তাজরিন ট্র্যাজেডির ৭ বছর আজ

প্রকাশিত: ২৪ নভেম্বর, ২০১৯ ১২:৪২:৫০

তাজরিন ট্র্যাজেডির ৭ বছর আজ

আশুলিয়ার তাজরীন গার্মেন্টসে মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ডের আজ ৭ বছর পূর্তি। ২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর ভয়াবহ এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ১১১ জন পোশাক শ্রমিকের মৃত্যু হয়। অন্তত দুই শতাধিক শ্রমিক আহত ও দগ্ধ হন। পরে আহতদের মধ্যে আরও ৮ জন মারা গেলে এ সংখ্যা দাঁড়ায় ১১৯।

ওই দিন পোশাক কারখানাটির নিচতলার তুলার গুদামে আগুন লাগলে কারখানাটির সহস্রাধিক শ্রমিক জীবন বাঁচাতে ভবন থেকে নামার চেষ্টা করেন। কিন্তু বাহির থেকে তালা দেয়া থাকায় শ্রমিকরা আর বাইরে বের হতে পারেননি। এ সময় অনেকেই কারখানার ভেতরে আটকা পড়ে জীবন্ত পুড়ে মারা যান। আগুন বেড়ে গেলে অনেকেই বাঁচার জন্য ভবনটির ছাদ থেকে লাফিয়ে কিংবা ভবনের পাইপ বেয়ে নিচে আসার চেষ্টা করেন। এ কারণেও অনেক শ্রমিককে জীবন হারাতে হয়।

ঘটনার পরদিন আশুলিয়া থানার এসআই খায়রুল ইসলাম বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর ২০১৩ সালের ২২ ডিসেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) পরিদর্শক একেএম মহসিনুজ্জামান খান আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।  ২০১৫ সালের ৩ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করেন আদালত।

তাজরীন অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ৭ বছরে পা দিলেও এ ঘটনায় দায়ের করা মামলার সব সাক্ষীকে ও আদালতে হাজির করতে পারেনি রাষ্ট্রপক্ষ।  এই মামলায় ২০১৫ সালে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করার পর থেকে গত চার বছরে ১০৪ জন সাক্ষীর মধ্যে মাত্র ৬ জনের জবানবন্দি-জেরা শেষ হয়েছে। বাকি সাক্ষীরা আদালতে হাজির না হওয়ায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশকে দুষছেন শ্রমিক নেতারা।

বিচারের দীর্ঘসূত্রতার শনিবার (২৩ নভেম্বর) রাতে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র (টিইউসি)।

বিবৃতিতে অবিলম্বে তাজরীন ট্রাজেডিসহ সব শ্রমিক হত্যাকাণ্ডের বিচার, উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ, সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসনের দাবি জানানো হয়। একইসঙ্গে নিরাপদ কারখানা ও কর্মস্থল নিশ্চিত করার দাবিও জানানো হয়। টিইউসি সভাপতি, শ্রমিকনেতা অ্যাডভোকেট মন্টু ঘোষ ও সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার এ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।   

নেতারা বলেন, ১৯৯০ সালে সারাকা গার্মেন্টসে অগ্নিকাণ্ড থেকে শুরু করে চলতি বছরে গাজীপুরের অটো স্পিনিং মিলে অগ্নিকাণ্ডে শ্রমিক নিহত পর্যন্ত কোনো হত্যাকাণ্ডের বিচার আজও আলোর মুখ দেখেনি। বিচারহীনতার এ সুযোগে একের পর এক হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হচ্ছে। মুনাফার লালসায় গার্মেন্টস শ্রমিকরা কখনও আগুনে পুড়ে, কখনো বা ভবনচাপা পড়ে নির্মমভাবে নিহত হয়।

তারা আরও বলেন, তাজরীন ট্রাজেডির ৩ বছর পর এ বিষয়ক চার্জশিট গঠন করা হয়। ২০১৫ সালের ১ অক্টোবর মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করেন আদালত। গত ৪ বছরে ৩৫টি শুনানির তারিখ ধার্য হলেও রাষ্ট্রপক্ষ মাত্র ৬ দিন সাক্ষী হাজির করতে সক্ষম হয়। ফলে ১০৪ সাক্ষীর স্বাক্ষ্যগ্রহণ কবে নাগাদ শেষ হবে

তা আজ প্রশ্নবিদ্ধ।  যে কোনো মূল্যে সব শ্রমিক হত্যাকাণ্ডের বিচার আদায় করে নেয়া হবে বলে এ সময় শ্রমিকনেতারা প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।

প্রজন্মনিউজ২৪/রেজাউল

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ