জিয়া, এরশাদ, খালেদা- কেউ এ মাটির সন্তান না: শেখ হাসিনা

প্রকাশিত: ০৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২০ ১২:৫৫:৩৮

জিয়া, এরশাদ, খালেদা- কেউ এ মাটির সন্তান না: শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশে এ পর্যন্ত যারা ক্ষমতায় এসেছেন, তাদের মধ্যে কেবল তিনি এবং তার বাবা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই এ মাটির সন্তান ছিলেন, এবং সে কারণেই তিনি ত্যাগ স্বীকার করেও জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের চেষ্টা করে যাচ্ছেন।

ইতালি সফরের প্রথম দিন মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রোমের পার্কো দে প্রিন্সিপি গ্র্যান্ড হোটেলে ইতালি আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তার এ মন্তব্য আসে।

শেখ হাসিনা বলেন, “জিয়াউর রহমানের জন্ম বিহারে, এরশাদের (এইচ এম এরশাদ) জন্ম কুচবিহারে, খালেদা জিয়ার জন্ম শিলিগুড়ি। একজনও এই মাটির সন্তান না।

 “এই মাটির সন্তান এখন পর্যন্ত যতজন ক্ষমতায় এসেছে, একমাত্র আমার বাবা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু এবং আমি শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মাটির সন্তান। যেহেতু আমাদের মাটির টান আছে, এইজন্য আমাদের একটা কর্তব্যবোধ আছে।”

১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট ঘাতকের বুলেটে বাবা-মাসহ পরিবারের প্রায় সকল সদস্য্যকে হারানোর কথা স্মরণ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা হাসিনা বলেন, “জীবনের সবকিছু ত্যাগ করে একটা কাজই করে যাচ্ছি, বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্যটা পরিবর্তন করতেই হবে। সেই কথা চিন্তা করে আমরা প্রত্যেকটা পদক্ষেপ নিচ্ছি।"

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের আর কেউ পেছনে টানতে পারবে না। আমরা সামনে এগিয়ে যাব। এটাই হলো সবথেকে বড় কথা।” দেশের উন্নয়নে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, বিশ্বের ‘যে কোনো জাতির সঙ্গে’ প্রতিযোগিতা করে এগিয়ে যাওয়ার সক্ষমতা বাংলাদেশ এখন অর্জন করেছে। এ দেশের সব উন্নয়ন প্রকল্পের ৯০ শতাংশ এখন নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়ন হয়।

বাংলাদেশ নিয়ে অতীতে বিদেশিদের নেতিবাচক মনোভাবের ছিল তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এমন একটা অবস্থা ছিল এক সময়, বাংলাদেশ শুনলে আগেই বলত ওহ… বাংলাদেশ ওখানে তো ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, মানুষ খেতে পায় না, দুর্ভিক্ষ লেগে থাকে। বাংলাদেশটাকে একটা হেয়'র  চোখে দেখতো। যেটা আমাদের জন্য লজ্জাজনক ছিল। যেটা আমাদের জন্য কষ্টের ছিল।”

আর  এক সময়ের ‘দাতা দেশগুলোও’ এখন বাংলাদেশকে আর ‘ভিক্ষা দিতে’ না এসে বরং ‘উন্নয়ন সহযোগী’ মনে করে সহযোগিতা করতে আসে মন্তব্য করে সরকারপ্রধান বলেন, “কারো কাছে আমরা ভিক্ষা চাই না। আমরা নিজেরা পারি সেটা প্রমাণ করেছি।"

প্রবাসী বাংলাদেশিদের সামনে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “অর্থনৈতিকভাবে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। জাতির পিতা যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ে তুলেছিলেন। স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে রেখে গিয়েছিলেন। আমরা আজকে সেখানে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি।”

শেখ হাসিনা আারও বলেন, “জাতির পিতা চেয়েছিলেন, বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের জনগণ মাথা উঁচু করে চলবে। সেই মাথা উঁচু করে চলবার মতনই আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি। আপনাদেরকেও সেভাবে আপনাদের আচার-আচরণ ব্যবহার- সবকিছুতে সেটা বজায় রাখতে হবে। যেন দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়।”

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রবাসীদের অবদানের কথা স্মরণ করে তাদের জন্য সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথাও অনুষ্ঠানে বলেন প্রধানমন্ত্রী।

বিমানবন্দরে অনেকসময় প্রবাসীদের হয়রানির শিকার হওয়ার বিষয়টি নিয়ে তিনি বলেন, “আসলে আমাদের দেশের কিছু মানুষের চরিত্রই খারাপ। যেই শুনে বাইরে থেকে আসবে, ভাবে যে একটু চাপ দিলেই মনে হয় কয়েকটা ডলার পাওয়া যাবে।

আর দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, “আরেকটা কথা মনে রাখতে হবে, আমার কিন্তু বয়স হয়ে গেছে। আমার কিন্তু ৭৩ বছর বয়স, এটা মাথায় রাখতে হবে। কাজেই আগে যখন অল্প বয়স ছিল অনেক ঘুরেছি। এখন আর এত সম্ভব না। তারপরও কাজ অনেক বাকি রয়ে গেছে।

শোষিত বঞ্চিত মানুষের অধিকার আদায়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজীবন সংগ্রামের কথা তুলে ধরার পাশাপাশি তাকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করার কথাও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

অন্যদের মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, ইতালিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আবদুস সোবহান শিকদার, ইতালী আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ইদ্রিস ফরাজী, সাধারণ সম্পাদক হাসান ইকবালসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

প্রজন্মনিউজ২৪/রেজাউল

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ