ভাবা কি যায়, পেঁয়াজ কয়েকদিনের ব্যবধানে ২৫০ টাকা হয়েছে

প্রকাশিত: ২৫ নভেম্বর, ২০১৯ ০৭:০৪:১৪

ভাবা কি যায়, পেঁয়াজ কয়েকদিনের ব্যবধানে ২৫০ টাকা হয়েছে

পেঁয়াজ উড়োজাহাজে উড়ে এসেও ভোক্তা হৃদয় জুড়াতে পারেনি। পেঁয়াজ নিয়ে যে নৈরাজ্য শুরু হয়েছে তা চলছেই। সরকার দেশে পেঁয়াজের দাম কমিয়ে আনতে বিদেশ থেকে কার্গো বিমানে করে পেঁয়াজ আমদানি করছে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে- “বিমানে পেঁয়াজ এসেছে চিন্তার কারণ নেই”। উড়াল পেঁয়াজ দেশে এলেও ভোক্তাদের দুশ্চিন্তা রয়েই গেছে। পেঁয়াজের মূল্য কিছুটা কমে আবার চড়েছে। অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে পেঁয়াজের কেজি এখনও ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। পেঁয়াজ নৈরাজ্য চলছেই; চলবে হয়তো আরও অনেটা সময়। এটা দেখার কেউ নেই।

 সাধারণ ভোক্তাদের নাভিশ্বাস বাড়িয়ে অসাধু ব্যবসায়ীরা মুনাফা লুটছে। পেঁয়াজের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধিতে নিম্ন আয়ের মানুষের এখন আর পেঁয়াজ খেতে পারছে না। প্রশ্ন হলো, পেঁয়াজ নিয়ে ব্যবসায়ীদের নৈরাজ্য আর কতদিন চলবে?

আসলে এই বাংলায় আমরা সবাই রাজা! কারোরই যেন অর্থকড়ির অভাব নেই! তাই ১ টাকার জিনিস ২ টাকায় কিনতেও কোন নেই সমস্যা। ভাবখানাতো এমনই। বাজারে পণ্যমূল্য বেড়েছে অবিশ্বাস্য দরে। দাম বাড়ে হু হু করে। পেঁয়াজের বাজারেতো রীতিমত আগুন লেগেছে। ২৫ টাকার পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে ২৫০ টাকারও বেশি মূল্যে। এতো বেড়েছে পেঁয়াজের দাম তবু কেনা কমেনি। জনগণ বাড়তি দামে পণ্য কিনছে। পেঁয়াজসহ নিত্যপণ্যের এতো দাম! তবুও দেশের কোথাও কোন প্রতিবাদ নেই। আমজনতার মুখে কুলুপ আঁটা। বলতে গেলে জনগণের গাঁটে পয়সা আছে; তাই গায়ে লাগছে না এই আর কি!

 দেশে বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ মজুত রয়েছে। ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করেই ইচ্ছা অনুযায়ী পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হচ্ছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এটা অতি মুনাফা ছাড়াও সরকারের বিরুদ্ধে এক ধরনের ষড়যন্ত্রও হতে পারে। সরকারকে বিব্রত করা এবং বিপদে ফেলাই মূল উদ্দেশ্য হতে পারে। বিষয়টি সরকারকে ভালোভাবে ক্ষতিয়ে দেখতে হবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে বলছে, প্রতিবছর দেশে ১৫ লাখ টন পেঁয়াজের চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে স্থানীয়ভাবেই উৎপাদন হয় প্রায় ১২ লাখ টন। আর চাহিদার মাত্র ৩ লাখ টন পেঁয়াজ বছরের বিভিন্ন সময়ে আমদানি করা হয় ভারত থেকে। মানুষের পকেট মেরে রাতারাতি বাড়ি-গাড়ি আর ব্যাংক ব্যালেন্স করার জন্যই এসব করা হচ্ছে। পণ্যের দাম বাড়তে পারে। এটা চলমান প্রক্রিয়া। ফি বছরধরেই হয়। তবে সকালে ৬০ দুপুরে ৮০ আর রাতে ১০০ টাকা এভাবে কি পৃথিবীর আর কোনো দেশে দাম বাড়ে?

ভাবা কি যায়, পেঁয়াজ কয়েকদিনের ব্যবধানে ২৫০ টাকা হয়েছে। কোন কোন পণ্য ৩০/৪০ টাকা থেকে লাফিয়ে বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। কাঁচামরিচ ও বেগুন ও অন্যান্য সবজি সবটার দামই বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ তিনগুণ হয়েছে। শুধু তরিতরকারি নয় ছোলা, ডাল, মাছ মাংস সব কিছুর দামই এখন বেশ চড়া। এখন দেশে অতি খরা হয়নি, নেই হরতাল অবরোধও। তাহলে কেন এভাবে বাড়লো পণ্যমূল্য? চাহিদা অনুযায়ী পণ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে নানামুখী উদ্যোগ নেয়া সত্ত্বেও তার সুফল অনেক সময় ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায় পরিবহন চাঁদাবাজি ও মজুদদারির কারণে। এবারো বেড়েছে। আগে বাজার অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে ছিল। এখন নেই। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম এভাবে বেড়ে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ ক্রেতারা।

দ্রব্যমূল্য এবং চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণে সরকার কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকেও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে কঠোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এর আগে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেছে; পণ্যবাহী ট্রাকে চাঁদাবাজি ঠেকাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে। সারাদেশে দ্রব্যমূল্য সহনীয় রাখা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিভাগীয় এবং জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে কাজ করছেন সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। কিন্তু তাতেও কি দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আছে? বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আর জেলাপ্রশাসনের তাবৎ হুমকি ধমকিকে কি পাত্তা দিচ্ছে ব্যবসায়ীরা? উল্টে পেঁয়াজের দামে আগুন লাগিয়ে ছেড়েছে। বাজার সিন্ডিকেটের কারসাজি এবং ভারতের বাজার থেকে সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দেশে পেঁয়াজের দাম এক মাসের ব্যবধানে বেড়েছে ৭৭ দশমিক ১০০ শতাংশ।

দেশে বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ মজুত রয়েছে। ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করেই ইচ্ছা অনুযায়ী পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হচ্ছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এটা অতি মুনাফা ছাড়াও সরকারের বিরুদ্ধে এক ধরনের ষড়যন্ত্রও হতে পারে। সরকারকে বিব্রত করা এবং বিপদে ফেলাই মূল উদ্দেশ্য হতে পারে। বিষয়টি সরকারকে ভালোভাবে ক্ষতিয়ে দেখতে হবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে বলছে, প্রতিবছর দেশে ১৫ লাখ টন পেঁয়াজের চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে স্থানীয়ভাবেই উৎপাদন হয় প্রায় ১২ লাখ টন। আর চাহিদার মাত্র ৩ লাখ টন পেঁয়াজ বছরের বিভিন্ন সময়ে আমদানি করা হয় ভারত থেকে। মানুষের পকেট মেরে রাতারাতি বাড়ি-গাড়ি আর ব্যাংক ব্যালেন্স করার জন্যই এসব করা হচ্ছে। পণ্যের দাম বাড়তে পারে। এটা চলমান প্রক্রিয়া। ফি বছরধরেই হয়। তবে সকালে ৬০ দুপুরে ৮০ আর রাতে ১০০ টাকা এভাবে কি পৃথিবীর আর কোনো দেশে দাম বাড়ে?

এ দেশে হুট্ হাট্ পণ্যমূল্য বাড়ে; বাড়ে জনগণের নাভিশ্বাস। এটা নতুন নয় যে কোন অজুহাত মানেই পণ্যমূল্যের দাম বেড়ে যাওয়া। ভারত থেকে পিয়াজের আমদানী বন্ধ হয়েছেতো খবর পেয়ে পিঁয়াজের দাম ব্যবসায়ীরা এক লাছে উঠিয়েছে ১শ’ত টাকার উপরে। তা বর্তমানে ঠেকেছে ২৫০ টাকায়। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন পাগলা ঘোড়া ছুটছে তো ছুটছেই। বর্তমানে অস্থির হয়ে উঠেছে বাজার। কোনোই সুখবর নেই।

এভাবে আর চলতে পারে না। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে এখনই ওদের রুখতে হবে। সরকার, জনগণ দলমত নির্বিশেষে ওদের ওপর দুর্বার গতিতে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। প্রতিবাদী হতে হবে। বাজার নিয়ন্ত্রণে এর আর বিকল্প আছে বলে আমি মনে করি না। দ্রব্যসামগ্রী অর্থাৎ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসমূহের মূল্য স্থিতিশীল রাখার ব্যাপারে বর্তমান পরিস্থিতিতে যা করা দরকার তাহলো- সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে তাদের নেয়া পদক্ষেপগুলো কার্যকর করতে হবে। যেকোনো মূল্যে মধ্যস্থানীয় শ্রেণির কারসাজি বন্ধ করতে হবে। সরকারকে ব্যবসায়ীদের ওপর বাজার নিয়ন্ত্রণের নির্ভরশীলতা কমাতে হবে। আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীর মূল্য সামঞ্জস্য আছে কিনা নিয়মিত তা তদারকি করতে হবে।

দোকানদারদের কাছ থেকে চাঁদাবাজদের চাঁদাবাজি বন্ধের ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। পরিবহন খাতের চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে। বাজারে যেসব পণ্যের চাহিদা বেশি, তা বেশি করে যোগান দিতে হবে। পাইকারি বাজার থেকে মধ্যশ্রেণির গোষ্ঠী যাতে স্বার্থ হাসিল না করতে পারে, সেজন্য পাইকারি বাজার থেকে খুচরা বাজার পর্যন্ত সরকারি নিজস্ব পরিবহন ও জনবলের মাধ্যমে খুচরা বাজারে পণ্যসামগ্রী পৌঁছে দেয়া যেতে পারে। তাতে করে চাঁদাবাজদের চাঁদাবাজিও বন্ধ হবে। বেশি করে পণ্য আমদানি করে সুষ্ঠুভাবে বণ্টন করা। আরো বেশি করে সরকারি বিক্রয় কেন্দ্র স্থাপন করে সুষ্ঠু ও স্বচ্ছভাবে বণ্টনের ব্যবস্থা করা। সর্বোপরি ব্যবসায়ীদের শপথ নেয়া উচিত- ’আমরা পণ্যসামগ্রী মজুদের মাধ্যমে বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বাড়াবো না এবং পণ্যসামগ্রীতে অতিরিক্ত মুনাফা অর্জন করবো না।’

সর্বোশেষ, আগাম সতর্ক বার্তার মতো উচ্চারণ করা যায়, বাজার একবার চড়লে সেই চড়া বাজার আর নামতে চায় না। এটা হচ্ছে অতীতের অভিজ্ঞতা। সে জন্য পণ্যমূল্য স্থিতিশীল রাখতে যা যা করা দরকার তা সরকারকে করতে হবে। এজন্য বাজার মনিটরিংয়ে সরকারকে আরও চৌকস হতে হবে। আর তাতে হয়তো জনগণের কিছুটা মুক্তি মিলতে পারে।

প্রজন্মনিউজ২৪/জাহিদ

 

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



A PHP Error was encountered

Severity: Notice

Message: Undefined index: category

Filename: blog/details.php

Line Number: 417

Backtrace:

File: /home/projonmonews24/public_html/application/views/blog/details.php
Line: 417
Function: _error_handler

File: /home/projonmonews24/public_html/application/views/template.php
Line: 199
Function: view

File: /home/projonmonews24/public_html/application/controllers/Article.php
Line: 87
Function: view

File: /home/projonmonews24/public_html/index.php
Line: 315
Function: require_once

বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ