প্রেমপত্র লেখায় হাত-পা বেঁধে শাস্তি দুই খুদে শিক্ষার্থীর


বেঞ্চের পাশে মাটিতে বসে আছে দুটি বাচ্চা ছেলে। বেঞ্চের পায়ার হাত-পা দড়ি দিয়ে বাঁধা। স্কুলে ‘দুষ্টুমি’ করার জন্য এভাবে শাস্তি দেয়া হয়েছে তাদের। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেই ঘটনার ছবি ছড়িয়ে পড়তেই সমালোচনার ঝড় উঠেছে। স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে শাস্তির দাবি তুলেছেন নাগরিক সমাজের একাংশ। গতকাল বৃহস্পতিবার এই ঘটনা ঘটেছে ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের অনন্তপুর জেলার কাদিরি নামক শহরে।

নির্যাতনের শিকার ওই দুই খুদে সেখানকার মোসানপেট আপার প্রাথমিক বিদ্যালয় পড়তো। দুজনের একজন তৃতীয় অপরজন পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ক্লাসে বসে তারা প্রেমপত্র লিখেছে। তবে স্কুলটির প্রধান শিক্ষিকা দুই ছাত্রকে বেঁধে রাখার দুটি ভিন্ন কারণ দেখিয়েছেন। তার অভিযোগ, একজন ক্লাসে বসেই প্রেমপত্র লিখছিল। অপরজন তার সহপাঠীর জিনিস কেড়ে নিয়েছে।

প্রধান শিক্ষিকার দাবি, ‘আমি ওদেরকে বেঁধে রাখিনি। তাদের মায়েরা তাদেরকে বেঁধে রাখে।’ কিন্তু স্কুলের ভেতরে কেমন করে দুজন শিক্ষার্থীকে বেঁধে রাখতে দেয়া হলো এমন প্রশ্ন করা হলে প্রধান শিক্ষিকা তার কোনো যৌক্তিক ব্যাখ্যা দিতে পারেননি। ঘটনাটি সবার জানাজানি হওয়ার পর থেকেই ওই স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন সমাজকর্মীরা।

অচ্যুতা রাও নামে এক সমাজকর্মী বলেন, ‘বিষয়টি যদি একটু অন্যভাবে দেখি তাহলে যেখানে সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ঠিকমতো তাদের ছুটির আবেদনপত্রই লিখতে পারে না সেখানে একজন যদি প্রেমপত্র লিখেও থাকে তাহলে সেটা আমার কাছে দারুণ খুশির খবর।’ ঘটনা সামনে আসায় আর ব্যাপক সমালোচনা তৈরি হওয়ার পর অন্ধ্রপ্রদেশ শিশু অধিকার রক্ষা কমিশন বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

কমিশনের চেয়ারম্যান জি হৈমবতী বলেছেন, ‘আমার সঙ্গে জেলা প্রশাসক ও পৌর কমিশনারের কথা হয়েছে। বিষয়টির তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে তাদের।’

প্রজন্মনিউজ২৪ / মামুন