দুদক পরিচালকের ছেলের ফেসবুকে আবেগঘন স্ট্যাটাস


দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পরিচালক জালাল সাইফুর রহমান। গতকাল সোমবার রাজধানীর কুয়েত-মৈত্রী হাসপাতালে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তার মৃত্যুর সময় ছেলে তার স্ত্রী ও ছেলে ছিলেন সেলফ আইসোলেশনে।

জালাল সাইফুর রহমান ছিলেন চট্টগ্রামের সন্তান। নগরীর পাঁচলাইশ থানার বাদুরতলা এলাকায় তার বাড়ি। মৃত্যুর সময় তার বয়স হয়েছিল ৫৩ বছর।

প্রয়াত দুদক কর্মকর্তার একমাত্র সন্তান সামিন রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে পড়ছেন। সবাইকে ঘরে থাকার আকুতি জানিয়ে সোমবার রাতে তিনি ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন। সেখানে তিনি লিখেছেন—

‘আমার বাবা (জালাল সাইফুর রহমান, পরিচালক, দুদক) আজকে সকালে সাড়ে ৭টার দিকে কার্ডিয়াক এরেষ্টের কারণে মৃত্যুবরণ করেন (ইন্নালিল্লাহি…রাজিউন)। উনি গত ৩০শে মার্চ করোনা ভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়ে উত্তরার কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

তবে আমার মৃত্যুর সংবাদ নিয়ে লেখা প্রতিবেদনেও অনেক ভুল-ভ্রান্তি চোখে পড়ে। সে ভুল-ভ্রান্তিগুলো আমি একটু তুলে ধরতে চাই

১ আমি তার একমাত্র সন্তান ছিলাম, আমার কোন ভাই বোন নেই
২ আমি এবং আমার আম্মু দুজনই পরিপূর্ন রূপে সুস্থ আছি।
৩ আমারা গত ৭দিন সেল্ফ আইসোলেশনে আছি, কোন হাসপাতালে না। আমাদের দুইজনকে আরও ৭ দিন সেল্ফ আইসোলেশনে থাকতে হবে। (সেল্ফ আইসোলেশন বলতে ঘরের মধ্যে নিজেকে আলাদা করে রাখা, কারো সাথে দেখা সাক্ষাৎ কিনবা মেলামেশা না করা।)

সেল্ফ আইসোলেশনের কারণে না বাবার জানাজার অংশ নিতে পেরেছি, না বাবাকে কবর দেওয়ার অংশ হতে পেরেছি, এর চেয়ে কঠিক কিছু আর নেই। উনাকে আজ ৪টার দিকে আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়।

আমার বাবা একজন সৎ ও নিষ্ঠাবান মানুষ ছিলেন। উনার আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।

আমার বাবা জীবিকার তাগিদে সরকারি আদেশ না আসা পর্যন্ত ২২শে মার্চ পর্যন্ত অফিস করেছিলেন। তারপর থেকে তিনি বাসাতেই ছিলেন কিন্তু তবুও রক্ষা পাননি। তাই এখনও যারা ঘরে থাকার বিধি-নিষেধ মানছেন না, তাদের সবাইকে ঘরে থাকার অনুরোধ জানাচ্ছি। আমি ব্যক্তিগত ভাবে চাই না বর্তমানে এই মূহুর্তে আমার এবং আমার পরিবারের উপর দিয়ে যা যাচ্ছে সেটা আমার শত্রুকেও মোকাবেলা করতে হোক।

প্রজন্মনিউজ২৪/নুর