করোনা প্রতিরোধে ‘ভিটামিন ডি’, কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?

প্রকাশিত: ২৪ এপ্রিল, ২০২০ ০৯:৪৬:০৫

করোনা প্রতিরোধে ‘ভিটামিন ডি’, কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?

করোনার মরণ থাবায় যখন গ্রাস বিশ্ব তখন এর থেকে রক্ষা পেতে বসন্ত ও গ্রীষ্মকালে মানুষকে ভিটামিন ডি গ্রহণ করতে পরামর্শ দিয়েছে ইংল্যান্ডের জনস্বাস্থ্য বিভাগ।

ভিটামিন ডি গ্রহণ করা মানুষের জন্য কঠিন কিছু নয়, শরীরে রোদ লাগলে আমাদের ত্বক ভিটামিন ডি তৈরি করে। ফলে মানুষ খুব সহজেই ভিটামিন ডি গ্রহণ করতে পারে। 

সূর্যালোক, ভিটামিন ও অন্যান্য উপাদান আমাদের শরীরকে সবল রাখতে সাহায্য করে এবং রোগ সংক্রমণ থেকে বাঁচায় - যা মহামারি পরিস্থিতিতে খুবই প্রয়োজনীয়।

কী পরামর্শ দিচ্ছে জনস্বাস্থ্য বিভাগ?
চীনের ইহান থেকে গত ফেব্রুয়ারিতেই বিশ্বে মহামারি আকারে ছড়িয়েছে করোনা। ফলে ইউরোপ ও পশ্চিমাসহ বিশ্বের অধিকাংশ দেশই লকডাউনে। ফলে  সূর্যালোকের সংস্পর্শে না আসা হয়, তাহলে সারা বছরই ১০ মাইক্রোগ্রাম করে ভিটামিন ডি খেতে বলেছে ইংল্যান্ডের জনস্বাস্থ্য বিভাগ।

তারা মনে করছে, করোনা ভাইরাসে লকডাউনের সময় মানুষকে ঘরে থাকতে বলার কারণে তারা সূর্যালোকের সংস্পর্শ বঞ্চিত এবং ফলে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ডি বঞ্চিত হতে পারে।

জনস্বাস্থ্য বিভাগ সারা বছর ভিটামিন ডি গ্রহণ করার উপদেশ দিয়ে থাকে, যদি:

>> আপনি নিয়মিত ভিত্তিতে ঘরের বাইরে না যান।
>> আপনি যদি বৃদ্ধনিবাসে থাকেন।
>> বাইরে গেলে আপনি এমন পোশাক পরেন, যা আপনার শরীরের অধিকাংশই ঢেকে রাখে।

আবার অপেক্ষাকৃত কৃষ্ণবর্ণের মানুষের ত্বকের পিগনেন্ট মেলানিন সূর্য থেকে যথেষ্ট পরিমাণ রশ্মি শোষণ করতে দেয় না, যার ফলে ত্বক প্রয়োজনীয় পরিমাণ ভিটামিন ডি তৈরি করতে পারে না।

কেন ভিটামিন ডি প্রয়োজন হয়?
সবল হাড়, দাঁত ও পেশীর জন্য ভিটামিন ডি দরকার হয়। ভিটামিন ডি'র অভাবে শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কদের হাড়ের সমস্যা তৈরি হতে পারে।

কিছু গবেষণায় ধারণা করা হয় যে যথেষ্ট পরিমাণ ভিটামিন ডি থাকলে সাধারণ সর্দিজ্বর ও ফ্লু'র বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করে, যদিও ভিটামিন ডি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে - এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

তাহলে কি প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ডি খাওয়া উচিত?
উত্তর হলো, না। ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট বা ট্যাবলেট খুবই নিরাপদ হলেও প্রতিদিন অতিরিক্ত পরিমাণ খেলে দীর্ঘমেয়াদে সমস্যা তৈরি হতে পারে।

আপনি যদি ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট নিতে চান:
>> ১-১০ বছরের শিশুদের দিনে ৫০ মাইক্রোগ্রামের বেশি নেয়া উচিত নয়
>> ১২ মাসের নিচে শিশুদের দিনে ২৫ মাইক্রোগ্রামের বেশি নেয়া উচিত নয়।
>> প্রাপ্তবয়স্কদের দিনে ১০০ মাইক্রোগ্রামের বেশি নেয়া উচিত নয়। 

যাদের ভিটামিন ডি'র স্বল্পতা রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে অনেক সময় ডাক্তাররা অতিরিক্ত ভিটামিন ডি গ্রহণ করতে বলে থাকেন। আবার বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা থাকলে - যেমন কিডনির সমস্যা - নিরাপদে ভিটামিন ডি নেয়া যায় না।

করোনা ঠেকাতে পারবে ভিটামিন ডি? যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা
ভিটামিন ডি গ্রহণ করলে কেউ করোনা ভাইরাস সংক্রমিত হবেন না, এমন কোন প্রমাণ নেই। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন মহামারির সময় এই ভিটামিন নেয়ার আলাদা উপকারিতা রয়েছে।

যুক্তরাজ্যে মেডিসিনের ইমেরিটাস প্রফেসর জন রোডস বলেন, ভিটামিন ডি শরীরের অভ্যন্তরীণ জ্বালাপোড়া কমাতে সহায়তা করে। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত অত্যন্ত অসুস্থ ব্যক্তির অভ্যন্তরীণ প্রদাহের কারণে ফুসফুসে বড় ধরণের ক্ষতি হয়, যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে কার্যকর হতে পারে ভিটামিন ডি।

তবে এই বিষয়ে আরো অনেক গবেষণা প্রয়োজন বলে মনে করেন অধ্যাপক রোডস।

খাদ্যাভ্যাসে কি পরিবর্তন আনতে হবে?
ভারসাম্যপূর্ণ সুষম খাদ্য খেলেই মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কার্যকর থাকে, আলাদা কোনো খাবার বা খাদ্য উপাদান রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার হঠাৎ উন্নতি সাধন করবে না।

ভিটামিন ডি খাবার থেকে যথেষ্ট পরিমাণ পাওয়া যায় না। তবে মাছ, ডিম, দইয়ের মত খাবারে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন ডি রয়েছে।

প্রজন্মনিউজ২৪/নুর

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ