করোনা নিয়ে অভিযোগের তীরে বিপর্যস্ত চীন

প্রকাশিত: ১৮ মে, ২০২০ ১২:২৬:১৫

করোনা নিয়ে অভিযোগের তীরে বিপর্যস্ত চীন

করোনা ভাইরাস শুরুর পর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) গভর্নিং বডি প্রথম বৈঠকে বসছে। বৈশ্বিক স্বাস্থ্য পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে আজ সোমবার (১৮ মে) থেকে দুদিনের জন্য অধিবেশনে বসছে ডব্লিউএইচও। খবর ব্লুমবার্গ।

বৈঠকে করোনার উৎপত্তিস্থল চীনও যোগ দেবে। তবে দেশটি খুব একটা স্বস্তি নিয়ে বৈঠকে বসতে পারবে না  বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ, আর কিছু হোক না হোক, অন্তত দুটি বিষয়ে তাদের প্রশ্নবাণে জর্জরিত করবে কয়েকটি দেশ। একটি হলো, ভাইরাসটির সংক্রমণের প্রাথমিক পর্যায়ে চীনের কমিউনিস্ট পার্টি কী ব্যবস্থা নিয়েছে। আর করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধে তাইওয়ান যদি সফল হতে পারে, তবে তারা কেন পারল না। 

সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় অনুষ্ঠিতব্য ডব্লিউএইচওর অধিবেশনে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও অস্ট্রেলিয়া করোনার উৎপত্তির কারণ অনুসন্ধানে আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি জানাবে বলে একটি সূত্রের বরাতে দাবি করেছে ব্লুমবার্গ। এছাড়া চীনের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী যুক্তরাষ্ট্র তো প্রথম থেকেই তাদের প্রতি বিষোদ্গার করে চলেছে। ওয়াশিংটন মনে করে, উহানের একটি পরীক্ষাগার থেকেই করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। এবং তাদের কাছে এ বিষয়ে প্রমাণ থাকার দাবিও করেছে দেশটি। 

বৈঠকে তাইওয়ানের নাম আসার কারণ হচ্ছে, করোনা মোকাবেলায় খুব কম দেশই সাফল্য দেখাতে সক্ষম হয়েছে। তাইওয়ান তার মধ্যে অন্যতম। যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রপক্ষ চায়, তাইওয়ান যেন এবারের অধিবেশনে পর্যবেক্ষক হিসেবে উপস্থিত থাকে। বিষয়টি বেইজিংকে যথেষ্ট্রই খেপিয়ে তুলেছে। 

কার্যত চীন তাইওয়ানকে নিজেদের একটি প্রদেশ হিসেবে বিবেচনা করে এবং দীর্ঘ সময় তারা দ্বীপটিকে আন্তর্জাতিক সম্পৃক্ততা থেকে আলাদা করে রাখতে সমর্থ হয়েছে। এ অবস্থায় তাইওয়ানকে ডব্লিউএইচওর অধিবেশনে যোগ দিতে বলা মানে তাদের সেই শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হতে সহায়তা করা। চীন মনে করছে, যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রপক্ষ তাইওয়ানের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদারের চেষ্টা করছে। যেটি তাদের নীতি বিরুদ্ধ।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ডব্লিউএইচওর বৈঠককে সামনে রেখে উভয়পক্ষের এ বিভক্তি এটাই প্রমাণ করে যে, করোনা মহামারী যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রপক্ষের সঙ্গে চীনের ভূরাজনৈতিক দ্বন্দ্ব আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। 

যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা মনে করছে, চীনের একগুঁয়েমির কারণেই করোনা ভাইরাস বৈশ্বিক মহামারী আকার ধারণ করেছে। এছাড়া ডব্লিউএইচও করোনা ইস্যুতে চীনের পক্ষ নিয়েছে বলেও অভিযোগ ওয়াশিংটনের। এ কারণে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন ডব্লিউএইচওতে তহবিল সরবরাহ বন্ধের ঘোষণা দিয়েছিলেন। এমনকি ডব্লিউএইচওর অনুরূপ একটি সংস্থা গঠনের হুমকিও দিয়ে রেখেছে হোয়াইট হাউজ। যদিও শুক্রবার (১৫ মে) ট্রাম্প প্রশাসন পুনরায় সংস্থাটিতে চীনের অনুরুপ অনুদানের কথা বিবেচনার ঘোষণা দিয়েছে।

ডব্লিউএইচওর এবারের অধিবেশনে প্রায় ২০০টির বেশি দেশের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করবেন। বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা চীনের বিরুদ্ধে কথা বললেও বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন, বেইজিংয়েরও সমর্থকের অভাব হবে না। কারণ বৈঠকে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর বেশির ভাগেরই চীনের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে। আর করোনা এসব দেশের অর্থনীতিকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে দিয়েছে। এ অবস্থায় তাদের অর্থনৈতিক পুনর্গঠন প্রক্রিয়ায় চীনের সহায়তা দরকার। স্বভাবতই তারা চাইবে না বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির বিরাগভাজন হয়ে নিজেদের সর্বনাশ ডেকে আনতে। 

প্রজন্ম নিউজ/ নুর

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ