শবে বরাত: উন্মুক্ত ক্ষমা ঘোষণার এক রাত

প্রকাশিত: ০৯ এপ্রিল, ২০২০ ১২:৩৪:৪২

শবে বরাত: উন্মুক্ত ক্ষমা ঘোষণার এক রাত

আজ পবিত্র শবে বরাত। এ রাত আমল ও ইবাদতের রাত। দুঃখের বিষয়, আমরা এ রাতে অনেক সময় সওয়াবের নিয়তে গোনাহ্ করে নিজেরাই ক্ষতিগ্রস্ত হই। অনেক সময় শরিয়ত ও সুন্নতের সীমারেখা অতিক্রম করে বসি।

শবে বরাতে মহল্লায় মহল্লায় ওয়াজ নসিহতের নামে অনুষ্ঠান করা হয় এবং তাতে অনেক লোকের সমাগম ঘটে। ওয়াজ করা ও শোনার কারণে রাত পার হয়ে যায়। ফলে বক্তা ও শ্রোতা উভয়ে ইবাদত-রিয়াজত, নামাজ ও তেলাওয়াত থেকে বঞ্চিত হয়।

তাই মসজিদে কিংবা মহল্লায় শবে বরাতকে উপলক্ষ করে যে ওয়াজ মাহফিলের ব্যবস্থা করা হয়, সেটি প্রকৃতপক্ষে খারাপ নয়। তবে খুব কম সময়ে শবে বরাতের মহিমা ও তার ফজিলত এবং কিভাবে শবে বরাতের আমল করবে, তার তরিকা বলে দ্রুত আলোচনা শেষ করার মাধ্যমে যার যার আমলের জন্য সময় দেয়া ইমামদের কর্তব্য।

শবে বরাতে বাসা-বাড়িতে মহিলারা বিভিন্ন হালুয়া-রুটি ও মিষ্টান্ন বণ্টনের রুসম দেখা যায়। এটি একদমই করা যাবে না। এটি করলে সওয়াব তো হবেই না, বিপরীতে গোনাহ হবে। এছাড়া বিভিন্ন জায়গায় আলোকশয্যা, আতশবাজি, বোমা-পটকা ফোটানো এখন শবে বরাতের কুপ্রথায় পরিণত হয়েছে। এটিও পরিত্যাজ্য।

শবেবরাত মূলত ক্ষমা চাওয়ার রাত, ভাগ্য পরিবর্তনের রাত। বিগলিত হৃদয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইলে আল্লাহ তাকদিরও বদলে দেন বলে হাদিসে আছে। আশরাফ আলী থানভী রহ. লিখেছেন, এক মূর্খ ব্যক্তি ইবাদত করে উচ্চ মাকামের অধিকারী হন এবং সব সময় আল্লাহর দরবারে কান্নাকাটি করে নিজের জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করেন। একদিন গায়েবি এক আওয়াজের মাধ্যমে তাকে জানিয়ে দেয়া হলো-‘কান্নাকাটি করে লাভ নেই, তোমার ক্ষমা হবে না।’ এই আওয়াজ শুনে সে আরো অধীরচিত্তে আল্লাহর শরণাপণ্য হন।

এই ঘটনা লোকে জানাজানি হলে সবাই তাকে জিজ্ঞেস করলো, ‘যখন তোমাকে ক্ষমা করা হবে না বলে জানিয়েই দেয়া হয়েছে, তখন এত ইবাদতে কী লাভ?’

উত্তরে লোকটি বললেন, ‘আমার কাজ আমি করছি। আমার তো অন্য কোথাও যাওয়ার ঠাঁই নেই। আমার কাজ আমাকে করতেই হবে।’ সেই মুহূর্তে গায়েবি আওয়াজে তাকে আবারও জানিয়ে দেয়া হলো, ‘যদিও তোমার মধ্যে কোনো ক্ষমাযোগ্য আমল নেই, কিন্তু তুমি আমাকে ছাড়া আর কোথাও আশ্রয় চাওনি, তাই তোমাকে ক্ষমা করে দিলাম।’

বুখারী শরীফের এক হাদিসেও এমন একটি ঘটনা পাওয়া যায়।হাদিসে আছে, এক ব্যক্তি মৃত্যুর সময় সন্তানদের অসিয়ত করে গেলেন মৃত্যুর পর যেন তাকে দাফন না করে আগুনে জ্বালিয়ে দেয়া হয়। এরপর ছাইগুলো বাতাসে উড়িয়ে দেয়া হয়। কারণ, লোকটি ছিল তার ভাষায় মারাত্মক অপরাধী। তার মতো অপরাধী দ্বিতীয় কেউ নেই। আল্লাহর সামনে যেন তাকে না দাঁড়াতে হয়, এজন্য তিনি দাফন না করে আগুনে জ্বালিয়ে দেয়ার অসিয়ত করেছেন।

অসিয়ত অনুযায়ী মৃত্যুর পর লোকটিকে তাই করা হলো। এরপর আল্লাহর হুকুমে বাতাসে উড়তে থাকা ছাইগুলোকে একত্র করে আবার তাকে মানবাকৃতিতে আল্লাহর সামনে দাঁড় করানো হলো। তাকে বলা হলো, ‘কেন তুমি এই খোদাদ্রোহী অসিয়ত করেছ? আমি কি ছাই থেকে তোমার দেহ উপস্থিত করতে সক্ষম নই?’

লোকটি উত্তর দিলো, ‘হে আল্লাহ, আপনি তো জানেন, আমি বড় গোনাহগার। আমার অপরাধ, বিশ্বাসঘাতকতা ও অকৃতজ্ঞ চেহারা নিয়ে কিভাবে আপনার সামনে দাঁড়াবো, আপনার আজাবের ভয়েই আমি এই অসিয়ত করেছিলাম।কিন্তু আপনি তো ক্ষমাকারী। আমার অপরাধকে মার্জনা করবেন।’

প্রজন্মনিউজ২৪/নুর

এ সম্পর্কিত খবর

তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে বাঁচবে হাজারও কোটি টাকার সম্পদ

সরদার পাড়া দারুল কোরআন মডেল মাদ্রাসার পরিক্ষার ফল প্রকাশ

চলতি বছর পবিত্র হজ্জ পালনের অনুমতি দেওয়া শুরু করেছে সৌদি আরব

ইসরায়েল থেকে বিনিয়োগ প্রত্যাহারের দাবিতে মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন

অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ চুয়েট, শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ

রোববার থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ

বশেমুরবিপ্রবিতে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন

যেকোনো উপায়ে ক্ষমতায় যেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে বিএনপি: কাদের

অতিরিক্ত লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে কৃষকের জনজীবন

যুদ্ধকে ‘না’ বলুন, সংলাপের মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তি করুন: প্রধানমন্ত্রী

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন





ব্রেকিং নিউজ