সময় এখন সত্যের অনুসন্ধানী হওয়ার

প্রকাশিত: ২৮ জানুয়ারী, ২০২০ ১১:১৮:৪৫

সময় এখন সত্যের অনুসন্ধানী হওয়ার

সত্য হচ্ছে ধর্মশাস্ত্র ও দর্শনশাস্ত্রের একটি মৌলিক শক্তি। সত্য দিয়ে বিশাল এ জগৎ সৃষ্ট হয়েছে। সত্যের প্রতি এমন বিশ্বাস প্রকৃত ঘটনার সাথে যোগাযোগের সেতুবন্ধন গড়ে তোলে। পবিত্র ধর্মশাস্ত্রাদি একসুরে বলছে মহামহিম ঈশ্বরই একমাত্র সত্য। বিশাল বিস্তৃত এ সৃষ্টি সসীম ও অসত্য, শুধু তার গহীন ইচ্ছাসমুদ্রের কোনো বন্দরে হয়তো এই সত্য বিদ্যমান।

দার্শনিক এরিস্টটল বলেছেন, ‘যদি বলা হয় যে এটি না অথবা না-কে হ্যাঁ বলা হয় তবে তা মিথ্যা এবং যদি কোন কিছু সমন্ধে জানতে চাওয়া হয় যে এটি কি এবং যদি না-কে না বলা হয় তখন তা সত্য। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, যদি বলা হয় মানুষের রক্ত নীল তখন তা মিথ্যা বলে প্রমাণিত হবে; কিন্তু স্বতঃসিদ্ধ সত্য বিষয় হচ্ছে, মানুষের রক্ত লাল।

হযরত বায়েজিদ বোস্তামী কর্তৃক ডাকাত দলের কাছে স্বর্ণমুদ্রা থাকার সত্য কথা বলার উপকথা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত পেয়েছে।এখন প্রশ্ন হচ্ছে এই সত্যকে আপনি কি রুপে মেনে নিবেন? আর এই সত্য গ্রহণ করতে গিয়ে আপনি এই পার্থিব জীবনে কতটুকু লাভ কিংবা ক্ষতির রাজ্যে বিচরণ করবেন?অন্যভাবে যদি চিন্তা করেন তাহলে বলতে পারেন, আপনি যদি ধর্ম কিংবা ধর্মের বর্ণনায় বিশ্বাসী না হন তাহলে আপনার জন্য এই সত্য গ্রহণ করা কতটা যোক্তিক হতে পারে?

এ ক্ষেত্রে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়েল কথা মাথায় রাখতে পারেন। তিনি বলেছেন, ‘মিথ্যারও মহত্ত্ব আছে। হাজার হাজার মানুষকে পাগল করিয়া দিতে পারে মিথ্যার মোহ। চিরকালের জন্যে সত্য হইয়াও থাকিতে পারে মিথ্যা।আর হুমায়ন আহমেদ সাহেব তো বলেই দিয়েছেন, সত্য কথাগুলো সব সময় বক্তৃতার মতো শোনায়, মিথ্যাগুলো শোনায় কবিতার মত।এখন আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আপনি কবিতা নেবেন নাকি বক্তৃতা শুনবেন, নাকি মানিন সাহেবের ভাষায় আপনি সত্যের বাইরে গিয়ে হাজার হাজার মানুষের সারিতে(পাগল) নিজের নাম লেখাবেন।আমরা যে যাই চিন্তা করি না কেনো, অধিক শ্রেণীর মানুষ সত্যকে গ্রহণ করতে চায়। নিজের চারপাশ সত্যের আবহে সাজাতে চায়।

এ ক্ষেত্রে তাদের সামনে বেশ কিছু আত্মতৃপ্তি ও ধর্মচিন্তা কাজ করে। আর এই আত্মতৃপ্তিই একজন মানুষকে ভালো থাকতে সহায়তা করে। একজন মানুষ যদি সত্যের সাথে থাকে তবে তার জন্য ইসলাম ধর্মের বিধান মতে তাকে সত্য বলতে হবে। আর যিনি সত্য বলবেন তার জন্য রয়েছে পাঁচটি পুরস্কার। আলী ইবনে আবু তালেব (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছ থেকে মুখস্থ করেছি, ‘যে কাজের ব্যাপারে মনে সন্দেহ হয়, সে কাজ ছেড়ে দিয়ে সন্দেহমুক্ত কাজ করো।

কেননা সত্য প্রশান্তিকর এবং মিথ্যা দ্বিধাযুক্ত।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ২৫১৮)।ইসলামী পন্ডিতদের মতে হাদিসটি দ্বিনের অন্যতম মূলনীতি। তাদের মতে- এক-সত্য হৃদয়কে প্রশান্ত করে। দুই-মুমিনকে মুনাফিক থেকে পৃথক করে। তিন-কিয়ামতের দিন সত্যবাদী উপকৃত হবে। চার. সত্যবাদিতা পুণ্যের পথে পরিচালিত করে।পাঁচ. সত্যের চর্চা মানুষকে ‘সিদ্দিকে’র মর্যাদা দেয়।সর্বপরি একজন সত্যবাদীকে বাস্তবমুখী হতে হয়। ফলে সে তার জ্ঞানের স্বল্পতা সম্পর্কে সতর্ক থাকে এবং অন্তরকে পরিশুদ্ধ রাখার চেষ্টা করে।

আপনি যদি ধর্মী বাণীর সাথে একমত না হতে চান। কিন্ত সত্যকে গ্রহণ করার আগ্রহ আপনার থেকে থাকে তাহলে আপনি চিন্তা করতে পারেন। আর আপনার চিন্তার হাতিয়ার হিবেবে সামনে রাখতে পারেন এরিস্টটলের বক্তব্যটি, ‘অনুমান বা ধারনা থেকেই সত্যের উৎপত্তি।’ আপনি যখন সত্যের অনুসন্ধানী তখন আপনি অনুমান করুন। আপনি নিজে নিজে সত্য ধরে নিয়ে তার আলোকে পথ চলতে থাকুন। আর আপনি যদি আপনার ধারনায় সত্যকেই মিথ্যে মনে করেন তাহলেও দোষের কিছু নেই।

আপনি আপনার ধারণা পাল্টিয়ে ফেলুন, খোঁজ করুন নতুন কোনো সত্য। আর সে সত্যকে নিয়ে ভাবুন। এভাবে হয়তো একদিন আপনি চূড়ান্ত সত্য পেয়ে যাবেন।সুতরাং আমরা গেটো’র কথাকে মেনে নিয়ে সত্যের সাথে পথ চলি। তিনি বলেছেন, ‘যিনি প্রতিভাবান তিনি নিশ্চয় সত্যের পূজারী হবেন।’ তাই আমরা সত্যকে খুঁজি, সত্যের পূজারী হই।

প্রজন্মনিউজ২৪/নাজিম উদ্দীন

এ সম্পর্কিত খবর

বশেমুরবিপ্রবি প্রকল্প পরিচালক সাময়িক বরখাস্ত

সিলেটে পুলিশের অভিযানে ৫ হাজার পিস ইয়াবাসহ আটক ২

গার্ডিয়ান পাবলিকেশন্সের কর্ণধার নূর মোহাম্মদ আবু তাহের গ্রেপ্তার

পেট থেকে জীবন্ত মাছ বের করার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করলেন সেই ডাক্তার

নোয়াখালীতে ১২ সড়ক নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম

বাংলা কলেজের ছাত্র না হয়েও তারা কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি-সেক্রেটারি

ময়মনসিংহে বাস-অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত তিন

গণতন্ত্রের আন্দোলন ন্যায়সঙ্গত, এ আন্দোলনে আমরা বিজয়ী হবো : মির্জা ফখরুল

আজ শাকিব খানের জন্মদিন

খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য আবারও খারাপ, পর্যবেক্ষণে রেখেছেন চিকিৎসকেরা

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ