নিজেকে বদলাবেন কীভাবে


আপনি কি নিজের ভুল নিজে ধরতে পারেন? নাকি নিজের কাজ সবই সঠিক হবে বলে মনে হয়? এমনটা কি মনে হয়, আপনি কোনো ভুল করেন না। আপনি যা করেন তা সবই সঠিক।

আপনি যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে চিন্তা করেন? নাকি হুটহাট সিদ্ধান্ত নেন? আপনি কি হুজুগে গা ভাসান? আপনি কান-কথায় বিশ্বাস করেন? আপনি অন্যের কথায় প্রভাবিত হন? অন্যেরা কি আপনাকে ভুল বোঝাতে পারে?  

বড় কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আপনি কি কারো সঙ্গে পরামর্শ করেন? নাকি অন্যের পরামর্শ নিলেও কাজটা নিজের বুদ্ধিতেই করেন? নাকি অন্যের বুদ্ধিতে কাজ করে আপনি বিপদে পড়েছেন বলে আর কারো বুদ্ধি নেন না?

লেখার শুরুতেই প্রশ্নের পর প্রশ্ন। আপনি যখন লেখাটি পড়ছেন তখন হয়তো আপনি ভাবতে পারেন, আমি এতো এতো প্রশ্ন কেন করছি? করছি এ কারণে যে, আপনার নিজের ভেতরেও প্রশ্ন জাগতে হবে। যার ভেতরে প্রশ্ন জাগবে না সে কখনোই সঠিক পথনির্দেশনা পাবে না।

এ প্রসঙ্গে একটা গল্প বলি। এক শিক্ষক ক্লাশে এক ছাত্রকে বললেন, তোর লেখায় এতো ভুল থাকে কেন? তোর মনে কখনো প্রশ্ন জাগে না, তুই ভুল লিখছিস, না শুদ্ধ লিখছিস?

'না স্যার। কোনো প্রশ্নই জাগে না।'

'তাহলে তো তুই ভুলই লিখবি।'
 
আপনি যে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে দশবার ভাবুন। আপনি ভুল না সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা নিয়ে চিন্তা করুন।

ধরুন, আপনি একজন বেকার যুবক। আপনি লেখাপড়া শেষ করে চাকরির জন্য ঘুরছেন। কিন্তু আপনার চাকরি হচ্ছে না। আপনার বন্ধুদের সবার চাকরি হয়ে গেছে। আর আপনি চাকরির পেছনে ছুটে জুতার সুখতলা ক্ষয় করছেন। আপনি কি একবারও ভেবেছেন, আপনার ভুল কোথায়? আপনার বন্ধুদের চাকরি হলে আপনারটা কেন হবে না?

আপনার বন্ধুর কাছে একবার জিজ্ঞাসা করুন তো, কিভাবে তার চাকরি হয়েছে? সে নিশ্চয়ই লেখাপড়া শেষ করে বসে থাকেনি। সে চাকরির জন্য নিজেকে তৈরি করেছে। আর আপনি হয়তো ভেবেছেন, আপনি এমএ পাস করেছেন। এখন চাকরি আপনার কাছে ছুটে আসবে।

আপনি কি একবারও ভেবে দেখেছেন, আপনার কি ধরনের বদ অভ্যাস আছে? আপনি হয়তো দেরিতে ঘুম থেকে ওঠেন। আপনি পত্রিকা পড়েন না। আপনি লেখাপড়া শেষ করেই বইকে ছুটি দিয়েছেন। আর বইয়ের ধারে-কাছেও যান না।

আপনার পোশাক-আশাক, আপনার চলাফেরা, আপনার কথা বলার ধরন হয়তো অন্যকে আকৃষ্ট করে না। আপনি এ বিষয়ে আপনার কাছের কোনো বন্ধুর সহায়তা নিন। তাকে প্রশ্ন করুন, তার চোখে আপনার ভুলগুলো কি কি? তারপর সেগুলো শোধরাবার চেষ্টা করুন।

এমনও হতে পারে, আপনি লেখাপড়ায় তুখোর। কিন্তু আপনার পোশাক-আশাক রুচিসম্মত নয়। অথবা আপনার বাচনভঙ্গি সুন্দর না। কাজেই আপনি পরীক্ষায় খুব ভালো করলেও বাদ পড়ে যেতে পারেন।

আমার মনে হয়, সবার আগে নিজের ভুলগুলো নিজেকেই বুঝতে হবে এবং সেগুলো শোধরাতে হবে। আপনি চাকরি করুন, লেখালেখি করুন কিংবা সাংবাদিকতা করুন। আপনাকে সবার আগে নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে। নিজে তৈরি না হলে আপনি কোনো কাজেই খুব বেশিদূর যেতে পারবেন না।

মনে রাখবেন, পৃথিবীতে কোনো কাজই সহজ না, আবার কোনো কাজই কঠিন না। আপনি যে কাজের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করবেন সেই কাজটা আপনার কাছে সহজ হবে। সেটা বুঝেই আপনাকে অগ্রসর হতে হবে। তাহলেই আপনি সফল হবেন।