন কারো কণ্ঠে রেডিওতে তার উদেশ্যে শুভেচ্ছা বার্তা শুনতে পান সেটি এক হৃদয় বিদারক পরিস্থিতির জন্ম দেয় কারাগারে।
গত বছর ঈদের সময় ইসরাইলি কারাগারে বন্দী ছিলেন গাজার আরেক নারী হাইফা আবু-এসবেই। ৬ বছর ধরে বন্দী থাকা নাসরিন আবু কামাল ঈদের দিন রেডিও অনুষ্ঠানে প্রিয়জনের কণ্ঠ শুনে কেমন করেছিলেন সেটি তিনি তুলে ধরেছেন সংবাদ মাধ্যমের কাছে।
হাইফা বলেন, ঈদের দিন বিকেলে নাসরিন যখন রেডিও অনুষ্ঠানে তারা সবচেয়ে ছোট সন্তানের কণ্ঠ শুনতে পান, তখন একই সাথে তাকে প্রচন্ড আনন্দিত ও প্রচণ্ড দুঃখী মনে হয়েছে। অবুঝ শিশুর মতো আচরণ করেছেন তিনি। রেডিওতে প্রাণপ্রিয় সন্তানের সেই বার্তাটি প্রচারিত হওয়ার সময় তার চোখ ছিলো বন্ধ। মুখমণ্ডলে শুরুতে একরাশ আনন্দ ফুটে উঠলেও এরপরই সেখানে ভর করে যন্ত্রণা আর পরিবারকে কাছে পাওয়ার আকুলতা।
তুরস্কের আনাদোলু এজেন্সিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে হাইফা বলেন, কারাগারের ঈদে কোন আনন্দ কিংবা উৎসব থাকে না। তবে ফিলিস্তিনি বন্দীরা একে অন্যকে প্রাণবন্ত রাখার চেষ্টা করেন। হাইফা কারাগারে ঈদের স্মৃতি স্মরণ করে বলেন, অনেক বিধিনিষেধ থাকলেও বন্দীরা কারারক্ষীদের চোখ এড়িয়ে নিজেদের আত্মাকে প্রশান্তি দেয়ার চেষ্টা করেন। কেউ কেউ কারা কর্তৃপক্ষে কাছ থেকে পাওয়া সামান্য সামগ্রী দিয়ে ঈদ ক্যান্ডি বানান। কেউ অন্য বন্দী বা স্বজনদের উদ্দেশ্যে ঈদ বার্তা লেখেন হৃদয়গ্রাহী বাক্য দিয়ে।
হাইফা জানান, গত বছর ঈদের দিন তিনি সব নারী বন্দীদের চমকে দিয়েছিলেন। সবাই ঘুম থেকে উঠে দেখেছে মাথার কাছে মিষ্টি রাখা। সামান্য সামগ্রী পেয়ে দুই দিন সময় নিয়ে অল্প কিছু মিষ্টি বানিয়েছিলেন হাইফা। আমাকে হাশারোন জেল থেকে দামন জেলে নেয়ার সময় লুকিয়ে ক্যান্ডি বানানোর সামগ্রী সাথে নিয়েছিলাম। এছাড়া ২০ জনের জন্য মিষ্টি তৈরি করেছি। কারাগারে কোন ওভেন ব্যবহারের সুযোগ ছিলো না তাই একটি গরম প্লেট আর একটি ছোট পাত্র ব্যবহার করেছি।
সাবেক কারাবন্দীরা বলেছেন, ওই অনুষ্ঠানটি ঈদের দিন এক আবেগঘন পরিবেশ সৃষ্টি করে কারাগারে। প্রিয়জনের কণ্ঠ শুনে কেউ প্রশান্তি অনুভব করেন, কেউ কান্নায় ভেঙে পড়েন, কেউবা ফেটে পড়েন ক্ষোভে।
প্রজন্ম নিউজ/ নুর
কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ভোটারের তালিকা চান হাইকোর্ট
রুমা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতিসহ ৭ কেএনএফ সদস্য কারাগারে
পর্যটকশূন্য হয়ে পড়েছে কুয়াকাটা
ক্রিকেটার আরিফা জাহান বিথীর ব্যতিক্রমী এক উদ্যোগ
রাজধানীতে বৃষ্টির জন্য নামাজ আদায়
নিজের বিশ্রাম নিয়ে যা বলছেন শরিফুল
গৃহবধুকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ স্বামীর বিরুদ্ধে
সিলেটে গরমে বেড়েছে জর, নিউমোনিয়া,ডারিয়া ও হিটস্ট্রোক রোগ
গ্রাহকের ২ লাখ টাকার ফ্যামিলি ট্রিপের স্বপ্ন পূরণ করলো রিয়েলমি