শুধুমাত্র মুসলিমরা নন সমগ্র ভারত আক্রান্ত হবে : কানহাইয়া কুমার

প্রকাশিত: ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০৫:১৩:৫২

শুধুমাত্র মুসলিমরা নন সমগ্র ভারত আক্রান্ত হবে : কানহাইয়া কুমার

তরুণ ছাত্রনেতা থেকে রাজনীতিক বনে যাওয়া ভারতের জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি কানহাইয়া কুমার দেশটির ক্ষমতাসীন সরকারের তীব্র সমালোচনা করে বলেছেন, নাগরিকত্ব আইন এবং জাতীয় নাগরিক পঞ্জিকার (এনআরসি) মাধ্যমে সরকার দেশে দ্বিপক্ষীয় আক্রমণ শুরু করেছে। ভারতের যেসব গরীব মানুষ নথিপত্র সংরক্ষণ করতে পারেননি; তারা আটক কেন্দ্রে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন।

দেশটির প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে দেয়া এক বিশেষ স্বাক্ষাৎকারে এসব মন্তব্য করেছেন কানহাইয়া কুমার।কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়ার (সিপিআই) এই নেতা বলেন, ‘সরকার বলেছে, এই দুই পদক্ষেপে দেশের মুসলিমরা ক্ষতিগ্রস্থ হবেন না।

অন্যদিকে, এনআরসি বাস্তবায়নের সময় নথিপত্র চাওয়া হয়েছিল; সেসময় সংরক্ষণ করতে না পারায় যেসব গরীব মানুষ নথিপত্র দিতে পারেননি, তাদের প্রত্যেকের পাশাপাশি মুসলিমরাও ক্ষতিগ্রস্থ হবেন।’কানহাইয়া কুমার বলেন, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন এবং এনআরসিকে দেশের জন্য পুরোপুরি হুমকি হিসেবে দেখা উচিত। জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সাবেক এই সভাপতি বর্তমানে দেশটিতে পুরোদস্তুর রাজনীতিক বনে গেছেন।

তিনি বলেন, এটা এমন একটি উদ্বেগজনক বিষয়; যা সমগ্র দেশের শিক্ষার্থীদের জাগ্রত করেছে।সতর্ক করে দিয়ে সাবেক ছাত্রনেতা বলেন, ‘সরকার যদি ডিভাইড অ্যান্ড রুল কৌশল ত্যাগ না করে, তাহলে দেশপ্রেমিক সব মানুষ এবং সংবিধান তাদের প্রতিরোধ করবে।’জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই ছাত্রনেতা এমন এক সময় এসব কথা বললেন যখন ভারতের নতুন নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে তীব্র ছাত্র বিক্ষোভ শুরু হয়েছে।

ভারতের নতুন এই আইনে বলা হয়েছে, ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে প্রতিবেশী বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান থেকে যেসব অমুসলিম শরণার্থী ভারতে গেছেন; তারা দেশটির নাগরিকত্ব পাবেন।সমালোচকরা বলেছেন, ক্ষমতাসীন হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকার ধর্মনিরপেক্ষ প্রজাতন্ত্র হিসাবে প্রতিষ্ঠিত ভারতে বিভাজন তৈরি করতে এই নতুন নাগরিকত্ব আইন তৈরি করেছে।

এই আইনে মুসলিম শরণার্থীদের ব্যাপারে একই ধরনের বিধান রাখা হয়নি; যা ভারতের ধর্মনিরপেক্ষতার ভিত্তিকে দুর্বল করে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন অনেকেই।নতুন আইন নিয়ে তীব্র সমালোচনা হলেও বিজেপির নেতা হেমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেছেন, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন অমুসলিম অভিবাসীদের জন্য সুরক্ষামূলক ছাতা। রাজনীতি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বাইরে করাই উত্তম; এমন যুক্তি প্রত্যাখ্যান করে সিপিআইর নেতা কানহাইয়া কুমার বলেন,

এমনকি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহও খ্যাতি পাওয়ার আগে ছাত্র নেতা ছিলেন।শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব হলো শিক্ষার্থীদের দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা। এবং একজন দায়িত্বশীল নাগরিক হওয়ার অর্থ হলো, যদি সংবিধানের ওপর আঘাত আসে, যদি দেশের ঐক্য এবং বৈচিত্র্যের ওপর আঘাত আসে অথবা যদি মানুষের মাঝে বিভাজন তৈরির উদ্দেশে অসাংবিধানিক আইন চালু করা হয় তাহলে সেসবের প্রতিবাদ করা।

কিন্তু সমস্যা হলো কেন্দ্র দেশের মানুষের (মন কি বাত) মনের কথা শুনছে না। এটা খু্বই দুঃখজনক যে প্রধানমন্ত্রী শুধুমাত্র তার মনের কথাই শুনছেন। কিন্তু শিক্ষার্থীদের মনের কথা শোনার জন্য যদি তিনি প্রস্তুত থাকতেন তাহলে দেশ আজ এ ধরনের পরিস্থিতির মুখোমুখি হতো না।

সরকার যখন মানুষের কথা শোনা বন্ধ করে দেয়, তখন প্রতিবাদ জানাতে তারা রাস্তায় নেমে আসতে বাধ্য

প্রজন্মনিউজ২৪/নাজিম উদ্দীন

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ