মুস্তাফিজ নেই আর আগের মত


 

দুটো উইকেট নিয়ে মুস্তাফিজুর রহমান একটু নিজেকে ফিরে পাওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন। কিন্তু দাসুন সানাকা একেবারে বিধ্বস্ত করে দিয়েছেন তাকে। টানা চার ছক্কা মেরেছেন রংপুর রেঞ্জার্সের এই বোলারকে। বলের উড়ে উড়ে মাঠের বাইরে চলে যাওয়ার এই দৃশ্য মাঠে বসেই দেখেছেন রংপুরের টেকনিক্যাল উপদেষ্টা, জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক হাবিবুল বাশার।

রংপুরের দায়িত্বে না থাকলেও মুস্তাফিজকে নজরে রাখতে হতো হাবিবুলকে। কারণ, তার জাতীয় দলেরও নির্বাচক এই হাবিবুল। এভাবে কাছ থেকে দেখার অভিজ্ঞতা থেকে সাবেক অধিনায়ক হাবিবুল বলছেন, মুস্তাফিজ এখন অনেকটা অনুমিত একজন বোলারে পরিণত হয়েছেন। তাকে যে স্বরূপে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না এবং সেটা দুশ্চিন্তার ব্যাপার, এটা হাবিবুল মেনে নিলেন।

মুস্তাফিজের প্রায় হারিয়ে যাওয়া সম্পর্কে বলতে গিয়ে হাবিবুল বলছিলেন, তার ইয়র্কারই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তাকে এখন ব্যাটসম্যানরা আগেই অনুমান করে ফেলতে পারছেন, ‘মুস্তাফিজ এক বছর ধরে মিসিং হয়ে যাচ্ছে। মুস্তাফিজের বোলিংয়ে এখন ইয়র্কার নেই। আগে একটা দারুণ ইয়র্কার ছিল বোলিংয়ে। স্লোয়ার বল এখনো আছে। পেসও আস্তে আস্তে বাড়ছে। এখন মোটামুটি ভালো পেসেই বল করছে। কিন্তু সে একটু বেশি প্রেডিক্টেবল হয়ে যাচ্ছে। এটাই আমার কনসার্ন। মনে হচ্ছে আমার কাছে। ব্যাটসম্যানরা ওকে পড়ে ফেলছে যে ও কী করতে যাচ্ছে।’

হাবিবুল বলছেন, এই সমস্যা থেকে বের হয়ে আসতে মুস্তাফিজের চিন্তা করার বিকল্প নেই। মাথা খাটানোর এটাই চূড়ান্ত সময় বলে বলছিলেন তিনি, ‘আমার মনে হচ্ছে ওকে চিন্তা করতে হবে। আমরা ব্যাটসম্যানরা, বোলাররা চিন্তা করি ম্যাচ শেষে যে কী হচ্ছে। ইটস হাই টাইম ফর হিম ভালো করছি বা এসব চিন্তা না করে ব্যাটসম্যান আমাকে পড়ে ফেলছে বা আমাকে দ্বিতীয় পরিকল্পনায় যেতে হবে। কোচ হয়তো তাকে বলবে।’

হাবিবুল বলছেন, উইকেট এখনো মুস্তাফিজ পাচ্ছেন। কিন্তু তার খরুচে হয়ে যাওয়াটা সমস্যা হচ্ছে, ‘সে কিন্তু উইকেট পাচ্ছে। এখনো কিন্তু পাঁচ উইকেট পাচ্ছে। শেষ এক বছরে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি ও। কিন্তু সে খরুচে বোলার হয়ে যাচ্ছে। শেষের দিকে অনেক খরুচে হয়ে যাচ্ছে। আমাদের ডেথ বোলার কিন্তু মুস্তাফিজ। সে যদি খরুচে বোলিং করে তাহলে কিন্তু পুরো দলের ওপরেই চাপ চলে আসে।’

হাবিবুল এখনো মনে করেন, মুস্তাফিজ বিশেষ একজন বোলার। কিন্তু সেটা তাকে মাঠে প্রমাণ করে যেতে হবে বলে বলছিলেন তিনি, ‘দিনশেষে পারফরম্যান্স কিন্তু পার্থক্য করে দেয়। সে স্পেশাল বোলার এটা আমি বিশ্বাস করি। কিন্তু তাকে এটা দিন দিন প্রমাণ করতে হবে। সে কিন্তু পাঁচ উইকেট পাচ্ছে। মানে উইকেটও পাচ্ছে। কিন্তু আগে ইকোনমিক্যাল থাকত। এখন খরুচে হয়ে যাচ্ছে।’

মুস্তাফিজের সমস্যাটা কোথায় হচ্ছে, সেটা একেবারে আঙুল দিয়ে দেখালেন হাবিবুল। নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই বলছিলেন, ‘মুস্তাফিজ নিয়ে চিন্তাভাবনা একসময় এমন ছিল—যে সামনে দাঁড়াবো, সে অনেক জোরে ইয়র্কার মেরে দিবে। ওটা এখন আর নেই।

প্রজন্মনিউজ২৪/জাহিদ