বাংলাদেশ ব্যাংক দেবে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের টাকা


দেশে কার্যরত প্রতিটি তফসিলি ব্যাংক পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে নিজস্ব তহবিল গঠনের পাশাপাশি ট্রেজারি বিল অথবা বন্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে অর্থ সংগ্রহ করতে পারবে।

সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংক এবিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে সকল তফসিলি ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠিয়েছে।

আর্থিক খাতের প্রধান মধ্যস্থতাকারী হিসেবে পুঁজিবাজারে তফসিলি ব্যাংকসমূহের বিনিয়োগের নির্দিষ্ট সীমা ব্যাংক কোম্পানী আইন, ১৯৯১ (২০১৮ পর্যন্ত সংশোধিত) এর ২৬ক ধারায় বিধৃত আছে। দেশের পুঁজিবাজার এবং মুদ্রাবাজারের মধ্যে যোগসূত্র স্থাপনকারী হিসেবে তফসিলি ব্যাংকগুলোর ভূমিকা অনস্বীকার্য। সে হিসেবে পুঁজিবাজারের অস্বাভাবিক উত্থান-পতন ব্যাংকগুলোর আর্থিক অবস্থাকে প্রভাবিত করে।

দেশের পুঁজিবাজারে বিরাজমান অবস্থার প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন অংশীজনের মতামত এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব পর্যালোচনায় পরিস্থিতি উন্নয়নে অন্যান্য ব্যবস্থাদি গ্রহণের পাশাপাশি বাজার মধ্যস্থতাকারীদের তারল্য সহায়তা প্রদানের বিষয়টি বিশেষ গুরুত্বলাভ করেছে। সার্বিক বিষয় বিবেচনান্তে পুঁজিবাজারে ক্রমাগত তারল্য প্রবাহ বজায় রাখার জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অধীনে তফসিলি ব্যাংক, তফসিলি ব্যাংকসমূহের ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইন, ১৯৯৩-এর অধীনে গঠিত আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের পুঁজিবাজার সংক্রান্ত সাবসিডিয়ারী প্রতিষ্ঠান (মার্চেন্ট ব্যাংক ও ডিলার লাইসেন্সধারী ব্রোকারেজ হাউজ) এবং অন্যান্য মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউজ (ডিলার)-কে শুধুমাত্র পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে বিশেষ ব্যবস্থায় তহবিল সরবরাহের নিম্নোক্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে:

প্রতিটি তফসিলি ব্যাংক পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে নিম্নের যেকোনো উপায় অবলম্বন করে সর্বোচ্চ ২০০ কোটি টাকার একটি বিশেষ তহবিল গঠন করতে পারে - নিজস্ব উৎস হতে তহবিল যোগানের মাধ্যমে, অথবা ধারণকৃত ট্রেজারি বিল অথবা বন্ড রেপোর মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক হতে প্রয়োজনীয় তহবিল সংগ্রহের মাধ্যমে, অথবা প্রথমে নিজ উৎস হতে তহবিল গঠন করে পরবর্তীতে ট্রেজারি বিল অথবা বন্ড রেপোর মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক হতে উক্ত পরিমাণ অর্থ সংগ্রহের মাধ্যমে।

এ তহবিল হতে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ ব্যাংক কোম্পানী আইন, ১৯৯১ (২০১৮ পর্যন্ত সংশোধিত)-এর ২৬ক ধারায় বর্ণিত বিনিয়োগ সীমার অতিরিক্ত হিসেবে বিবেচিত হবে এবং সোলো আই কনসোলিডেটেড উভয় ভিত্তিতে পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ হিসাবায়নের অন্তর্ভুক্ত হবে না। এ সুবিধা ফেব্রুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।

ব্যাংকসমূহ ২০২৫ সালের ১৩ জানুয়ারি পর্যন্ত যে কোন কার্যদিবসে রেপোর মাধ্যমে দুইশত কোটি টাকার সীমার মধ্যে যে কোন অংকের তহবিল বাংলাদেশ ব্যাংক হতে সংগ্রহ করতে পারবে। রেপোর সুদের হার ৫ শতাংশ  নির্ধারিত থাকবে এবং কোন প্রকার অকশনের প্রয়োজন হবে না।

ব্যাংকসমূহের অতিরিক্ত তারল্য হতে ট্রেজারী বন্ড বা বিল রেপোর মাধ্যমে এই তারল্য সুবিধা গ্রহণ করতে হবে। ট্রেজারি বন্ড বা বিলের রেপো মূল্যের ৫% মার্জিন হিসেবে রেখে তারল্য সুবিধা প্রদেয় হবে। নগদে রেপোর অর্থ পরিশোধে ব্যর্থতার ক্ষেত্রে মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখে সংশ্লিষ্ট সিকিউরিটিজের বাজারমূল্য আদায়যোগ্য অর্থ অপেক্ষা কম হলে তা ইতোপূর্বে গৃহীত মার্জিন হতে সমন্বয় করা হবে এবং সমন্বয়ের জন্য অতিরিক্ত অর্থের প্রয়োজন হলে ব্যাংক তা প্রদান করতে বাধ্য থাকবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক হতে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের চাহিদা অনুসারে সর্বোচ্চ ৯০ দিন মেয়াদি রেপো প্রদান করা হবে। এক্ষেত্রে চাহিদাকৃত দিনের বেশি মেয়াদ রয়েছে বা কুপন পেমেন্ট ডেট চাহিদাকৃত দিনের বেশি রয়েছে এরূপ সিকিউরিটিজ ব্যবহার করতে হবে। উক্ত রেপো বর্ণিত সময়সীমা অর্থাৎ ২০২৫ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।

প্রজন্মনিউজ২৪/রেজাউল