বরিশালে একই পরিবারের তিনজনকে হত্যার রহস্য উদঘাটন


বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলায় একই পরিবারের তিনজনকে হত্যার ঘটনায় মো. জুয়েল হাওলাদার (৩৪) নামের আরও একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পাশাপাশি হত্যাকাণ্ডের পর ওই বাড়ি থেকে চুরি যাওয়া স্বর্ণালংকার, তিনটি মোবাইল ফোন ও একটি চাকু উদ্ধার করা হয়েছে। এর আগে জাকির হোসেন (৩৫) নামে এক কবিরাজকে গ্রেফতার করা হয়। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী জুয়েল হাওলাদারকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানিয়েছেন র‌্যাব কর্মকর্তারা।

গতকাল শনিবার (৭ ডিসেম্বর) বিকেলে কুয়েত প্রবাসী হাফেজ আব্দুর রবের বাড়ি থেকে ওই কবিরাজকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর রাতে বরিশাল সদর উপজেলার মতাশুর মুহুরী কান্দা এলাকা থেকে মো. জুয়েল হাওলাদারকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার কবিরাজ জাকির হোসেন ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার সিদ্ধকাঠী ইউনিয়নের উত্তর রাজপাশা গ্রামের চুন্নু হাওলাদারের ছেলে। আর জুয়েল হাওলাদার নগরীর সাগরদীর মুন্সিবাড়ী এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় থাকেন ।

রোববার (৮ ডিসেম্বর) সকালে বরিশাল র‌্যাব-৮-এর সদর দফতর থেকে এসব তথ্য জানানো হয়। র‌্যাব জানায়, বানারীপাড়ায় কুয়েত প্রবাসী আব্দুর রবের বাড়িতে তিনজনকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এই রোমহর্ষক ঘটনার রহস্য উন্মোচনে পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাবও ছায়া তদন্ত শুরু করে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ ও র‌্যাব যৌথ অভিযান চালিয়ে হত্যাকান্ডে জড়িত সন্দেহে জাকির হোসেন নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে।

প্রথমে জাকির হোসেন ওই বাড়িতে নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করত। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জাকির হোসেন র‌্যাবকে জানান- জিন হাজির ও ঝাড়ফুঁকের মাধ্যমে বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা করেন বলে প্রচার করে তিনি বাড়ির সবার বিশ্বস্ততা অর্জন করেন। এ সুযোগ নিয়ে বাড়িতে জিন আসবে বলে রাতে দরজা খোলা রাখার কথা বলে ওই বাড়িতে কৌশলে প্রবেশ করেন এবং একজন সহযোগীকে নিয়ে পর্যায়ক্রমে কুয়েত প্রবাসী আব্দুর রবের মা, ভগ্নিপতি ও খালাতো ভাইকে হত্যা করেন।

র‌্যাব আরও জানায়, পরবর্তীতে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ও জাকিরের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী জুয়েল হাওলাদারকে গ্রেফতার কররা হয়। গ্রেফতার দুইজনই প্রাথমিকভাবে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। এরপর জাকির হোসেন ও জুয়েল হাওলাদারের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী যৌথ অভিযান চালিয়ে জাকির হোসেনের বাসা থেকে হত্যাকাণ্ডের পর ওই বাড়ি থেকে চুরি করে আনা স্বর্ণালংকার, তিনটি মোবাইল ফোন ও একটি চাকু উদ্ধার করে।

গ্রেফতার আসামি ও আলামত বানারীপাড়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। র‌্যাবের ধারণা- লোভের বশবর্তী হয়ে তারা এ ধরণের ঘৃন্য কাজ করেছেন। বরিশালের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আব্দুর রকিব জানান, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পাশাপাশি হত্যাকাণ্ডের পর ওই বাড়ি থেকে চুরি যাওয়া স্বর্ণালংকার, তিনটি মোবাইল ফোন ও একটি চাকু উদ্ধার করা হয়েছে।

গতকাল সকালে বানারীপাড়ার সলিয়াবাকপুর এলাকার কুয়েত প্রবাসী হাফেজ আব্দুর রবের বাড়ি থেকে তার মা মরিয়ম বেগম (৭০), মেজ বোন মমতাজ বেগমের স্বামী অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক শফিকুল আলম (৬০) ও খালাতো ভাই মো. ইউসুফের (২২) মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

প্রজন্মনিউজ২৪/ মামুন