চাচা শ্বশুরের পাশ‌বিকতার ভয়াবহ বর্ণনা দিলেন গৃহবধূ


চাচা শ্বশুরের পাশ‌বিকতার ভয়াবহ বর্ণনা দিলেন গৃহবধূ

চাচা শ্বশুরের পাশবিকতায় গর্ভবতী হওয়া, মামলা দিয়ে উল্টো জেল খাটা এবং অপহরণের পর অন্ত্রের মুখে সন্তান প্রসব করাসহ আদালতে সব ঘটনার ভয়াবহ বর্ণনা দিয়েছেন নির্যাতিতা গৃহবধূ।

রোববার (২২ মার্চ) নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২২ ধারায় ওই গৃহবধূর জবানবন্দি রেকর্ড করেন ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তানিয়া ইসলাম।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, চাচা শ্বশুরের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করায় গত ৯ ডিসেম্বর ফেনীর আদালত পাড়া থেকে অপহরণের শিকার হন উপজেলার ছাড়াইকান্দি এলাকার ওমান প্রবাসীর স্ত্রী। গত ১৪ মার্চ সদর উপজেলার শর্শদী ইউনিয়নের পূর্ব দেবীপুর এলাকার একটি বাসা থেকে তাকে উদ্ধার করে পুলিশ।

রোববার নির্যাতিতা ওই নারী আদালতকে জানান, গত বছরের ১৮ জুন ঘরে অন্য কেউ না থাকায় তাকে একা পেয়ে ধর্ষণ করেন বড় চাচা শ্বশুর শফিউল্লাহ। পরে চিকিৎসকের কাছে গিয়ে জানতে পারেন তিনি গর্ভবতী। এ ঘটনায় শফিউল্লাহকে আসামি করে গত ২২ নভেম্বর সোনাগাজী মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। মামলার পর হুম‌কির মু‌খে এলাহিগঞ্জ এলাকার স্বপন নামের এক মামার বাড়িতে আশ্রয় নেন। স্বপনের সঙ্গে চাচা শ্বশুরের ছেলে রিয়াদের যোগসাজশে গত ২৬ নভেম্বর অভিযুক্ত শফিউল্লাহ ফেনীর আদালতে হাজির হয়ে জামিন প্রার্থনা করেন। এ সময় আমার কাছ থেকে স্বাক্ষর নেয়া একটি কাগজ আদালতে জমা দেয়া হয়। আদালত আসামিকে জামিন দিয়ে আমাকে ১৫ দিনের জন্য কারাগারে পাঠান। এরপর কারাগার থেকে বের হলে স্বপন ও রিয়াদ জামিন করিয়েছে বলে দেবিপুর এলাকার একটি বাসায় নিয়ে যান। দু’দিন পর ট্রাংক রোডের একটি হাসপাতালে নিয়ে তারা দু’জনসহ আরও একজন মিলে আমাকে জোরপূর্বক ওষুধ খাইয়ে ও ইনজেকশন দিয়ে অচেতন করলে সন্তান প্রসব হয়। পরবর্তীতে ওই বাসায় নিয়ে আটকে রাখে।

সূত্র আরও জানায়, বিচারক জবানবন্দি রেকর্ড শেষে নির্যাতিতাকে সোনাগাজী আমলী আদালতের বিচারক ধ্রুব জ্যোতি পালের আদালতে পাঠান। এখানে ভিকটিমকে অ্যাডভোকেট এম. শাহজাহান সাজুর জিম্মায় জামিন প্রদান করেন। একইসঙ্গে আগামী ১৩ এপ্রিল পুলিশকে রিপোর্ট দেয়ার নির্দেশ দেন।

এ বিষয়ে অ্যাডভোকেট শাহজাহান সাজু জানান, অসহায় এ ভুক্তভোগী গৃহবধূকে ন্যায়বিচার পাইয়ে দিতে বিনা পারিশ্রমিকে আইনী সহায়তা নিয়ে পাশে থাকবেন তিনি।
আর এ ধর্ষণের ঘটনায় চাচা শ্বশুর হাজী শফিউল্লাহর বিরুদ্ধে করা ভুক্তভোগী গৃহবধূর করা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদনের কাজ প্রায় শেষ পর্যায় বলে জানিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা সোনাগাজী মডেল থানার এসআই মো. আনোয়ার হোসেন।


অন্যদিকে ভিকটিমকে অপহরণ করে অস্ত্রের মুখে গর্ভপাত ঘটানোর সঙ্গে যাদের নাম উঠেছে তাদের আইনের আওতায় আনতে চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।

প্রজন্মনিউজ২৪/মারুফ