মিসরের ঐতিহ্যর অপরূপ নিদর্শন ‘আল মিনা মসজিদ

প্রকাশিত: ০৫ মে, ২০২০ ০৪:৩৫:৫৩

মিসরের ঐতিহ্যর অপরূপ নিদর্শন ‘আল মিনা মসজিদ

মিসরের ইতিহাস বেশ প্রাচীন, সমৃদ্ধ, এবং রহস্যময়। শত শত বছর ধরে মিসরে প্রচলিত ছিল বিভিন্ন ভাষা, আর তাই মিসরেরও ছিল বিভিন্ন নাম। সভ্যতার আদি ভূমি মিসর। মানব ইতিহাসের অনেক গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার এই মিশরেই হয়েছে। মিশর বলতেই আমাদের চোখের সামনে ভেসে উঠে পিরামিডের ছবি। তবে পিরামিড ছাড়াও কয়েক হাজার প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন মিশর জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে।

মুসলিম ইতিহাসের কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা মিশরে রয়েছে। তবে আজকে আপনাদের কাছে বর্ণনা করব মিশরের সদ্য নির্মিত এক মুসলিম স্থাপত্ব সম্পর্কে।

মিশরের রাজধানী কায়রো থেকে প্রায় ৫৫০ কি.মি. দূরত্বে লোহিত সাগরের (রেড-সি) তীরে অবস্থিত মিশরের আধুনিক এক ভ্রমণ ও বিলাস নগরী হুরগাদা। মিশরের প্রায় সব টুরিস্ট শহরই ইউরোপ ও আমেরিকার সুযোগ-সুবিধা ও ভোগবিলাস দিয়ে সাজানো হয়েছে। হুরগাদাও এর ব্যাতিক্রম নয়। তবে সম্প্রতি মিশর সরকার লোহিত সাগরের তীরে দৃষ্টিনন্দন এক মসজিদ নির্মাণ করেছে।

হুরগাদা আন্তর্জাতিক সমূদ্র বন্দরের সাথেই ৬ একর জায়গা জুড়ে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছে। আধুনিক সকল সুবিধাসহ ডিজাইনে বিশেষ ইসলামী প্রাচীন নকশা ব্যবহার করা হয়েছে। মূলত মসজিদে নববীর ডিজাইন অনুসরণ করে এর ডিজাইন করা হয়েছে। মসজিদের মূলকাঠামোতে একসাথে ৬ হাজার পুরুষ ও এক হাজার নারী নামাজ আদায় করতে পারবেন।

মসজিদ নির্মাণে ব্যবহার করা হয়েছে মূল্যবান শ্বেতপাথরের টাইলস, বিশেষ ডিজাইনের ইজিপশিয়ান কার্পেট, হাতে তৈরি কাচের জানালা, বিভিন্ন ধরনের মূল্যবান পাথর ইত্যাদি।

এছাড়া প্রায় ২৪টি ভাষার ইসলামি বই সম্বলিত বিশাল লাইব্রেরি রয়েছে। মসজিদে দৃষ্টিনন্দন ও মূল্যবান অনেকগুলো ঝাড়বাতি লাগানো হয়েছে। প্রধান ঝাড়বাতির ওজন প্রায় ৬০০ কেজি। সবচেয়ে অবাক করা যে বিষয় সেটি হলো মসজিদ ও লাইব্রেরি সকল ধর্মের মানুষের জন্য উন্মুক্ত।

মিশরের আল আযহার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে মসজিদটি পরিচালিত হয়। ইসলামের সাথে জঙ্গিবাদের যেকোন সম্পর্ক নেই সে বিষয়ে নিয়মিত সবাইকে অবহিত করা হয়। বিশেষ করে ভিন্নধর্মী মানুষদের জন্য তাদের নিজের ভাষায় ইসলাম ধর্মের শান্তিরবাণী প্রচারের জন্য বড় একটি টিম নিয়মিত কাজ করে।

মসজিদের খতিব ও প্রধান দায়ীত্বশীল কর্মকর্তা ডক্টর শেখ তারেখ আলসাইদ আহমদ জুমার দিন কয়েক ভাষায় খুতবা দেন। ইতোমধ্যেই রাশিয়ান ও ফ্রেঞ্চ ভাষায় খুতবা ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। অনেক অমুসলিম শুধু জুমার খুতবা শোনার জন্য মসজিদ কমপ্লেক্সে আসেন। বলে রাখা দরকার অমুসলিমদের খুতবা শোনার জন্য আলাদা ঘরে প্রজেক্টর ও সাউন্ডসিস্টেম রয়েছে। সম্প্রতি একজন আমেরিকান ইঞ্জিনিয়ার বেড়াতে এসে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে গেছেন।

অনেকে কল্পনা করে ছবিতে আকেন সাগরের মনোরোম নীল জলরাশির সাথে একটা সুন্দর মসজিদ। মিশর স্বপ্ন থেকে বাস্তবে নিয়ে এসেছে সেই স্বপ্ন। মনোরোম পরিবেশ ও ধর্মীয় আবহ একসাথে পেতে আপনাকে মিশরের হুরগাদা আল-মিনা মসজিদে ভ্রমণ করতে হবে।

প্রজন্ম নিউজ/ নুর

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন





ব্রেকিং নিউজ