ব্যাংকে হঠাৎ বেড়েছে লেনদেনের চাপ

প্রকাশিত: ০৮ মে, ২০২০ ০৯:১৩:১৩

ব্যাংকে হঠাৎ বেড়েছে লেনদেনের চাপ

হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে ব্যাংকের লেনদেনের পরিমাণ। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে সপ্তাহের ব্যবধানে লেনদেন বেড়েছে ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ। মতিঝিল কেন্দ্রিক শাখাগুলোতে দেখা গেছে গ্রাহকদের উপচে পড়া ভিড়। ব্যাংকাররা মনে করছেন লকডাউন শিথিল ঘোষণার কারণেই বৃদ্ধি পেয়েছে এ চাপ।

এ বিষয়ে সোনালী ব্যাংকের মতিঝিল শাখার মহা-ব্যবস্থাপক মোদাচ্ছের হোসেন জানান, হঠাৎ করে আজকের লেনদেন অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে। শাখাতে ছিল গ্রাহকদের উপচে পড়া ভিড়। কিন্তু গত সপ্তাহে এতটা চাপের মুখে পড়েনি মতিঝিল শাখা। আজ সোনালী ব্যাংকের মতিঝিল লোকাল অফিসে মোট লেনদেন হয়েছে ৫৫৫ কোটি টাকা। এরমধ্যে ক্লিয়ারিং হয়েছে ৩৮০ কোটি টাকা। এছাড়াও নগদ জমার পরিমাণ ১৪ কোটি এবং উত্তোলনের পরিমাণ ৩৪ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।

বেসরকারি ইসলামী ব্যাংকের লোকাল শাখার একজন কর্মকর্তা জানান, লকডাউন ঘোষণা করার পর এতটা চাপের মুখে পড়িনি। হঠাৎ করে টাকা উত্তোলনের জোয়ার এসেছে গ্রাহকদের মধ্যে। অতিরিক্ত গ্রাহকের উপস্থিতির কারণে লাইন পৌঁছেছে রাস্তা পর্যন্ত। তবে এর আরও একটা কারণ হচ্ছে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা। পুরোপুরি ভাবে সামাজিক দূরত্ব না মানলেও স্বাভাবিক দিনের চেয়ে অনেকটাই দূরত্ব বজায় বজায় রাখছেন গ্রাহক। সে কারণেই লাইনটা অন্যান্য দিনের তুলনায় অনেক বড় ছিল। আজ ইসলামী ব্যাংকের লোকাল অফিসে লেনদেন ছাড়িয়েছে ৫০০ কোটি টাকা।

প্রাইম ব্যাংকের মতিঝিশ শাখার মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ সালাউদ্দিন জানান, আমাদের ব্যাংকেও একই চিত্র। সাধারণত একদিন ছুটি থাকলে পরের দিন লেনদেনের চাপ বৃদ্ধি পায়। গতকাল বুদ্ধ পূর্ণিমার ছুটি ছিল। তাই আজকে একটি চাপ বেশি। লকডাউনে শীথিলতা আসার কারণেও চাপ বাড়তে পারে বলেও মনে করেন তিনি।

গত মঙ্গলবার দোকানপাট ১০ মে থেকে সীমিত আকারে খোলা রাখার অনুমতি দিয়েছে সরকার। তবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার শর্ত প্রজোয্য। করোনা ভাইরাস সংক্রমণ বৃদ্ধির মুখে লকডাউন শিথিল করে গার্মেন্টস কারখানা চালু করার পর সীমিত আকারে শপিংমল খোলা রাখার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। যা করোনা আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বৃদ্ধির কারণ হতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

এদিকে দিন দিন বেড়েই চলেছে করোনায় আক্রান্ত ব্যাংকারের সংখ্যা। ঝুঁকি নিয়ে ব্যাংক চালু না রেখে বন্ধ ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন অনেকে। অন্যদিকে, সাধারণ ছুটির মধ্যে সীমিত ব্যাংকিং তুলে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগ ও মহানগর কমিটি। ব্যাংক লেনদেনের সময় বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে তারা। তাদের দাবি, ব্যাংক লেনদেনের সময় সীমিত হওয়ায় সাধারণ মানুষকে নানা দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিষয়টি ব্যবসা-বাণিজ্যের উপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এছাড়া স্বল্প সময়ের ব্যাংকিং করোনা বিস্তারেরও ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।

সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত কোভিড-১৯ এর শিকার হয়েছেন মোট ২৫ ব্যাংক কর্মকর্তা। তাদের মধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন একজন। তিনি বেসরকারি দি সিটি ব্যাংকের জনপ্রশাসন বিভাগে কর্মরত ছিলেন। আক্রান্ত ব্যাংকারেদের জন্য স্বাস্থ্য বীমার ব্যবস্থা করা হলেও স্বশরীরে অফিস করা মোটেও নিরাপদ নয়। তার উপর লকডাউন শিথীল করার সিদ্ধান্তে ভোগান্তি আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।

প্রজন্ম নিউজ/ নুর

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন





ব্রেকিং নিউজ