নিম্ন-মধ্যবিত্তদের ঘরে ঘরে খাবার পৌঁছে দেওয়া হবে

প্রকাশিত: ০৭ এপ্রিল, ২০২০ ০৩:০৬:৪০

নিম্ন-মধ্যবিত্তদের ঘরে ঘরে খাবার পৌঁছে দেওয়া হবে

সরকারি সেফটিনেটের বাইরে থাকা নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষের ঘরে খাবার পৌঁছে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি এ বিষয়ে তালিকা তৈরি করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ মাঠ প্রশাসনকে নির্দেশনা দিয়েছেন। 

মঙ্গলবার (৭ এপ্রিল) চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের ১৫ জেলার সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশনা দেন। জনপ্রতিনিধি ও মাঠ প্রশাসনকে নির্দেশনা দিয়ে তিনি বলেন, ‘যাদের যাদের আমরা সামাজিক নিরাপত্তায় সাহায্য দিচ্ছি তার বাইরে যারা আছে, যারা হাত পাততে পারবেন না তাদের তালিকা করে ঘরে খাবার পৌঁছে দেওয়া হবে। এই কাজটা আপনারা করবেন।’

করোনা মোকাবিলায় ভূমিকা রাখায় মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যেহেতু মানুষ স্বাভাবিক জীবনযাত্রা করতে পারছে না, কাজ করে খেতে পারছে না, অনেকের জীবন-জীবিকা বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম, যারা দিন এনে দিন খায়, ছোটখাটো ব্যবসা করে যারা খেতো তাদের কাজগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এ ধরনের মানুষকে অনেক কষ্ট সহ্য করতে হচ্ছে এখন।

আমরা আমাদের সাধ্যমতো কাজ করে যাচ্ছি। ১০ টাকার চাল বিতরণ করছি। বাড়ি বাড়ি খাবার পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করছি। আমাদের সামাজিক সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা যেমন বিভিন্ন ধরনের ভাতা অব্যাহত থাকবে। কিন্তু ১০ টাকার চালের রেশন কার্ডের বাইরেও যারা এই চাল কিনে খেতে চায়, তাদের জন্য ব্যবস্থা করবো। অর্থাৎ সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থার বাইরে যারা উপার্জন করে খেতো কিন্তু সেই উপার্জনের পথ বন্ধ হয়ে গেছে তারা যেন ছেলেমেয়ে নিয়ে কষ্ট না করে। তাদের খুঁজে বের করতে হবে। তাদের তালিকা করতে হবে। নিম্নবিত্ত মধ্যবিত্ত যারা উপার্জন করতে পারছে না, তাদের জন্য দশ টাকার চালের রেশন কার্ডটা করে দিতে হবে।’ 

তালিকা তৈরিতে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা র‍্যানডম করতে থাকলে দেখা যাবে যেসব ব্যক্তির কার্ড আছে সেগুলো কেউ কিনে নিয়ে নয়-ছয় করে ফেলছে। ঠিক সুনির্দিষ্ট লোকটির কাছে পৌঁছাচ্ছে না।

এখন সবার জাতীয় পরিচয়পত্র আছে। সেটার ভিত্তিতে আমরা যদি সবাইকে কার্ড করে দেই, তাহলে আমরা তাদের কাছে তা পৌঁছে দিতে পারবো।’

সামগ্রী বিতরণের ওয়ার্ডভিত্তিক কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, ‘সংসদ সদস্য থেকে শুরু করে বিভিন্ন পর্যায়ে আমাদের যে জনপ্রতিনিধিরা আছে, সবাইকে নিয়ে কমিটি করতে হবে। এই কমিটি ভিজিডি-ভিজিএসহ বিভিন্ন ভাতা যারা পাচ্ছেন তাদের  বাদ দিয়ে যে শ্রেণি আছে, যারা নিজেরা খেটে খেতো তাদের তালিকা তৈরি করতে হবে।

এদের অনেকে হাত পাততে আসবে না। অনেকে চাইতে আসবে না, তারা মুখ বুজে কষ্ট সহ্য করবে। তারা যেন কষ্টে না থাকে। এজন্য তাদের বাড়িতে বাড়িতে খাবার পৌঁছে দিতে হবে। এক্ষেত্রে প্রশাসনকে উদ্যোগ নিতে হবে এবং আমাদের জনপ্রতিনিধিরা থাকবেন প্রত্যেক জায়গায়। এই তালিকাটা এমনভাবে করতে হবে, যাতে সত্যিকারের যার অভাব রয়েছে, কষ্ট পাচ্ছে, তাদের নাম যেন তালিকায় থাকে। তারা যেন সাহায্যটা পায়। আমরা তাদের ঘরে ঘরে খাবার পৌঁছে দেবো। বাচ্চা-কাচ্চা নিয়ে যেন তারা কষ্ট না পায়, সেই ব্যবস্থাটা আমাদের করতে হবে।’

মাঠ প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের মাটি আছে, মাটি উর্বর। আমাদের মানুষ আছে, এখন অনেকে বেকার বসে আছেন গ্রামে চলে গেছেন। কারও ঘরে এতটুকু মাটি যেন অনাবাদি না থাকে। ফলমূল, শাকসবজি, শস্য লাগান। যা পারেন কিছু না কিছু লাগান। কিছু কিছু উৎপাদন করেন। এই যে করোনা প্রভাব এতে ব্যাপকভাবে খাদ্যাভাব দেখা দেবে বিশ্বব্যাপী।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে যে দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছিল, সেরকম অবস্থা হতে পারে। এক্ষেত্রে আমরা উৎপাদন বাড়িয়ে নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে উদ্বৃত্ত থাকলে অন্যদের সাহায্য করতে পারবো। এটা মনে রেখে আমাদের সবার উদ্যোগ নেওয়া উচিত।’ 

প্রজন্মনিউজ২৪/নুর

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ