লকডাউনেও থেমে নেই ঈদযাত্রা


একটু একটু করে প্রতিদিনই রাজধানী ঢাকা হারাচ্ছে তার নির্জনতা। ফিরে পাচ্ছে পুরনো ব্যস্ততা। রাস্তার পাশের দোকান থেকে শুরু করে ফুটপাথে হকাররাও বসতে শুরু করেছেন। ঈদ উপলক্ষে রাস্তার পাশে কোথাও কোথাও ভ্যানে করে বিক্রি করছে ঈদের পোশাক। বাকি শুধু গণপরিবহন। বাস ছাড়া এখন সড়কে সবই দেখা যাচ্ছে। থেমে নেই ঈদ ঘিরে মানুষের ঘরে ফেরাও। যেকোনও মাধ্যমে ঢাকা ছাড়ছে মানুষ। আবার দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে অনেকে ঢাকায় আসছেনও। ঢাকার অন্যতম গেটওয়ে মাওয়া, মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ও আরিচা ঘাটে এখন ঢাকাগামী ও ঢাকা ছাড়ার ধুম দেখা যাচ্ছে। আর এ ক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব বলা চলে কেউই মানছে না।

রবিবার (১৭ মে) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন রাস্তায় সরেজমিনে এমনই চিত্র দেখা যায়। 

মাওয়া ও কাঠালবাড়ি ফেরিঘাটে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বাস বন্ধ থাকায় বিভিন্ন উপায়ে ঘাট পর্যন্ত আসছে মানুষ। এরপর সামাজিক দূরত্বের তোয়াক্কা না করেই গাদাগাদি করে চড়ছে ফেরিতে। বেড়েছে ব্যক্তিগত গাড়ির চাপও। একইভাবে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ও আরিচা ঘাট এবং রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাটে গত কয়েকদিনের তুলনায় বেড়েছে মানুষের চাপ।

মেহেরপুর থেকে ঢাকায় আসা শহীদুল ইসলাম শহীদ ব্রেকিংনিউজকে বলেন, ‘পাটুরিয়া ফেরিঘাট পর্যন্ত অটোতে এসে ঘাট পার হয়ে সিএনজি, পিক-আপ, অটোরিকশা যখন যা পেয়েছি তাতে করেই গাবতলী পর্যন্ত চলে এলাম। তবে রাস্তায় করোনা ভাইরাসের ভয় কারও মধ্যেই দেখলাম না।’ 


অন্যদিকে, রাজধানীর মতিঝিল, গুলিস্তান, শাহবাগ, কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট, মিরপুর গোল চত্বর মোড়ে কে বলবে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি রয়েছে এই পৃথিবীতে। মাস দেড় আগে করোনা ঝুঁকি যখন এখনকার চেয়ে কিছু কম ছিল তখনও ঢাকা ছিল সুনসান ফাঁকা। এখন ঝুঁকি যখন চরম পর্যায়ে গাড়ির ভিড় ঠিক তখন আগের মতো সর্বোচ্চ।

রাজধানীতে গণপরিবহনের মধ্যে বেশি চলছে সিএনজি অটোরিকশা, রিকশা, প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেল। দেখা যাচ্ছে, একটি সিএনজি অটোরিকশায় উঠতে গিয়ে দরজা খুলতে যে জায়গায় ধরতে হয় সেটি সবাই ধরছেন। এরকম লোহার মধ্যে অনেকের স্পর্শের ফলে করোনা ভাইরাস ছড়াতে পারে। রাইড শেয়ারিং সার্ভিসে চলা বেশকিছু মোটরসাইকেল এখন চুক্তিভিত্তিক চলছে। যেখনে দুজন পাশপাশি বসে যাচ্ছেন।

এদিকে বাস না থাকায় পণ্য পরিবহনের গাড়িতে মানুষের চলাচল দেখা গেছে। বেশিরভাগ নিম্নবিত্তের মানুষ পণপরিবহনের গাড়িতে উঠছেন। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রণালয় গণপরিবহন বন্ধের নোটিশে-পণ্য পরিবহনের গাড়িতে মানুষের যাতায়াত করা যাবে না বলে জানিয়েছে।


এদিকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে সারাদেশে গণপরিবহন চালু করার দাবি জানিয়েছে যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। তাদের ১১টি সুপারিশের মধ্যে রয়েছে গণপরিবহনে ৪০ সিটের গাড়িতে ২০ সিট পরিপূর্ণ করে এক আসন ফাঁকা রেখে যাত্রী বহন করলে ও গাড়িতে ওঠার আগে স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করার ব্যবস্থা এবং প্রতি ট্রিপ শেষে জীবাণুনাশক স্প্রে দিয়ে গাড়ি পরিষ্কার করলে করোনার সংক্রমণ থেকে যাত্রীদের রক্ষা করা সম্ভব। একইসঙ্গে ৭০ লাখ পরিবহন শ্রমিকও রুটি-রুজি শুরু হবে।

বাংলাদেশ সড়ক পরিহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ ব্রেকিংনিউজকে জানান, সরকার যখন নির্দে দেবে তখনই গণপরিবহন চলাচল শুরু করবে। তবে যখন গণপরিবহন খুলবে তখন তারা স্বাস্থ্যবিধির বিষয়ে কঠোর হওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না।

প্রজন্ম নিউজ/ নুর