ভাইদের ঝগড়া থামাতে গিয়ে নিহত তরুণী


প্রতিবেশীদের ঝগড়া থামাতে গিয়ে গুলিতে নিহত হয়েছেন তরুণী বধূ। গুরুতর আহত হয়েছে তার দেড় বছরের শিশু সন্তান। রোববার রাতে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ধুবুলিয়া যক্ষ্মা হাসপাতাল চত্বরে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকেই হামলাকারীরা পলাতক রয়েছে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ জনতা হামলাকারীদের বাড়িতে ভাঙচুর চালায়। আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে, জুয়ার টাকা নিয়ে দুই ভাই স্বদেশ বিশ্বাস ও রাজুর মারামারি থেকেই ঘটনার সূত্রপাত হয়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের বরাত দিয়ে খবরে বলা হয়, স্বদেশ ও রাজু এলাকার কুখ্যাত জুয়ারি। হাসপাতালের একটি আবাসনের পাশেই প্রায় ১০ বছর ধরে জুয়ার বোর্ড চালাত তারা। একটি পরিত্যক্ত ঘরে প্রতিদিন সন্ধ্যার পর সেই জুয়ার আসর বসে। রোববার রাত ১১টার সময় জুয়ার বোর্ডের টাকার বখরা নিয়ে স্বদেশ ও রাজুর মধ্যে তুমুল গোলমাল শুরু হয়। মারামারির এক পর্যায়ে দুজনকে থামাতে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন।

তাদের মধ্যে গোবিন্দ সরকার ও তার স্ত্রী রুমা ছিলেন। রুমার কোলে ছিল দেড় বছরের শিশুপুত্র। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দুই ভাইয়ের ঝগড়া থামাতে গোবিন্দ-সহ কয়েক জন স্বদেশকে ধরে একটি ঘরে ঢুকিয়ে দেয়। সেই সময় দা নিয়ে তেড়ে আসে রাজু। তাকেও আটকানো হয়। এসময় স্বদেশ বন্দুক দিয়ে গোবিন্দর পেটে ঠেকিয়ে গুলি চালিয়ে দেয়ার হুমকি দিতে থাকে। সেই দৃশ্য দেখে গোবিন্দর মা ছুটে এসে স্বদেশের পা জড়়িয়ে ধরে কান্নাকাটি করতে থাকে।

তখন প্রতিবেশী এক নারী ওই ঘরের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে দেন। তখন স্বদেশ পেছনের দরজা দিয়ে বাইকে চড়ে বেরিয়ে আসে আর তার ঠিক সামনে পড়ে যান রুমা। এসময় ছেলে কোলে দাঁড়িয়ে থাকা রুমার মাথা লক্ষ্য করে গুলি চালিয়ে দেয় স্বদেশ। সন্তানকে নিয়েই ছিটকে পড়েন রুমা। ঘটনাস্থলেই রুমার মৃত্যু হয়। আর পড়ে গিয়ে কোলের শিশুর মাথা ফেটে যায়।

এ ঘটনায় স্বদেশ বিশ্বাস ও তার ভাই রাজু বিশ্বাস, রাজুর স্ত্রী নীলিমা ও ছেলে টুকাইসহ মোট সাতজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। পুলিশ টুকাই ও নীলিমা বিশ্বাসকে গ্রেফতার করেছে। কিন্তু মূল অভিযুক্ত স্বদেশ ও তার ভাই রাজু এখনও পলাতক। এ বিষয়ে কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার সুপার জাফর আজমল কিদোয়াই বলছেন, অভিযোগের তদন্ত হচ্ছে। ডিএসপিকে (ডিএন্ডটি) তদন্ত করতে দেয়া হয়েছে। রিপোর্ট হাতে পেলে সেই মতো পদক্ষেপ নেয়া হবে।

প্রজন্মনিউজ২৪/ মামুন