সন্দ্বীপে পান চাষে বিপুল সম্ভাবনা

প্রকাশিত: ০৭ এপ্রিল, ২০২০ ১০:০৮:২১

সন্দ্বীপে পান চাষে বিপুল সম্ভাবনা

সন্দ্বীপে বাসায় মেহমান বা আত্মীয়-স্বজন এলে তাদের সর্বপ্রথম পান দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়। পান ছাড়া বিয়ে-শাদি ও পূজা-পার্বণ হয় না। একসময় সন্দ্বীপের মানুষ বিশ্বাস করতো, বাড়ি থেকে মেহমান খালি মুখে বিদায় নিলে গৃহস্থের অমঙ্গল হয়। তাই আর কিছু না হোক অন্তত একটি পান খাওয়ানো চাই।

একসময় সন্দ্বীপ থেকে প্রচুর পান রফতানি হতো। পান উৎপাদনে সন্দ্বীপের অনেক খ্যাতি ছিল। সন্দ্বীপের পান নোয়াখালী, ফেনী ও চট্টগ্রাম শহরে যেত। কিন্তু এখন মানুষ বেড়ে গেছে। তাই সন্দ্বীপের চাহিদাই পূরণ করা যায় না। উল্টো চট্টগ্রাম শহর ও বরিশাল থেকে পান আসে। পান রফতানিকারক ভূখণ্ডটি এখন পরিনত হয়েছে পান আমদানিকারক ভূখণ্ডে।

সরেজমিনে জানা যায়, সন্দ্বীপ থানা এলাকা, মুছাপুর পণ্ডিতের হাট, হিন্দুপাড়া ধাম ও হারামিয়া এলাকায় প্রচুর পানের বরজ গড়ে উঠেছে। সন্দ্বীপে ১৫-১৬ হেক্টর জমিতে পানের বরজ আছে। পানচাষিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তাদের দুর্দিন চলছে। তাছাড়া পানচাষিরা পান বিক্রি করে খুব একটা লাভের মুখ দেখতে পান না। দিন দিন পানের বরজ কমে যাচ্ছে। প্রয়োজনের তুলনায় নতুন পানের বরজ না হওয়ায় হারিয়ে যেতে বসেছে সন্দ্বীপের ঐহিহ্যবাহী পানের আবাদ।

jagonews24

এদিকে পান চাষ শ্রমসাধ্য ও ব্যয়বহুল হওয়ায় চাষিরা পান চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। পান চাষের মতো জটিল ও কষ্টসাধ্য আবাদে বর্তমানে দক্ষ শ্রমিক খুব একটা পাওয়া যায় না। যদিও এলাকার জমিতে ধান বা সবজি চাষের চেয়ে পান চাষই লাভজনক। তাই পান চাষে বিপুল অর্থনৈতিক সম্ভাবনা রয়েছে।

পানচাষিরা জানান, বাঁশের দাম অনেক, সার ও কীটনাশকের মূল্য চড়া এবং পরিবহন ব্যয়ও বেড়েছে। সব মিলিয়ে পানচাষিরা পূর্বপুরুষের ঐতিহ্য এখন ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন। এদিকে পানের বরজের অন্যতম প্রধান খাদ্য সরিষার খৈল- যার প্রতিকেজির মূল্য ৭০-৮০ টাকা। সেই খৈল বাড়িতে এনে হাতে গাইল বা ঢেঁকিতে গুঁড়া করে ১ মাস অন্তর পান গাছের গোড়ায় দিয়ে বাইরে থেকে মাটি এনে ঢেকে দিতে হয়।

এরপর একটি পানের বরজে চারদিকে ঘরের মতো বেড়া দিয়ে ওপরে ছাউনি দিতে হয়। যাতে রোদ, বৃষ্টি, কুয়াশা ও পাখি থেকে পানকে রক্ষা করা যায়। অভাব, নানা দুর্যোগ ও উৎপাদন খরচ বাড়ার কারণে পান চাষে কৃষকরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। বরজে বর্ষাকালে পচন রোগ, সাদা মাছি ও কালো শুষক পোকার আক্রমণ দেখা দিলে কৃষি অফিস থেকে কোনো ধরনের সহযোগিতা পাওয়া যায় না। তাই অনেকেই জীবন-জীবিকার তাগিদে পারিবারিক ঐতিহ্য ছেড়ে অন্য পেশায় যুক্ত হচ্ছেন।

jagonews24

কলেজছাত্র আবদুল কাদের প্রান্ত জাগো নিউজকে বলেন, ‘দাদির জন্য পান কিনতে হয় সবসময়। দাদি বলে রাখেন, দেশি পান (সন্দ্বীপের পান) আনার জন্য। কারণ এ পান সুস্বাদু। আমরা একসময় দেখতাম, পানের বরজ থেকে বেপারিরা সাইকেলে করে নিয়ে যেত বিক্রির জন্য। কিন্তু এখন আর এ দৃশ্য চোখে পড়ে না। সন্দ্বীপে পান চাষ ক্রমান্বয়ে কমে যাচ্ছে।’

অন্যের জমি বর্গা নিয়ে চাষ করেন নিতাই চন্দ্র দাস। তিনি বলেন, ‘আমাদের পূর্বপুরুষরা পান চাষ করতেন। তা ধরে রাখার জন্য আজও করছি। ৫শ’ টাকার নিচে একজন শ্রমিক পাওয়া যায় না, পান চাষ করার জন্য যেসব উপকরণ দরকার তার দাম অনেক বেশি। পানের বরজে যা খরচ করি, তার সিংহভাগও বিক্রি করে পাই না। ভাবছি পান চাষ ছেড়ে দেবো।’

প্রজন্মনিউজ২৪/নুর

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



A PHP Error was encountered

Severity: Notice

Message: Undefined index: category

Filename: blog/details.php

Line Number: 417

Backtrace:

File: /home/projonmonews24/public_html/application/views/blog/details.php
Line: 417
Function: _error_handler

File: /home/projonmonews24/public_html/application/views/template.php
Line: 199
Function: view

File: /home/projonmonews24/public_html/application/controllers/Article.php
Line: 87
Function: view

File: /home/projonmonews24/public_html/index.php
Line: 315
Function: require_once

বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ